পাকিস্তানের ৯ সন্ত্রাসী ঘাঁটি গুঁড়িয়ে দিতে ‘অপারেশন সিঁদুর’ শুরু করে ভারতীয় সেনা। সেনার সেই সন্ত্রাস-সংহারে মে মাসে বহু জঙ্গির সঙ্গে মৃত্যু হয়েছিল পাকিস্তানের জঙ্গি আবদুল রউফের। যে জঙ্গি আবদুল রউফের শেষকৃত্যের ছবিতে দেখা গিয়েছে বহু পাক সেনা অফিসার সহ সেদেশের বিশিষ্টদের। ছবি তুলে ধরে ভারতের বিদেশ সচিব বিক্রম মিশ্রি কটাক্ষের সুরে বলেছিলেন,' জঙ্গিদের রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় শেষকৃত্য সম্ভবত পাকিস্তানেই হয়।' সেই আবদুল রউফকে নিয়ে পাকিস্তানের অবস্থান বোঝাতে গিয়ে নিজের মন্তব্যের জালেই ফেঁসে গেলেন পাকিস্তানের প্রাক্তন মন্ত্রী হিনা রব্বানি। তাও আবার লাইভ টিভি সম্প্রসারণে!
সাক্ষাৎকার ছিল মিডিয়া চ্যানেল আল জাজিরার তরফে। সাক্ষাৎকারে প্রাক্তন পাকিস্তানি মন্ত্রী হিনা রব্বানি খার নিজেই প্রসঙ্গ তোলেন লস্কর জঙ্গি আবদুল রউফের। তিনি দাবি করতে থাকেন, যে আবদুল রউফ একজন সাধারণ পাকিস্তানি নাগরিক। জঙ্গি আবদুলের যে শেষকৃত্যের ছবি ঘিরে গোটা চর্চা, সেই ছবিও হাতে তুলে নেন হিনা। এরপর তিনি বলেন,' কয়েক মিলিয়ন আবদুল রউফ রয়েছে পাকিস্তানে।' হিনা বলতে থাকেন,' আমি আপনাকে, কর্তৃত্বের সাথে বলছি, প্রমাণ সহ… যা সমগ্র বিশ্বের সামনে তুলে ধরা হয়েছে… আপনি (ভারত) যাকে দাবি করছেন, তিনি সেই ব্যক্তি নন। আপনি যাকে দাবি করছেন, তিনি সেই ব্যক্তি নন।' এরপর আসে সাক্ষাৎকারে বিশিষ্ট সাংবাদিকের পোক্ত যুক্তি। সাংবাদিক, হিনাকে বলেন,' তারা (পাকিস্তান সেনাবাহিনী) বলেছে, যে সে (আবদুল রউফ) একটি রাজনৈতিক দলের সদস্য, এবং তারা তার জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর প্রকাশ করেছে। সেই পরিচয়পত্র নম্বরটি মার্কিন নিষেধাজ্ঞার (নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকা জঙ্গি) তালিকার (তালিকায় থাকা নম্বরের) সঙ্গে মিলছে। সুতরাং, মার্কিন নিষেধাজ্ঞার সন্ত্রাসী তালিকা অনুসারে, এই ব্যক্তি একজন সন্ত্রাসী।' সাংবাদিকের এই বক্তব্যের পরই হিনা নিজের বলা মন্তব্যে তুমুল ফেঁসে যান।এরই সঙ্গে সন্ত্রাস নিয়ে পাকিস্তানের দ্বিচারিতা ও মিথ্যাচারের আসল চেহারা প্রকাশ পায়।
যুক্তি ও প্রমাণ যখন হিসার সামনে পেশ হয়, তখন স্বভাবতই লাইভ টিভিতে তাঁকে বেশ থতমত খেতে দেখা যায়। তিনি পাল্টা দুর্বল যুক্তি দিয়ে বলতে থাকেন,' পাকিস্তানি সেনাবাহিনী এই ব্যক্তিকে (ভাইরাল শেষকৃত্যের ছবিতে থাকা ব্যক্তি) রক্ষা করছে। পাকিস্তানি সেনাবাহিনী সেই ব্যক্তিকে রক্ষা করছে না যাকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নিষিদ্ধ করেছে।' তখনও সাংবাদিক ফের একবার জঙ্গি আবদুল রউফের আইডি কার্ড নম্বরের কথা তোলেন। তাতে খুব একটা স্বচ্ছন্দ্য দেখায়নি হিনাকে।
প্রসঙ্গত,পাকিস্তানের সন্ত্রাসী ঘাঁটিতে ভারতের অভিযানের পর, মে মাসে এক সংবাদ সম্মেলনে, পাকিস্তানের আইএসপিআর মহাপরিচালক আহমেদ শরিফ চৌধুরী নিশ্চিত করেছিলেন যে ওই ভাইরাল হওয়া শেষকৃত্যের ভিডিওতে মৃত ব্যক্তিটির নাম হাফিজ আবদুল রউফ। তখনই পাকিস্তান তার বিস্তারিত ও আইডি নম্বর প্রকাশ করে। দেখা যায় সেই আইডি নম্বরের সঙ্গে মিলে যাচ্ছে আমেরিকায় নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকা জঙ্গিদের লিস্টের রউফের নম্বর।