ডায়াবিটিসের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে রয়েছে লিভারের স্বাস্থ্য। লিভার দেহে গ্লুকোজ সংরক্ষণ ও নির্গমনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। অনেকসময় ডায়াবিটিসের কারণে লিভারে অতিরিক্ত চর্বি জমে। এই চর্বি জমে লিভারের কার্যক্ষমতা হ্রাস পেতে পারে ও জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে। টাইপ ২ ডায়াবিটিস শুধু রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা বাড়ায় না, বরং এটি লিভার বা যকৃতের ওপরও বড় ধরণের প্রভাব ফেলে। সাম্প্রতিক গবেষণাগুলি বলছে, যাদের ডায়াবিটিস আছে, তাদের মধ্যে নন-অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার ডিজিজ (NAFLD) হওয়ার সম্ভাবনা প্রায় ৭০% পর্যন্ত বেশি।
প্রধান ঝুঁকি কি ফ্যাটি লিভার?
ফ্যাটি লিভার হল এমন একটি অবস্থা যেখানে লিভারে অতিরিক্ত চর্বি জমা হয়, যা অ্যালকোহল গ্রহণ ছাড়াও হতে পারে। ডায়াবিটিসের কারণে ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স তৈরি হয়, যার ফলে শরীরে চর্বি ভাঙা ও সঞ্চয়ের প্রক্রিয়ায় ব্যাঘাত ঘটে। এই অবস্থায় লিভারে চর্বি জমে যায় এবং এক সময় তা লিভার সিরোসিস, এমনকি লিভার ক্যান্সারেরও রূপ নিতে পারে।
আরও পড়ুন - ৩০ বছর বয়সে সিংহাসনত্যাগ! মহাবীরের এই কাহিনি আজও বহু জীবনের অনুপ্রেরণা
আমেরিকান লিভার ফাউন্ডেশনের তথ্যমতে, NAFLD আক্রান্তদের মধ্যে ৪০-৭০% এর ডায়াবিটিস থাকে। একটি ক্লিনিক্যাল গবেষণায় দেখা গেছে, টাইপ ২ ডায়াবিটিস রোগীদের মধ্যে ৩০% ব্যাক্তির ফ্যাটি লিভার থেকে লিভার ফাইব্রোসিস বা সিরোসিস হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
ঝুঁকি চিহ্ন ও উপসর্গ
প্রাথমিকভাবে ফ্যাটি লিভারের তেমন উপসর্গ থাকে না। তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ক্লান্তি, পেটের ডান পাশে অস্বস্তি, ওজন হ্রাস ও লিভার এনজাইমের মাত্রা বৃদ্ধি লক্ষ করা যায়। অনেকেই ডায়াবিটিসের চিকিৎসা নিতে গিয়ে রুটিন লিভার ফাংশন টেস্টে সমস্যার কথা জানতে পারেন।
প্রতিরোধ ও সচেতনতা
- রক্তে গ্লুকোজ নিয়ন্ত্রণে রাখা
- ওজন কমানো ও সুষম খাদ্য গ্রহণ
- প্রতিদিন ব্যায়াম করা (কমপক্ষে ৩০ মিনিট)
- লিভার ফাংশন টেস্ট নিয়মিত করা
- চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ গ্রহণ
ডায়াবিটিস থাকলেই যে সরাসরি লিভারের ক্ষতি হবে, তা নয়। তবে সময়মতো নিয়ন্ত্রণ না করলে এটি লিভারের মারাত্মক জটিলতা তৈরি করতে পারে। তাই সুগার নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি লিভারের প্রতি সচেতন দৃষ্টিভঙ্গি ও নিয়মিত পর্যবেক্ষণ অপরিহার্য।
আরও পড়ুন - কাজের চাপে জেরবার, বুঝতে চাইছে না প্রিয়তম মানুষটি? এভাবে কথা বলে দেখতে পারেন
পাঠকদের প্রতি: প্রতিবেদনটি স্বাস্থ্য সংক্রান্ত সাধারণ জ্ঞানের ভিত্তিতে লেখা হয়েছে। এখানে লেখা কথার ভিত্তিতে কোনও পদক্ষেপ না করার অনুরোধ করা হচ্ছে। স্বাস্থ্য নিয়ে যে কোনও প্রশ্ন, যে কোনও সমস্যার সমাধানের জন্য চিকিৎসক বা পেশাদার বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।