দুর্ঘটনার পর গাড়ির নিচে আটকে ছিল এক বাইক আরোহীর মৃতদেহ। সেই দেহ ৩০ কিলোমিটার দূরে টেনে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠল এক সরকারি আধিকারিকের বিরুদ্ধে। আর সবচেয়ে আশ্চর্যজনক বিষয় হল দেহ আটকে থাকার বিষয়টি জানতেই পারলেন না ওই আধিকারিক এবং তাঁর চালক। এমন ঘটনায় ওই সরকারি আধিকারিককে বরখাস্ত করেছে জেলা প্রশাসন। ঘটনায় তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এমনই ঘটনা সামনে এসেছে উত্তর প্রদেশের বাহরাইচ জেলার নানপাড়া-বাহরাইচ সড়কে।
আরও পড়ুন: ‘সম্মেলনে মুখ লুকানোর চেষ্টা করি’, পথ দুর্ঘটনা বেড়েছে, মেনে নিয়ে বললেন গডকড়ি
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত ব্যক্তির নাম নরেন্দ্র কুমার হালদার (৩৫)। তিনি পয়াগপুর থানা এলাকার কৃষ্ণ নগর কলোনীর বাসিন্দা। পাশের জেলা লখিমপুর খেরির গোলা গোকর্ণনাথে ভাগ্নিকে নামিয়ে দিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন তিনি। সেই সময়, নায়েব তহসিলদারের গাড়ির সঙ্গে রাম গাঁও থানার অন্তর্গত এলাকায় চৌপাল সাগরের কাছে বাইকের ধাক্কা লাগে। তারপর ঘটনাস্থল থেকে ৩০ কিলোমিটার দূরে নানপাড়ায় তহসিল অফিসে গাড়িটি গিয়ে থামে।
গাড়িটি গন্তব্যে পৌঁছানোর পর দেখা তার নিচে বাইক চালকের ক্ষতবিক্ষত দেহ আটকে রয়েছে। এই ঘটনায় একাধিক প্রশ্ন সামনে এসেছে। একইসঙ্গে দেহটিকে গাড়ির নিচে আটকে রাখা হয়েছিল কি না তা এখনও স্পষ্ট নয় পুলিশের কাছে। এবিষয়ে জেলা শাসক মণিকা রানী বলেন, গাড়িটি তহসিলদারকে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু, নায়েব তহসিলদার শৈলেশ কুমার অবস্থি সেটি সরকারি কাজে ব্যবহার করছিলেন। তিনি জানিয়েছেন, অবহেলার জন্য ওই আধিকারিককে বরখাস্তের সুপারিশ করা হয়েছে।
রামগাঁও থানার পুলিশ অফিসার অলোক সিং জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বাহরাইচ-নানপাড়া হাইওয়ের আইটিআই-এর কাছে একটি দুর্ঘটনার খবর পাওয়া গিয়েছিল। কিন্তু, পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে শুধু একটি মোটরসাইকেল ও একজনের জুতো খুঁজে পায়। কাউকে আশেপাশে পাওয়া যায়নি। রাস্তায় বেশ কিছু দূর পর্যন্ত রক্তের দাগ থাকতে দেখা গিয়েছিল। তাতে পুলিশের সন্দেহ ছিল গাড়ির নিচে দেহ লাশ আটকে থাকতে পারে।
ঘটনার বিষয়ে অন্যান্য থানায় খবর দেওয়া হয়। নানপাড়া থানার পুলিশ জানিয়েছে, গাড়ির নিচে মৃতদেহ আটকে থাকার খবর পেয়ে সেটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। ওই আধিকারিক পুলিশকে জানিয়েছেন, তিনি এবং চালক গাড়ির নিচে দেহ আটকে থাকার বিষয়টি জানতেন না। এই ঘটনায় অন্য কোনও রহস্য রয়েছে কি না তা জানার চেষ্টা করছেন তদন্তকারীরা। টোল প্লাজা এবং অন্যান্য জায়গার সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। নির্যাতিতার বাবার অভিযোগের ভিত্তিতে চালকের বিরুদ্ধে একটি এফআইআর দায়ের করেছে পুলিশ।