একজন বাঙালিকে বাংলা থেকে দূরে নিয়ে যাওয়া যেতে পার, কিন্তু বাঙালির মন থেকে দুর্গাপুজোকে দূরে নিয়ে যেতে পারবেন না। এই কারণেই প্রায় ২৬ বছর আগে উচ্চশিক্ষা ও কর্মজীবনের সন্ধানে ঘর ছেড়ে আসা আটজন ডাক্তার লন্ডনে একসঙ্গে এসেছিলেন। গড়ে তুলেছিলেন আজকের বেঙ্গল কালচারাল অ্যান্ড সোশ্যাল ক্লাব (BCSC)। যার একমাত্র উদ্দেশ্য ছিল দুর্গাপুজোকে ঠিক বাংলার মতোই উদযাপন করা। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আরও মানুষ এসে তাঁদের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন। এখন ১৫ জন সক্রিয় সদস্য এবং তাঁদের পরিবার এই ঐতিহ্যকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার দায়িত্ব নিয়েছেন।
আরও পড়ুন - পুজোয় পাতে মাংসের স্পেশাল পদ চাই-ই চাই? রইল ঠাকুরবাড়ি স্পেশাল পোস্ত মাটন কষা
নিরামিষ ভোগ আর ২০০০-র বেশি মানুষের সমাগম
BCSC ঐতিহ্যগতভাবে দুর্গাপুজো উদযাপন করে। বছরের পঞ্জিকা অনুসারে নির্দিষ্ট দিনগুলিতে পুজো হয় এখানে। বিধিসমূহ (আচার-অনুষ্ঠান) নির্ঘণ্ট (শুভ সময়) অনুযায়ী কঠোরভাবে পালন করা হয়। ভোগ সম্পূর্ণভাবে নিরামিষ রাখা হয়। কোনও পেঁয়াজ বা রসুন ব্যবহার করা হয় না। পুজো চলাকালীন ২০০০-এরও বেশি মানুষের সমাগম হয়। এই সংখ্যা প্রতি বছরই বাড়ছে। শুধুমাত্র বাঙালিরাই এর সঙ্গে যুক্ত নন, অন্যান্য সম্প্রদায় এবং ধর্মের মানুষও এই উৎসবে সামিল হন।
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন
পুজোর ৪-৫ দিন ধরে আমাদের একটি সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন থাকে। সেখানে কেবল বাংলার সেরা সংস্কৃতিই নয়, ভারতের অন্যান্য অঞ্চলের বিভিন্ন ঐতিহ্যকেও তুলে ধরা হয়। সেখানে থাকে সুদূর অতীতের মন ছুঁয়ে যাওয়া গান, কবির গুরু ও নজরুলের প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি, ভরতনাট্যমের ঐতিহ্যবাহী পরিবেশনা, এবং বাঙালি নাটক—সবকিছুরই আয়োজন।
আরও পড়ুন - পুজোর দিনে মাংস রাঁধুন ঠাকুরবাড়ির স্টাইলে! রইল মাটন বিরিঞ্চির রেসিপি
যোগ দেয় পরবর্তী প্রজন্ম
পরবর্তী প্রজন্মকেও সক্রিয়ভাবে পুজোর কার্যক্রমে যুক্ত হতে উৎসাহিত করা হয়। খাবারের পদ নির্বাচন থেকে বিভিন্ন গণমাধ্যম প্ল্যাটফর্মে পুজোকে তুলে ধরা এবং সাংস্কৃতিক কার্যক্রমে অংশগ্রহণ— নানা দায়িত্ব গ্রহণ করে তাঁরা।