বর্ষাকালে চোখের পাতার সিস্ট, যা আঞ্জনি নামেও পরিচিত, অনেকে আবার 'চোখ ওঠা' বলে থাকেন, এটি আসলে এখন একটি সাধারণ সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। সবসময় চোখে ময়লা জমে থাকা বা অপরিষ্কার জল দিয়ে চোখ ধোয়ার কারণে এই সিস্ট হয়, এমনটা নয়। চক্ষু বিশেষজ্ঞদের মতে, চোখের কোনও একটি গ্রন্থিতে তেল জমা হলে আঞ্জনি হয়, যার ফলে এটি ব্লক হয়ে যায়। এর ফলে ফোলাভাব, অস্বস্তি এবং অন্যান্য লক্ষণ দেখা দেয়।
আরও পড়ুন: (Bayeux Tapestry Museum: সেপ্টেম্বরেই গায়েব হয়ে যাবে হাজার বছর প্রাচীন এই শিল্প! নেপথ্যে কী কারণ?)
ফোলাভাবের পাশাপাশি, কিছুজনের চোখে ব্যথা, পুঁজ, এমনকি রক্তপাতও হতে পারে। সময়ে যদি চিকিৎসা না করা হয়, তাহলে এই অবস্থা গুরুতর হয়ে উঠতে পারে এবং চোখের ক্ষতি হতে পারে। তবে, ডাক্তাররা পরামর্শ দেন যে 'চোখ ওঠা' সাধারণত শক্তিশালী ওষুধ বা চোখের ড্রপের প্রয়োজন ছাড়াই চিকিৎসা করা যেতে পারে। সহজ ঘরোয়া প্রতিকারগুলি এই অবস্থা নিরাময়ে সহায়তা করতে পারে।
ঘরোয়া ভাবে কি 'চোখ ওঠা' নিরাময় হবে
আপনিও যদিআঞ্জনির সমস্যায় ভুগতে থাকেন, তাহলে উপশম পেতে আপনি বেশ কিছু ঘরোয়া প্রতিকার করে দেখতে পারেন:
১. চোখে কম্প্রেস দিন
অঞ্জনির চিকিৎসার সবচেয়ে সহজ এবং কার্যকর উপায়গুলির মধ্যে একটি হল চোখে কম্প্রেস করা। এটি করার জন্য, একটি প্যান বা ছোট পাত্র গরম করুন এবং একটি পরিষ্কার, শুকনো কাপড় দিয়ে এর তাপ নিন। তারপর, এই কাপড়টি আপনার চোখের উপর কয়েক মিনিটের জন্য রাখুন। দিনে কয়েকবার এটি করলে ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়া মারা যায় এবং ব্লক হওয়া গ্রন্থিগুলিতে অতিরিক্ত তেল শুকিয়ে যায়। এটি তাৎক্ষণিক উপশম প্রদান করতে পারে এবং ফোলাভাব কমাতে পারে।
২. পেয়ারা পাতা
পেয়ারা পাতায় প্রাকৃতিক অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা চোখের সংক্রমণের চিকিৎসায় সাহায্য করতে পারে। এগুলি ব্যবহার করার জন্য, পেয়ারা পাতাগুলিকে একটি শুকনো প্যানে গরম করুন, তারপর একটি নরম কাপড়ে মুড়িয়ে রাখুন। কাপড়টি আপনার চোখের উপর কয়েক মিনিটের জন্য রেখে দিন। এই প্রতিকার ব্যাকটেরিয়া মেরে ফেলতে এবং আক্রান্ত স্থানে প্রদাহ কমাতে সাহায্য করতে পারে। পেয়ারা পাতার নিয়মিত ব্যবহার ভবিষ্যতে চোখের ব্যথাও প্রতিরোধ করতে পারে।
৩. ক্যাস্টর অয়েল
চোখের ফোলাভাব দূর করার জন্য ক্যাস্টর অয়েল আরও একটি কার্যকর ঘরোয়া প্রতিকার। এর প্রদাহ-বিরোধী বৈশিষ্ট্য রয়েছে এবং চোখের ব্যথা এবং ফোলাভাব কমাতে সাহায্য করে। এটি ব্যবহার করার জন্য, প্রথমে আক্রান্ত চোখে প্রায় ১০ মিনিটের জন্য গরম ভাপ লাগান। তারপর, একটি তুলোর বল নিন, এটি ক্যাস্টর অয়েলে ভিজিয়ে রাখুন এবং আলতো করে আপনার চোখের পাতার উপর রাখুন। এটি ব্যথা প্রশমিত করতে এবং নিরাময় করতে সাহায্য করবে।
এই ক্ষেত্রে অবশ্যই ডাক্তার দেখান
আঞ্জনি সবেমাত্র হালকা দেখা দিলে, এই ঘরোয়া প্রতিকারগুলি কার্যকর হতে পারে। কিন্তু যদি আপনার ঘন ঘন চোখ ফুলে যায় বা গুরুতর লক্ষণ অনুভব করেন, তবে ডাক্তার দেখানো গুরুত্বপূর্ণ। আপনার বর্তমান অবস্থার অন্তর্নিহিত কারণ খুঁজে নেওয়া জরুরি। এছাড়াও আপনার অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যা, যেমন রক্তে শর্করার উচ্চ মাত্রা থাকলেও চোখের এই সমস্যা হতে পারে। তাই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।