অষ্টমীর সন্ধ্যায় কলকাতার রাজপথ ছিল যেন জনসমুদ্র। শহরের অন্যতম আকর্ষণীয় পুজো ত্রিধারা সম্মিলনীতে ভিড়ের চাপ এতটাই বেড়ে যায় যে শেষমেশ নিরাপত্তার কারণে ‘অঘোরী নৃত্যে’র লাইভ অনুষ্ঠান থামিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেয় কলকাতা পুলিশ।
আরও পড়ুন: বালুরঘাটে পুজোর আবহে রাজনৈতিক অশান্তি, মঞ্চের জায়গা নিয়ে BJP-TMC দ্বন্দ্ব
বিধায়ক দেবাশিস কুমারের পুজো হিসেবে পরিচিত ত্রিধারা সম্মিলনীতে এ বছর বিশেষ আয়োজন ছিল এই লাইভ শো। মহাদেবের শান্ত ও রুদ্ররূপ নৃত্যের মাধ্যমে ফুটিয়ে তোলার পরিকল্পনা ছিল উদ্যোক্তাদের। সেই উপস্থাপনা দেখতে উপচে পড়েছিল দর্শনার্থীদের ভিড়। তবে অতি ভিড়ের চাপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে আশঙ্কা করে পুলিশের হস্তক্ষেপে মাঝপথেই বন্ধ হয়ে যায় অনুষ্ঠান। পুজোর দিনগুলিতে ভিড় সামলাতে প্রশাসনের যে বেগ পেতে হচ্ছে, তার একাধিক উদাহরণ মিলেছে এবারের উৎসবে। মহালয়ার পর থেকেই শুরু হয়েছে প্যান্ডেল হপিং, আর অষ্টমীতে শহরের রাস্তায় যতদূর চোখ যায় মানুষে মানুষে ঠাসা। একাধিক জনপ্রিয় মণ্ডপে দর্শনার্থীদের সামলাতে কার্যত নাকাল হতে হচ্ছে নিরাপত্তাকর্মীদের।
এর আগেও পুজোয় লাইভ অনুষ্ঠান বা বিশেষ আকর্ষণ নিয়ে আপত্তি জানিয়েছিল কলকাতা পুলিশ। সন্তোষ মিত্র স্কোয়ারের আলো সাউন্ড শো নিয়েও একই রকম নির্দেশ দিয়েছিল তারা। পুজো কমিটিকে চিঠি দিয়ে জানানো হয়েছিল, শো বন্ধ করতে হবে। উদ্যোক্তা সজল ঘোষ তখন বলেছিলেন, প্রয়োজনে আগেভাগেই বিসর্জন দিতেও তাঁরা রাজি, কারণ মানুষের নিরাপত্তা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।
শুধু তাই নয়, পঞ্চমীর দিন মহম্মদ আলি পার্কে দর্শনার্থীদের প্রবেশই নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। নিরাপত্তার স্বার্থে মণ্ডপের আলোও নিভিয়ে দেওয়া হয়। সেই প্রেক্ষাপটেই অষ্টমীতে আরও একবার বড় শো বন্ধ করে দিতে বাধ্য হলো পুলিশ। কলকাতার দুর্গাপুজো এখন শুধু আঞ্চলিক উৎসব নয়, আন্তর্জাতিক স্বীকৃত প্রাপ্ত এক মহাউৎসব। কিন্তু উৎসবের আনন্দে যাতে দুর্ঘটনার ছায়া না পড়ে, সেই কারণেই কড়া পদক্ষেপ নিতে হচ্ছে প্রশাসনকে। আর অষ্টমীর রাতে ত্রিধারা সম্মিলনীর ঘটনাই আবারও মনে করিয়ে দিল জনজোয়ার সামলানোই এই মুহূর্তে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।