'দ্য নেমসেক’ -এর সেটে ইরফানের বাংলা শুনে অবাক হয়েছিলেন পরিচালক মীরা নায়ার! পরিচালকের মতে ঝুম্পা লাহিড়ীর বাবার পরিবর্তে ইরফান তাঁদের সেটে থাকা এক বাঙালি ক্যাটারারের মতো করে কথা বলা শুরু করেন।
'দ্য নেমসেক’ -এর সেটে ইরফানের বাংলা শুনে অবাক হয়েছিলেন পরিচালক মীরা নায়ার!
পরিচালক মীরা নায়ারের সঙ্গে অভিনেতা ইরফান খানের প্রথম দেখা হয় দিল্লির ন্যাশনাল স্কুল অফ ড্রামার বেসমেন্টে। সেখানে তিনি তাঁর ১৯৮৮ সালের ছবি ‘সালাম বোম্বে!’- তে একটি মাত্র দৃশ্যে অভিনয়ের জন্য কাস্ট করেছিলেন ইরফানকে। আর তখনই তিনি জানিয়েছিলেন যে, তিনি ইরফানের যোগ্য কোনও চরিত্রে তাঁকে নিয়ে কাজ করবেন। পরিচালক নিজের সেই কথা রাখেন। প্রায় ১৫ বছর পর ২০০৬ সালে মীরা নায়ার পরিচালিত ঝুম্পা লাহিড়ীর জীবনীমূলক ছবি ‘দ্য নেমসেক’-এ ‘অশোক গঙ্গোপাধ্যায়’-এর ভূমিকায় কাজ করেন ইরফান।
ইরফান খান ২০০৩ সালে ‘মকবুল’ ও 'হাসিল' ছবিতে কাজ করেছেন। আর তারপরই অভিনেতাকে দেখা যায় ‘দ্য নেমসেক’ -এ। এই ছবির কাজের জন্য ইরফান প্রথম মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে যান। মীরা নায়ার অভিনেতার চোখে 'আমেরিকাকে নতুন করে ধরার চেষ্টা করেন।
শনিবার ইন্ডিয়া হ্যাবিট্যাট সেন্টারের সামনভে ফেস্টিভ্যালের এক অধিবেশনে মীরা নায়ার বলেন, ‘আমার এই বিষয়টা সবচেয়ে বেশি ভালো লেগেছিল যে, ইরফান ওই ছবির আগে কখনওই আমেরিকায় যাননি। আমি অনুমান করেছিলাম ও যখন প্রথম আমেরিকায় যাবেন তখন ওঁর চোখে প্রথম আমেরিকা যাওয়ার যে বিস্ময় সেটা ধরা পড়বে আর সেটা ওঁকে আর অভিনয় করে ফুটিয়ে তুলতে হবে না। ফলে ওঁর অভিনয় তখন আর অভিনয় বলে মনে হবে না, অনেক স্বাভাবিক দেখাবে। তবে ইরফান আমাদের মূল্যবান সম্পদ।’
‘দ্য নেমসেক’- এ ইরফান খান এবং টাবু 'অশোক গঙ্গোপাধ্যায়' এবং ‘অসীমা গঙ্গোপাধ্যায়ের’ ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন। পশ্চিমবঙ্গ থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রথম কোনও বাঙালি যাচ্ছেন এমন ভূমিকায়।
মীরা নায়ার ইরফান খান এবং টাবুকে নিউইয়র্কে ঝুম্পা লাহিড়ীর বাবা-মায়ের বাড়িতে রাখার পরিকল্পনা করেছিলেন। বিশেষ করে অভিনেতারা যাতে বাংলা উচ্চারণ ভালো ভাবে শিখতে পারেন।
এই প্রসঙ্গে পরিচালক বলেন, ‘ইরফান ঝুম্পার বাবা মায়ের সঙ্গে থাকতেন না, তিনি একটি হোটেলে টাইমস স্কোয়ারে থাকতেন। আর সেটা ছিল আমেরিকার একটি পাগল করা জায়গা, নিয়ন আলো, পাগলামি, রাস্তায় পাব কী নেই সেখানে। কিন্তু আমি ওঁকে প্রথম দিনেই ঝুম্পার বাবা- মায়ের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলাম, প্রথমত তাঁদের সঙ্গে দেখা করার জন্য, দ্বিতীয়ত আমি খুব একটা ভালো বাংলা জানতাম না, কিন্তু ছবিতে সেটার প্রয়োজন ছিল।’