শরীরের জন্য চিনি অনেকটা ছদ্মবেশী বিষের সমান। খাবারে চিনি খেতে মন্দ না হলেও বেঁচে থাকার রসদে ক্ষতিই ক্ষতি ডেকে আনে। তাই বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে অনেকেই খাবারে চিনি কমানোর চেষ্টা করেন। বছরের পর বছর ধরে, গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে চিনি স্বাস্থ্যের জন্য, বিশেষ করে হার্টের জন্য কতটা খারাপ হতে পারে। কিন্তু লুন্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সুজান জানজি এবং তার দলের নেতৃত্বে একটি নতুন গবেষণা এই ধারণাটিকেই চ্যালেঞ্জ করেছে।
আরও পড়ুন: (Love Scam: ৬৭ বছর বয়সি বৃদ্ধার 'লাভ স্ক্যাম', অনলাইনে প্রেম করতে গিয়ে খোয়ালেন প্রায় ৪ কোটি টাকা)
তাহলে চিনি কি আমাদের জন্য খারাপ নয়
৭০,০০০ জনকে অনুসরণ করে ২০ বছর ধরে পরিচালিত এই গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে চিনি এবং হার্টের স্বাস্থ্যের মধ্যে সংযোগটি আমরা যতটা ভেবেছিলাম ততটা সহজ নাও হতে পারে। অনেকেই বিশ্বাস করেন যে চিনি কম খাওয়া সবসময়ই ভালো, কিন্তু গবেষণায় দেখা গিয়েছে ভিন্ন কিছু। এটিতে দেখা গিয়েসে যে যারা চিনি থেকে নিজেদের দৈনিক ক্যালোরির ৫-৭ শতাংশ গ্রহণ করেছেন, তাঁদের হার্টের সমস্যা যেমন স্ট্রোক, হার্ট অ্যাটাক, হার্ট ফেইলিওর এবং অনিয়মিত হৃদস্পন্দনের ঝুঁকি কম ছিল। যারা চিনি থেকে নিজেদের ৫ শতাংশের কম ক্যালোরি পান গ্রহণ করেছেন সেই ব্যক্তিদের সঙ্গে তুলনা করে এটি দেখা গিয়েছে।
গবেষণায় আরও দেখা গিয়েছে যে আমরা কতটা চিনি খাই তার চেয়ে চিনি কোথা থেকে আসে তা বেশি গুরুত্বপূর্ণ। সোডার মতো চিনিযুক্ত পানীয় পান করা আমাদের স্বাস্থ্যকে মারাত্মকভাবে প্রভাবিত করতে পারে এবং অনেক রোগের ঝুঁকি বাড়ায়। অন্যদিকে, পেস্ট্রি, আইসক্রিম এবং চকোলেটের মতো কম খাবার খাওয়া হার্টের সমস্যার ক্ষেত্রে বেশি ঝুঁকির সঙ্গে যুক্ত ছিল।
আরও পড়ুন: (Skin Care Tips: হাড় কাঁপানো শীতেও ত্বক হবে মাখনের মতো! রইল স্কিন হাইড্রেশনের সেরা টিপস)
চিনি খাওয়া এবং স্বাস্থ্য সমস্যা
গবেষণা চলাকালীন, ২৫,৭৩৯ জন অন্তত একটি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েছেন। গবেষকরা দেখেছেন যে অতিরিক্ত চিনি খেলে ইস্কেমিক স্ট্রোক এবং অ্যাবডোমিনাল অ্যাওর্টিক অ্যানিউরিজমের মতো সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। এটি দেখায় যে অত্যধিক চিনি হার্টের স্বাস্থ্যের ব্যাপক ক্ষতি করতে পারে।
চিনি কতটা খাওয়ায় উচিত
বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রতিদিন ২৫-৩৭.৫ গ্রাম চিনি খাওয়া হার্টের জন্য নিরাপদ। তবে আমেরিকানদের মতো দৈনিক ৭১ গ্রাম চিনি খাবেন না।
উল্লেখ্য, গবেষকদের মতে, মিষ্টিতে উপস্থিত চিনি শরীরে ধীরে ধীরে হজম হয়। এ কারণে শরীরে হঠাৎ করে চিনির মাত্রা না বাড়ায় হার্টের উপর চাপও পড়ে না। কিন্তু চিনিযুক্ত পানীয়তে উপস্থিত চিনি দ্রুত হজম হয়ে গিয়ে হার্টের সমস্যা অনেকাংশে বাড়িয়ে দিতে পারে।