আবারও মাঝ আকাশে বড় বিপদের মুখে এয়ার ইন্ডিয়ার বিমান।আর সেই ভয়াবহ বিমান যাত্রার সাক্ষী থাকলেন কেরলের তিরুবনন্তপুরম থেকে দিল্লিগামী শতাধিক যাত্রীরা। ওই বিমানেই ছিলেন কংগ্রেস সাংসদ তথা প্রাক্তন মন্ত্রী কে সি বেনুগোপাল-সহ একাধিক সাংসদ।এয়ার ইন্ডিয়ার এআই ২৪৫৫ ফ্লাইটটি টেক-অফের পরই প্রবল টার্বুলেন্সের মুখে পড়ে।যার জেরে মাঝ আকাশে চরম আতঙ্ক ছড়িয়ে। এরপরেই জরুরি ভিত্তিতে চেন্নাইয়ে অবতরণ করে বিমানটি।
কে সি বেণুগোপাল এক্স-এ পোস্ট করে ভয়াবহ বিমান যাত্রার বর্ণনা দিয়েছে। তিনি লেখেন, 'তিরুবনন্তপুরম থেকে দিল্লি যাওয়ার পথে আমরা মৃত্যুর মুখ থেকে বেঁচে ফিরেছি। বিলম্বিত যাত্রা শুরু হয়েছিল প্রবল টার্বুলেন্সের মাঝেই। ঘণ্টাখানেক পর ক্যাপ্টেন ঘোষণা করেন, ফ্লাইটের সিগন্যাল ত্রুটির কারণে বিমান চেন্নাইয়ে নামবে। প্রায় দু'ঘণ্টা আকাশে চক্কর কাটতে থাকি অনুমতি পাওয়ার জন্য। প্রথম অবতরণের চেষ্টা চলাকালীন, আমরা শুনতে পাই, অন্য একটি বিমান নাকি একই রানওয়েতে ছিল। সেই মুহূর্তে ক্যাপ্টেনের তৎপরতায় বিমান উপরে তুলে প্রাণ বাঁচে সকলের। দ্বিতীয় চেষ্টায় অবতরণ সফল হয়।' কংগ্রেস নেতা আরও লিখেছেন, 'যাত্রীদের নিরাপত্তা ভাগ্যের উপর নির্ভর করতে পারে না।' ঘটনার তদন্তের জন্য তিনি ডিজিসিএ এবং বেসামরিক বিমান মন্ত্রককে ট্যাগ করেন পোস্টটিতে।ফ্লাইট ট্র্যাকিং সাইট ফ্লাইটরাডারের তথ্য অনুযায়ী, এয়ার ইন্ডিয়ার বিমানটি তিরুবনন্তপুরম থেকে রাত ৮টা ১৭ মিনিটে উড়ে চেন্নাই পৌঁছয় রাত ১০টা ৩৫ মিনিটে। পরে রাত ১টা ৪০ মিনিটে ফের টেক অফ করে এবং ভোর ৩টা ৫৮ মিনিটে দিল্লিতে পৌঁছয়।
এয়ার ইন্ডিয়ার প্রতিক্রিয়া
এয়ার ইন্ডিয়া অবশ্য কে সি বেণুগোপালের বক্তব্যের একটি অংশ নস্যাৎ করে দিয়েছে। কংগ্রেস সাংসদের পোস্টের উপর মন্তব্য করে বিমান সংস্থাটি বলেছে,'আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই যে চেন্নাই অভিমুখে বিমানটি ঘুরিয়ে দেওয়া একটি সতর্কতামূলক ব্যবস্থা ছিল, যা সন্দেহজনক প্রযুক্তিগত সমস্যা এবং খারাপ আবহাওয়ার কারণে নেওয়া হয়েছিল। চেন্নাই বিমানবন্দরে প্রথম অবতরণের প্রচেষ্টার সময়, এয়ার ট্র্যাফিক কন্ট্রোল 'গো-অ্যারাউন্ড' নির্দেশ দিয়েছিল, এবং রানওয়েতে অন্য কোনও বিমান উপস্থিত থাকার কারণে এটি হয়নি।'এয়ার ইন্ডিয়া জানিয়েছে, 'আমাদের পাইলটরা এই ধরনের পরিস্থিতি মোকাবেলা করার জন্য সম্পূর্ণ প্রশিক্ষিত, এবং এই ক্ষেত্রেও, তারা পুরো ফ্লাইট জুড়ে সমস্ত স্ট্যান্ডার্ড পদ্ধতি অনুসরণ করেছেন। আমরা বুঝতে পারি যে এই অভিজ্ঞতাটি আপনাদের জন্য অস্বস্তিকর হতে পারে এবং এই ডাইভারশনের কারণে সৃষ্ট অসুবিধার জন্য আমরা ক্ষমাপ্রার্থী। তবে, যাত্রী এবং ক্রুদের নিরাপত্তা সর্বদা আমাদের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার। আপনারা সেটা বোঝার জন্য ধন্যবাদ।'
অন্যদিকে বিজেপির আইটি সেলের প্রধান অমিত মালব্য বলেন,'এটা অত্যন্ত গুরুতর। যদি কংগ্রেসের সিনিয়র নেতা কেসি বেণুগোপাল দাবি করেন যে এয়ার ইন্ডিয়ার একটি বিমান রানওয়েতে থাকার কারণে চেন্নাইতে অবতরণ বাতিল করতে হয় এবং বিমান সংস্থাটি তাৎক্ষণিকভাবে তার বিরোধিতা করে, তাহলে এরমধ্যে একটি হল তথ্য ভুলভাবে উপস্থাপন করা। বিমান চলাচলের নিরাপত্তা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। যদি অভিযোগটি সত্য হয়, তাহলে চেন্নাই এটিসি এবং এয়ার ইন্ডিয়াকে জবাবদিহি করতে হবে। যদি তা না হয়, তাহলে বেণুগোপালকে মিথ্যা প্রচারের জন্য নো-ফ্লাই তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা-সহ পরিণতি ভোগ করতে হবে।'