মঙ্গলে মঙ্গলময় বার্তা। ১২ দিন রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ইতি ঘটেছে ইরান-ইজরায়েল যুদ্ধবিরতিতে। দু’দেশই আপাতত যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয়েছে। ইতিমধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় ইরানের সঙ্গে যুদ্ধবিরতিতে সম্মতি জানিয়েছে ইজরায়েল। আনুষ্ঠানিকভাবে একথা ঘোষণা করেছেন ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। সেই সঙ্গে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকেও ধন্যবাদ জানিয়েছেন তিনি। এই আবহে যুদ্ধবিরতি চুক্তিকে স্বাগত জানিয়েছে ভারত। (আরও পড়ুন: ইরান নিয়ে অবস্থান 'বদল', মার্কিন হামলার 'সমালোচনায়' ভারত)
আরও পড়ুন: পাক প্রতিরক্ষামন্ত্রীর সামনেই ইসলামাবাদের মুখোশ টেনে খুললেন রাজনাথ, বললেন...
ভারত জানিয়েছে, মধ্যপ্রাচ্যের ক্রমবর্ধমান উত্তেজনায় তারা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন, তবে যুদ্ধবিরতির ঘোষণাকে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে। এক বিবৃতিতে বিদেশ মন্ত্রক জানিয়েছে, 'আমরা যুদ্ধবিরতির খবরকে স্বাগত জানাচ্ছি এবং এই প্রক্রিয়ায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও কাতারের ভূমিকা বিশেষভাবে প্রশংসনীয়।' আরও বলা হয়েছে, 'ইরান ও ইজরায়েলের সংঘর্ষে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তরফে ইরানের পারমাণবিক কেন্দ্রে বিমান হামলা এবং তার জবাবে তেহরানের কাতার ও ইরাকে মার্কিন ঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার মতো উত্তেজনাকর পরিস্থিতির দিকে ভারত নিবিড় নজর রাখছিল।ভারতের বক্তব্য, 'আমরা বিশ্বাস করি, এই অঞ্চলের দীর্ঘমেয়াদি নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতার স্বার্থে সকল পক্ষকে সংযম বজায় রাখতে হবে এবং উত্তেজনা প্রশমনে সংলাপ ও কূটনীতির পথেই অগ্রসর হওয়া উচিত।' নয়া দিল্লির এই অবস্থান মূলত মধ্যপ্রাচ্যে বসবাসকারী ভারতীয় নাগরিক এবং জ্বালানি সরবরাহের নিরাপত্তা বিবেচনা করেই নেওয়া হয়েছে বলে মত কূটনৈতিক মহলের। (আরও পড়ুন: ডিগবাজির পর ডিগবাজি! ইরানে পরমাণু কেন্দ্রে হামলা নিয়ে কথার ঠিক নেই ট্রাম্পের)
মঙ্গলবার সকালে (ভারতীয় সময় অনুসারে) ট্রাম্প নিজের ট্রুথ সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে একটি পোস্টে লেখেন, ‘যুদ্ধবিরতি এখন থেকে কার্যকর হল। দয়া করে এটি লঙ্ঘন করবেন না।’ এরপরই ইজরায়েল যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয়ে একটি বিবৃতিতে জানায়, ইরানের পারমাণবিক ও ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র সংক্রান্ত ঝুঁকির অবসান ঘটানোর লক্ষ্য অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে ইজরায়েল। তাতে বলা হয়েছে, ‘অভিযানের লক্ষ্য অর্জনে সক্ষম হওয়ায় এবং প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের প্রতি পূর্ণ সমর্থন জানিয়ে পারস্পরিক যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে সম্মত হয়েছে ইজরায়েল।’ সেই সঙ্গে প্রতিরক্ষায় সমর্থন এবং ইরানের পারমাণবিক ঝুঁকি নির্মূলে সাহায্যের জন্য ট্রাম্প ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে ধন্যবাদও জানিয়েছে ইজরায়েল। তবে ইরান যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করলে যে কড়া জবাব দেওয়া হবে, সে ব্যাপারেও সতর্ক করেছেন নেতানিয়াহু।
উল্লেখ্য, সংঘর্ষে মধ্যেই রবিবার দুপুরে ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ানের সঙ্গে ফোনে কথা বললেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।পরে প্রধানমন্ত্রী মোদী এক্স পোস্টে লেখেন, ‘বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে আমাদের মধ্যে সবিস্তার কথা হয়েছে। সাম্প্রতিক উত্তেজনা বৃদ্ধি নিয়ে গভীর উদ্বেগের কথা জানিয়েছি। আরও একবার আলোচনা এবং কূটনীতির মাধ্যমে উত্তেজনা প্রশমনের বার্তা দেওয়া হয়েছে। আমরা চাই আঞ্চলিক শান্তি, নিরাপত্তা এবং সুস্থিতি দ্রুত ফিরে আসুক।’ ইরান ও ইজরায়েলের যুদ্ধে শুরু থেকেই নিরপেক্ষ ভূমিকা নিয়েছে ভারত। একে অপরের বিরুদ্ধে যুদ্ধে মেতে ওঠা দুই দেশই ভারতের ঘনিষ্ঠ বন্ধু। ফলে শুরু থেকেই এই যুদ্ধ থামাতে দুই দেশের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছে নয়া দিল্লি।