সাধারণ মানুষের জন্য যে নিয়ম-কানুন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, মাননীয় আইনপ্রণেতারা যেন সেগুলি অমান্য করার 'অনুমতি' পেয়ে যান। শনিবার উত্তরপ্রদেশে এমনই কিছু ঘটল। যে সেতু দিয়ে যান চলাচলের অনুমতি নেই, সেখান দিয়ে বিজেপি বিধায়ক অভিজিৎ সিং সাঙ্গার কনভয় দিব্যি ছুটে গেল। তবে মৃতদেহ বহনকারী অ্যাম্বুলেন্সকে যেতে দেওয়া হল না। জানা গিয়েছে, দুর্ঘটনায় মৃত্যুর পর কানপুর থেকে অ্যাম্বুলেন্সে করে মায়ের দেহ নিয়ে যাচ্ছিল ছেলে। সেই সময় যমুনা সেতুর ওপর অ্যাম্বুলেন্স থামিয়ে দেওয়া হয়। এরপর মৃতার দুই ছেলে স্ট্রেচারে করে মৃতদেহ নিয়ে পায়ে হেঁটে সেতু পার হন এবং অপর প্রান্তে অন্য একটি গাড়ি ডেকে কাঁদতে কাঁদতে বাড়ি পৌঁছান। মৃতদেহ নিয়ে প্রায় এক কিলোমিটার হাঁটেন ছেলেরা। (আরও পড়ুন: উত্তরাখণ্ডে মেঘভাঙা বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত নির্মীয়মাণ হোটেল সাইট, নিখোঁজ ৯ শ্রমিক)
আরও পড়ুন: মধ্য পাকিস্তানে ৫.৩ মাত্রার ভূমিকম্প, ভোররাতে ফের কেঁপে উঠল পড়শি দেশ
এই ঘটনার ঠিক আড়াই ঘণ্টা আগে এই যমুনা সেতু দিয়ে গাড়িতে করে বেরিয়ে এসেছিলেন বিজেপি বিধায়ক অভিজিৎ। এরপরই সেতুতে ব্যারিকেড করে দিয়েছিল পুলিশ। এই আবহে অ্য়াম্বুলেন্সটি সেতুতে উঠতে পারেনি। উল্লেখ্য, এই যমুনা সেতুর মেরামতের কাজ চলছে। তিন সপ্তাহের জন্য প্রতি শনিবার সকাল ৬টা থেকে ৪৮ ঘণ্টার জন্য সেতুর ওপর দিয়ে যান চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। তবে বিধায়কের কনভয়কে যেতে দেওয়া হয় সেখান দিয়েই। সাধারণ মানুষের জন্য যে বিধিনিষেধ প্রযোজ্য, বিধায়করা হয়ত তার ঊর্ধ্বে। (আরও পড়ুন: 'নারীবিদ্বেষ…', কসবা গণধর্ষণ কাণ্ডে কল্যাণ-মদনকে নিয়ে বিস্ফোরক মহুয়া)
আরও পড়ুন: কসবা গণধর্ষণকাণ্ডে মূল অভিযুক্তের মোবাইল থেকে দেড় মিনিটের ভিডিয়ো ক্লিপ উদ্ধার
সুমেরপুর থানার তেধা গ্রামের বাসিন্দা মান সিং জানিয়েছেন, দুর্ঘটনায় তাঁর মায়ের পা ভেঙে যায়। এরপর কানপুরে চিকিৎসাধীন ছিলেন তাঁর মা শিবাদেবী। মান সিং বলেন, 'শনিবার ভোরে মায়ের মৃত্যু হয়। আমি এবং আমার ভাই জয় সিং মায়ের মৃতদেহ নিয়ে গ্রামে ফিরছিলাম। সকাল সাড়ে ৯টা নাগাদ আমরা যমুনা সেতুতে পৌঁছালে অ্যাম্বুল্যান্স আটকে দেওয়া হয়। স্ট্রেচারে করে চালকের সহায়তায় আমরা অ্যাম্বুলেন্স রেখে ৯০০ মিটার লম্বা সেতুটি হেঁটে পার হই। তখন যেন দম বন্ধ হয়ে আসছিল। মৃতদেহ চার জায়গায় রেখে বিশ্রাম নিতে হয়েছে। অন্য প্রান্তে পার্ক করা অটো দিয়ে ফের মায়ের দেহ নিয়ে যাওয়া হয়েছিল গ্রামে।'
আরও পড়ুন: ঘুম উড়েছে মুনিরের, তাই ভারতের বিরুদ্ধে হাস্যকর অভিযোগ পাক সেনার, দিল্লি বলল...
এদিকে ঘটনাটি জানাজানি হওয়ার পর এই নিয়ে মুখ খোলেন পিএনসির প্রজেক্ট ম্যানেজার এমপি ভার্মা। তিনি জানিয়েছেন, সংবাদমাধ্যম থেকে তাদের কাছে খবর এসেছে যে একটি মৃতদেহ সেতু দিয়ে স্ট্রেচারে করে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। এদিকে তাঁর বক্তব্য, সেতু বন্ধ হওয়ার কিছুক্ষণ আগে কানপুর সদরের বিধায়কের গাড়ি সেখান দিয়ে গিয়েছিল। যদিও যেই সময় বিধায়কের গাড়ি সেখান দিয়ে গিয়েছিল বলে দাবি করা হচ্ছে, নিয়ম অনুযায়ী ততক্ষণে সেতু বন্ধ হয়ে যাওয়ার কথা। এদিকে এমপি বর্মার কথায়, 'সাধারণ মানুষের সুবিধার কথা বিবেচনা করেই সেতু মেরামতির সময় তাদের পায়ে হেঁটে সেতু পার করতে বলা হচ্ছে।'