ভারত ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বাণিজ্যিক উত্তেজনা আঘাত হেনেছে ডাক পরিষেবায়।রাশিয়ার থেকে তেল কেনার জন্য শাস্তিস্বরূপ ভারতের উপর দুই দফায় ৫০ শতাংশ শুল্ক চাপিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। গত ২৭ আগস্ট থেকে ওই হারে শুল্ক কার্যকর হয়েছে। সেই মতোই সম্প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ডাক পরিষেবা বন্ধ রাখার ঘোষণা করেছিল ভারতীয় ডাক বিভাগ।এবার আমদানি শুল্ক নিয়ে বিভ্রান্তির জেরে ডাক পরিষেবা স্থগিতাদেশের মেয়াদ আরও বাড়িয়ে ভারত।
ভারতীয় ডাকঘরের তরফে জানানো হয়েছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রগামী ডাক পরিবহনে বাহকদের অক্ষমতা এবং অনির্ধারিত নিয়ন্ত্রক ব্যবস্থার কারণে, এখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে চিঠি বা পার্সেল এবং মার্কিন ডলার মূল্যের উপহার সামগ্রীর বুকিং সম্পূর্ণরূপে স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ডাক বিভাগ পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে এবং যত দুটির সম্ভব পরিষেবা পুনরুদ্ধার করার জন্য প্রচেষ্টা করছে। যদি কোনও পণ্য ইতিমধ্যে বুক করা হয়ে থাকে এবং পাঠানো সম্ভব না হয়, তাহলে ডাক ফেরতের দাবি করা যাবে। আমাদের গ্রাহকদের অসুবিধার জন্য আমরা গভীরভাবে দুঃখিত।' আগে ডাক বিভাগের তরফে বলা হয়, শুধুমাত্র ১০০ মার্কিন ডলার পর্যন্ত মূল্যের উপহার সামগ্রী শুল্কমুক্ত থাকবে। কিন্তু এবার তার উপরও স্থগিতাদেশের জারি করা হয়েছে।
আরও পড়ুন-৮৬ দিন পর মৌনতা ভাঙল RCB! চিন্নাস্বামীতে পদপিষ্ট-কাণ্ডে নিহতদের জন্য বড় ঘোষণা
গত ৩০ জুলাই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তরফে যে নির্দেশিকা জারি করা হয়, সেই অনুযায়ী, ৮০০ ডলার পর্যন্ত মূল্যের পণ্যকে শুল্কমুক্ত রাখার সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করা হয়। বলা হয়, ২৯ আগস্ট থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে যত ভারতীয় পণ্য ঢুকবে, সবের উপর ইন্টারন্যাশনাল এমার্জেন্সি ইকনমিক পাওয়ার অ্যাক্টের আওতায় শুল্ক চাপবে। শুধুমাত্র ১০০ ডলার মূল্য পর্যন্ত জিনিসপত্রই শুল্কমুক্ত থাকবে। নয়া নির্দেশিকায় বলা হয়, মার্কিন শুল্ক বিভাগ এবং সীমান্তরক্ষা বিভাগের অনুমোদনপ্রাপ্ত কোনও ‘যোগ্য পক্ষ’ই শুল্ক আদায় বা তা হ্রাস করতে পারবে। কিন্তু এই ‘যোগ্য পক্ষ’ কারা, তা এখনও স্পষ্ট নয়। কী প্রক্রিয়ায় শুল্ক গ্রহণ করা হবে, তা নিয়েও ধোঁয়াশা রয়েছে। ফলে ধন্দ ছড়িয়েছে।
আরও পড়ুন-৮৬ দিন পর মৌনতা ভাঙল RCB! চিন্নাস্বামীতে পদপিষ্ট-কাণ্ডে নিহতদের জন্য বড় ঘোষণা
হিন্দুস্তান টাইমসকে ডেপুটি ডিরেক্টর জেনারেল (আইআর অ্যান্ড জিবি) এলকে দাস বলেন, 'আমাদের কাছে স্থগিত করা ছাড়া আর কোনও বিকল্প নেই। আমরা গ্রাহকদের অসুবিধায় ফেলতে পারি না।' ১০০ মার্কিন ডলার পর্যন্ত মূল্যের উপহার স্থগিতের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, 'যদি বিমান সংস্থাগুলি পার্সেল বহন করতে অস্বীকৃতি জানায়, তাহলে আমাদের কাছে আর কোনও বিকল্প নেই।' বিভ্রান্তির কারণে, বিমান সংস্থাগুলি জানিয়েছে যে তারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পার্সেল বহন করতে পারবে না। সূত্রের খবর, শুধু ভারত নয়, অস্ট্রিয়া, ফ্রান্স, বেলজিয়ামের মতো দেশগুলিও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ডাক পরিষেবা স্থগিত করেছে। উল্লেখ্য, মস্কোর সঙ্গে নয়া দিল্লির বাণিজ্যিক সম্পর্কের কারণে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এবং ভারতের মধ্যে কূটনৈতিক টানাপড়েন সৃষ্টি হয়েছে। ভারতের উপর অতিরিক্ত শুল্ক চাপিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।