কলকাতা গণধর্ষণ কাণ্ড নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেস নেতা কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় ও মদন মিত্রের মন্তব্য থেকে দূরত্ব তৈরি করে বিস্ফোরক মন্তব্য তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্রের। সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্স-এ মহুয়া মৈত্র এই নিয়ে লেখেন, 'ভারতে নারীবিদ্বেষ দলীয় সীমানা দেখে না।। পার্থক্য হল, যেই ভুল করুক না কেন, তৃণমূল কংগ্রেস এই জঘন্য মন্তব্যগুলির নিন্দা করে।' মহুয়া মৈত্র তৃণমূলের অফিসিয়াল হ্যান্ডেল থেকে একটি পোস্ট শেয়ার করে সাংসদ বন্দ্যোপাধ্যায় ও বিধায়ক মদন মিত্রের মন্তব্যের নিন্দা করেছেন। দলের তরফে জানানো হয়েছে, কসবা গণধর্ষণ কাণ্ড নিয়ে করা তাঁদের মন্তব্য কল্যাণ এবং মদনদের ব্যক্তিগত মতামত। (আরও পড়ুন: কসবা গণধর্ষণকাণ্ডে মূল অভিযুক্তের মোবাইল থেকে দেড় মিনিটের ভিডিয়ো ক্লিপ উদ্ধার)
মহিলাদের বিরুদ্ধে অপরাধের বিরুদ্ধে দলের 'জিরো টলারেন্স' রয়েছে বলে জানিয়েছে তৃণমূল। এই আবহে দলেই সাংসদ, বিধায়কের মন্তব্য প্রসঙ্গে তৃণমূল সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে লেখে, 'এই মতামত কোনওভাবেই দলের অবস্থানকে প্রতিফলিত করে না।' ওই পোস্টে অপরাধে জড়িতদের 'কঠোরতম শাস্তির' দাবিও জানানো হয়। সেই পোস্টে লেখা হয়, 'সাউথ ক্যালকাটা ল’ কলেজে ঘটে যাওয়া নৃশংস ঘটনা প্রসঙ্গে সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় ও বিধায়ক মদন মিত্র যে মন্তব্য করেছেন, তা তাঁদের ব্যক্তিগত মতামত। দল তাঁদের বক্তব্যের সঙ্গে কোনওভাবেই একমত নয় এবং এই মন্তব্যগুলিকে কড়াভাবে নিন্দা করছে। এই ধরনের বক্তব্য কোনওভাবেই দলের অবস্থানকে প্রতিফলিত করে না। আমাদের অবস্থান স্পষ্ট - মহিলাদের ওপর অপরাধের ক্ষেত্রে বরাবরই জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করা হয়েছে এবং ভবিষ্যতেও করা হবে। যারা এই নৃশংস ঘটনার সঙ্গে জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে যেন কঠোরতম শাস্তির ব্যবস্থা করা হয়।'
উল্লেখ্য, তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, বিধায়ক মদন মিত্রের মন্তব্যের পর সমালোচনার মুখে পড়ে তৃণমূল। এই আবহে দলের দুই প্রবীণ নেতার মন্তব্য থেকে নিজেদের দূরত্ব তৈরি করে টিএমসি। উল্লেখ্য, কসবা কাণ্ড নিয়ে কল্যাণ বলেছিলেন, 'যদি একজন বন্ধু তাঁর বান্ধবীকে ধর্ষণ করে, সেখানে পুলিশ কী করতে পারে? শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভিতরে যদি এই ঘটনা ঘটে, সেখানে কি পুলিশ থাকবে? শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে তো পুলিশ দাঁড় করানো যায় না। সহপাঠী বা সহকর্মীরাই যেখানে অপরাধ করছে, সেখানে দায়িত্ব কার?'
এদিকে কামারহাটির বিধায়ক মদন মিত্র আবার বলেন, 'কসবাকাণ্ডে পড়ুয়াদের জন্য এক বড় বার্তা এসেছে। কলেজ যখন বন্ধ আছে, তখন যদি কোনও পরিচিতও আপনাকে ডাকে, তাহলে যাবেন না। ওই মেয়েটা যদি না যেত তাহলে এমন ঘটনা হত না। উনি যখন যাচ্ছিলেন সেই সময় যদি সঙ্গে করে আরও দুই বন্ধুকে নিয়ে যেতেন বা কাউকে জানাতেন এটা ঘটত না। যাঁরা এই ঘটনা ঘটিয়েছে তাঁরা তো সুযোগেরই ব্যবহার করেছেন।'