কদিন ধরেই সোশ্যাল মিডিয়া তোলপাড় একটি খবরে। তা হল সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সার সোহিনী পালের গর্ভস্থ সন্তানের মৃত্যু। প্রেগন্যান্সির একদম শেষ পর্যায়ে এসে মারা যায় গর্ভের সন্তান। পরিবারের তরফে অভিযোগ তোলা হয় ডাক্তারের দিকে। এদিকে, ডাক্তার জানান একাধিক সমস্যা ছিল সোহিনীর শরীরে।
সোহিনীর চিকিৎসাধীন ডাক্তার শিবেন্দ্রনাথ দাস বা এসএন দাস একটি ভিডিয়ো করে জানান যে, তিনি সিজার করে মৃত বাচ্চা প্রসব করার পর বুঝতে পারেন সোহিনীর 'কনসিল্ড অ্যাক্সিডেন্টাল হেমারেজ' হয়েছিল। যার অর্থ, পেটের ভিতরে রক্তপাত। জানা যায়, এটি সাধারণত উচ্চ রক্তচাপ যাঁদের, তাঁদেরই বেশি হয় এবং যাঁরা তুলনামূলক বয়সে বড় বা বেশি কাজকর্ম করেন, লাফালাফি করেন, তাঁদের হয়।
আপাতত সোশ্যাল মিডিয়া দুটো দলে বিভক্ত। এমনকী, অনেকে ‘বেশ হয়েছে, বেশি আদিখ্যেতা’, ‘নজর লেগেছে’, ‘জগন্নাথ ঠাকুর পাপ দিয়েছে’-র মতো নানা কুরুচিকর মন্তব্য করে চলেছেন। সোহিনীর ছবি-ভিডিয়ো ব্যবহার করে, তা দিয়ে নিজেদের কনটেন্ট বানিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় সমবেদনা পাওয়ার চেষ্টা করে চলেছে আরেকাংশ। অবশ্য অনেকেই এই বিপর্যয়ে পাশে দাঁড়িয়েছেন দম্পতির।
এবার ঘটনার পাঁচদিন পর মুখ খুললেন সোহিনী ও তাঁর স্বামী অনির্বাণ দে রায়। একটি যৌথ বিবৃতি দেন তাঁরা। যেখানে লেখা, ‘২২ অগস্ট আমাদের জীবনে যে বিপর্যয় নেমে এসেছে, তাকে কেন্দ্র করে সোশ্যাল মিডিয়া জুড়ে যা চলছে, তা আমাদের কল্পনার অতীত। আমরা বিভিন্ন মানুষের জল্পনার এবং সেই সংক্রান্ত আলোচনায় বিধ্বস্ত। এই বিষয়ে নানান ভিডিয়ো, পোস্ট, ডাক্তারবাবুর ভিডিয়োটি ও তার কমেন্ট সেকশন আমাদের দুজনকে এই শোকের সময়ে দুর্বলতর করে তুলছে। আমরা আমাদের পক্ষ থেকে কোনো অফিসিয়াল বা আনঅফিসিয়াল বক্তব্য রাখিনি। এই পাঁচ দিনে আমাদের পক্ষে তা ভাবার পরিসরই ছিল না। আমরা চাইনি এখনই এই বিষয়কে কেন্দ্র করে কোনো কথা হোক, যা আমাদের মানসিক অবস্থাকে আরো বিঘ্নিত করে।’
সোহিনী আরও লেখেন, ‘আমরা নিশ্চয়ই আমাদের সঙ্গে হওয়া সমস্ত ঘটনার বিবরণ আপনাদের সামনে রাখব, সাক্ষ্য-প্রমাণ নিয়েই দাঁড়াবো আপনাদের সামনে। কিন্তু এই মুহুর্তে আমরা মানসিক ও শারীরিক ভাবে অসমর্থ আপনাদের প্রশ্ন, ট্রোল, লড়াই এগুলোর উত্তর দিতে। আপনারা অনুগ্রহ করে আমাদের সময় দিন; সন্তান হারানোর যন্ত্রণাটুকু আমাদের পরিবারকে সামলে ওঠার সুযোগ দিন। এই শোকের সময়ে এইটুকু সহমর্মিতা ও সাহায্যের আশা করছি আপনাদের থেকে। আশা রাখি, এই শোকবার্তা আমাদের জীবনে ঘটে যাওয়া অকল্পনীয় , আকস্মিক বিপদের সময়টুকুতে আপনাদের বিরত রাখবে এই সংক্রান্ত পোস্ট সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দিতে।’