কাজ করতেন কল সেন্টারে। আর সেই পেশা থেকে একেবারে পেশাদারি চুরির কাজে নেমে পড়ে এক তরুণী। অভিযোগ এমনটাই। এমনকী মাস্টার কি ব্যবহার করে একের পর এক বাড়িতে চুরিও করার অভিযোগও উঠেছে তার বিরুদ্ধে।
দক্ষিণ-পশ্চিম দিল্লির বেশ কয়েকটি তালাবন্ধ বাড়িতে ৫০টি মাস্টার কির সাহায্যে ওই তরুণী খুলে ফেলেছিল বলে খবর। ২৩ বছর বয়সি কল সেন্টারের ওই প্রাক্তন কর্মীকে ছত্তরপুর এলাকা থেকে গ্রেফতার করেছে দিল্লি পুলিশ।
আসলে সে মণিপুরের বাসিন্দা। অভিযুক্ত জয়নীলা টংসসিন আনাল ২০২৪ সালের অক্টোবরে দিল্লিতে চলে আসে এবং একটি কল সেন্টারে চাকরি নেয়। সে মুনিরকায় থাকত বলে জানিয়েছেন এক কর্মকর্তা। জিজ্ঞাসাবাদে জয়নীলা চুরির কথা স্বীকার করেছে এবং পুলিশকে তার বাড়িতেও নিয়ে গিয়ে দেখিয়েছে যেখানে সে বিভিন্ন বাড়ি থেকে চুরি করা জিনিসপত্র রাখে।
মাস্টার চাবি ব্যবহার করে সে কীভাবে চুরি করত?
সূত্রের খবর, কিছুদিন কল সেন্টারে কাজ করার পর জয়নীলা চাকরি ছেড়ে দেয়। সে কিষাণগড় এবং সফদরজং এনক্লেভের মতো আশেপাশের অঞ্চলে তালাবন্ধ বাড়িগুলির সন্ধান শুরু করত বলে অভিযোগ। ডেপুটি পুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ-পশ্চিম) অমিত গোয়েল জানিয়েছেন, অভিযুক্ত একগুচ্ছ চাবি দিয়ে দরজার তালা পরীক্ষা করে এবং কাউকে ভয় না দেখিয়ে অত্যন্ত গোপনে বাড়িতে ঢুকে ভিতরে থাকা মূল্যবান জিনিসপত্র লুঠ করে।
ডিসিপি তার পদ্ধতিটিকে ‘সিস্টেমেটিক’ হিসাবে বর্ণনা করেছেন এবং জানিয়েছেন যে জয়নীলা 'তালাবদ্ধ বাড়িগুলি প্রথমে দেখে আসত এরপর চুপি চুপি সেই বাড়িগুলিতে প্রবেশের জন্য মাস্টার কি ব্যবহার করত। তার কাছে চুরি যাওয়া যে সমস্ত জিনিসপত্র মিলেছে ও তার স্বীকারোক্তির মাধ্যমে এটা বোঝা গিয়েছে যে অন্তত চারটি চুরির মামলার কিনারা করা সম্ভব।
কীভাবে ধরা পড়ল সে?
এই মাসের গোড়ার দিকে কিষাণগড় থানা এবং সফদরজং এনক্লেভ থানায় দুটি পৃথক চুরির অভিযোগ দায়ের করা হয়েছিল। দুটি ক্ষেত্রেই তালাবন্ধ বাড়িগুলিকে টার্গেট করার ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসে। অভিযোগকারীদের মধ্যে একজনের অভিযোগ, তাঁর মুনিরকার বাড়ি থেকে একটি ল্যাপটপ, একটি এলইডি টিভি এবং ক্যামেরার আনুষঙ্গিক জিনিসপত্র চুরি গিয়েছে। আরেকজন তাঁর অভিযোগে জানিয়েছেন, তাঁর বাড়ি থেকে সোনা ও হিরের কানের দুল, একটি হেডফোন, জুতো এবং নগদ ১৩০০ টাকা চুরি গিয়েছে। এসব মামলার তদন্তে নেমে ১৪ জুন জয়নীলাকে ছত্তরপুর থেকে গ্রেফতার করা হয়। ডিসিপি গোয়েল জানিয়েছেন, চুরি যাওয়া জিনিসপত্রের পাশাপাশি তালাবন্ধ বাড়িগুলি খুলতে তাঁর ব্যবহৃত ৫০টি চাবিও উদ্ধার করেছে পুলিশ।