কানাডার সীমান্ত দিয়ে ভারতীয়দের আমেরিকায় পাচারের এক ঘটনার অভিযোগে তদন্তে নেমেছে ইডি। সেই ঘটনার সূত্র ধরেই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ‘এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টোরেট’ এবার বেশ কয়েকজন ভারতীয়, কয়েকটি সংস্থা ও বেশ কিছু কানাডার কলেজের বিরুদ্ধে তদন্তে নেমেছে। আপাতত কানাডার বহু কলেজ রয়েছে ইডির স্ক্যানারে।
২০২২ সালে গুজরাটের দিঙ্গুচা গ্রামের এক পরিবারের ৪ সদস্যের মৃত্যু হয় কানাডা-মার্কিন সীমান্তের কাছে। অভিযোগ, তাঁরা সকলে অবৈধভাব আমেরিকায় প্রবেশ করতে যাচ্ছিলেন। সেই সময় প্রবল ঠান্ডায় কানাডা-আমেরিকা সীমান্তের কাছে মৃত্যু হয় তাঁদের। সেই ঘটনার তদন্তে নেমেছে ইডি। আর নেমেই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার স্ক্যানারে এসে গিয়েছে কানাডার বহু কলেজ। ইতিমধ্যেই ইডি, মুম্বই, নাগপুর, গান্ধীনগর, ভদোদরার ৮ টি লোকেশনে তদন্ত চালিয়েছে। তদন্ত চলছে ভবেশ অশোকভাই প্যাটেল নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে, তিনি কানাডা দিয়ে ভারতীয়দের ঢুকিয়ে অবৈধভাবে আমেরিকায় পাঠানোর ছক কষতেন। গত ১০ ও ১৯ ডিসেম্বর ইতিমধ্যেই ইডি এই ঘটনার তত্ত্ব তলাশ শুরু করে দিয়েছে। মামলা দায়ের হয়েছে PMLA-র আওতায়। ২০০২ প্রিভেনশন অফ মানি লন্ডারিং অ্যাক্ট-র আওতায় তদন্তে নেমে গিয়েছে ইডি। ভবেশভাই প্যাটেলের বিরুদ্ধে রয়েছে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ। তাঁর বিরুদ্ধে অবৈধভাবে কানাডা সীমান্ত দিয়ে আমরিকায় মানব পাচারের অভিযোগ রয়েছে। এই বিষয়ে ইডির তরফে একটি বিবৃতিও দেওয়া হয়েছে।
তদন্তকারী এজেন্সি ইডি বলছে, প্যাটেল এবং অন্যরা কানাডিয়ান কলেজে ভর্তির অজুহাতে ভারতীয়দের কানাডা হয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পাঠানোর ষড়যন্ত্র করেছিল। এই পাচারচক্রের উদ্দেশ্যও ফাঁস করে দিয়েছে এজেন্সি। বলা হচ্ছে, কানাডায় নেমেই কলেজে যোগ না দিয়ে, কানাডার মার্কিন সীমান্ত দিয়ে ওই ভারতীয়দের আমেরিকায় পৌঁছে দেওয়া হত। পরে, কানাডার ওই কলেজগুলি দ্বারা প্রাপ্ত ফি ব্যক্তিদের অ্যাকাউন্টে পাঠানো হত।
বহু ভারতীয়কে এই ফাঁদে ফেলার লোভ দেখানো হয়েছে বলে খবর। জানা যাচ্ছে, এই গোটা পন্থায় আমেরিকায় ভারতীয়দের পাচারের জন্য মাথা পিছু ৫৫ থেকে ৬৬ লাখ টাকা দাবি করত পাচারচক্রের সদস্যরা। এদিকে, খবর, আমেদাবাদে এক এফআইআর দায়ের হতেই ইডি এই মামলার তদন্তে নেমেছে। ইডির তরফে বলা হয়েছে,' জানা যাচ্ছে, যে কানাডার প্রায় ১১২টি কলেজ একটি সত্ত্বা (সংস্থার)সাথে এবং আরও ১৫০টি কলেজ অন্য সত্ত্বার(সংস্থার) সাথে চুক্তি করেছে। এই মামলায় তাদের যোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।' ED-এর মতে, অভিযুক্তরা পাচার নেটওয়ার্কের অংশ হিসেবে ওই ব্যক্তিদের কানাডিয়ান কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুবিধা দিয়েছিল। এই ব্যক্তিরা কানাডিয়ান স্টুডেন্ট ভিসার জন্য আবেদন করেছিলেন কিন্তু কানাডায় পৌঁছানোর পর, প্রতিষ্ঠানগুলিতে যোগ দেননি, বলে অভিযোগ।