ইউটা বিশ্ববিদ্যালয়ের পাবলিক ফোরামে জনতার প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার সময়ই আততায়ীর হাতে খুন হয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের 'ঘনিষ্ঠ মিত্র' চার্লি কার্ক। আচমকা ছুটে আসা গুলি লাগে চার্লি কার্কের ঘাড়ে। ঘটনাস্থলেই লুটিয়ে পড়েন রক্তাক্ত কার্ক। ৩১ বছর বয়সি এই তরুণ তুর্কি ডানপন্থী নেতার হত্যার তদন্তে নেমে ফেডারেল ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন (এফবিআই) চার্লি কার্কের সন্দেহভাজন খুনির ছবি প্রকাশ করেছে। একইসঙ্গে খুনির মাথা দাম ১ লাখ ডলার পুরস্কারও ঘোষণা করেছে মার্কিন তদন্তকারী সংস্থা। এই আবহে শিরোনামে এসেছে একটি বই : 'দ্য শুটিং অফ চার্লি কার্ক।'
অ্যামাজনের একজন মুখপাত্র নিশ্চিত করেছেন যে কোম্পানি ওই বইটি সম্পর্কে তদন্ত করছে। হিন্দুস্তান টাইমসকে দেওয়া এক বিবৃতিতে অ্যামাজনের এক মুখপাত্র বলেন, 'কোন বই বিক্রির জন্য তালিকাভুক্ত করতে আমাদের কাছে বিষয়বস্তুর নির্দেশিকা রয়েছে এবং আমরা সেই সব বই সরিয়ে ফেলি যেগুলি এই নির্দেশিকাগুলি মেনে চলে না। বইয়ের এই নামটি আর বিক্রির জন্য উপলব্ধ নেই। এর ফলে সৃষ্ট যে কোন বিভ্রান্তির জন্য আমরা ক্ষমাপ্রার্থী। বইয়ের এই শিরোনামটি ১০ সেপ্টেম্বর বিকেলে প্রকাশিত হয়েছিল।'
ঘটনার সূত্রপাত হয় বুধবার দুপুরে উটাহ ভ্যালি ইউনিভার্সিটির সোরেনসেন সেন্টারে। অ্যারিজোনা-ভিত্তিক তাঁর রাজনৈতিক তরুণ সংগঠন টার্নিং পয়েন্ট ইউএসএ-এর আয়োজিত এক আলোচনাসভায় বক্তৃতা দিচ্ছিলেন তরুণ রিপাবলিকান মুখ চার্লি কার্ক। তখনই হঠাৎই ছাদ থেকে এক রাউন্ড গুলি ছোঁড়া হয়। মুহূর্তের মধ্যেই রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে লুটিয়ে পড়েন তিনি। আতঙ্কে ছত্রভঙ্গ হয়ে যায় উপস্থিত জনতা। তদন্তকারী সূত্রে খবর, ঘটনাস্থল সংলগ্ন একটি ছাদে বসানো ছিল হাই-পাওয়ারড বোল্ট-অ্যাকশন রাইফেল। সেটিই ব্যবহৃত হয়েছে এই হামলায়। গুলি ছোঁড়ার পর আততায়ীকে ছাদ থেকে নেমে পাশের আবাসিক এলাকায় পালিয়ে যেতে দেখা গেছে। প্রকাশিত ছবিতে কালো রঙের জামা, কালো টুপি ও সানগ্লাস পরিহিত এক ব্যক্তিকে দেখা যাচ্ছে। তাঁর কাঁধে ঝোলানো ছিল কালো ব্যাগ। এই পোশাক ও চেহারার সূত্রেই তাঁকে শনাক্ত করার চেষ্টা চালাচ্ছে এফবিআই।
এফবিআই তদন্তের মধ্যেই নতুন ঘটনা সোশ্যাল মিডিয়ায় বিভ্রান্তির সৃষ্টি করেছে। সোশ্যাল মিডিয়ার ব্যবহারকারীরা 'দ্য শুটিং অফ চার্লি কার্ক : আ কম্প্রিহেনসিভ অ্যাকাউন্ট অফ দ্য উটাহ ভ্যালি ইউনিভার্সিটি অ্যাটাক, দ্য আফটারম্যাথ, অ্যান্ড আমেরিকা'স রেসপন্স' শীর্ষক একটি বইয়ের স্ক্রিনশট শেয়ার করেছেন। বইটি আনাস্তাসিয়া জে. কেসি নামে একজন লেখকের নামে লেখা হয়েছিল এবং হত্যাকাণ্ডের ঠিক একদিন আগে, ৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৫-এ একটি তালিকাভুক্ত প্রকাশনার তারিখ ছিল। বইটির তালিকাটি তখন থেকে অ্যামাজন থেকে সরিয়ে ফেলা হয়েছে। তবে বইটির প্রচ্ছদ, শিরোনাম এবং তারিখ দেখানো স্ক্রিনশট এক্স হ্যান্ডেলে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে। ব্যবহারকারীরা সময় এবং লেখককে নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। একজন নেটিজেন লিখেছে, 'কেউ কি এটা তদন্ত করতে পারবেন? এই বইটি অ্যামাজনের অনলাইন তালিকা থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। আনাস্তাসিয়া কেসি কে?'