ফরাসি পরিচালক তথা চিত্রনাট্যকার ক্রিস্টোফ রুজিয়ার বিরুদ্ধে এক শিশু শিল্পীকে যৌন হেনস্থার অভিযোগ উঠেছিল। সেই অভিযোগ কোর্টে সত্যিও প্রমাণিত হয়েছে। পরিচালককে দেওয়া হয়েছে সাজাও। তারপরও জেলে না গিয়ে বুক ফুলিয়ে বাইরেই ঘুরে বেড়াচ্ছেন তিনি! ব্যাপারটা কী?
কী ঘটেছে?
সোমবার একটি ফরাসি কোর্টের তরফে ফরাসি পরিচালক ক্রিস্টোফ রুজিয়াকে আদেশ দেন একটি ইলেকট্রনিক ব্রেসলেট পরে ঘোরার জন্য। এটাই তাঁর শাস্তি। দুই বছর এই ব্রেসলেট পরে তাঁকে ঘুরতে হবে। কীসের জন্য? একজন অভিনেত্রীকে শিশু শিল্পী থাকাকালীন যৌন হেনস্থা করার জন্য। তাঁকে জেলে যেতে হবে না। ফ্রান্সের মি টু মুভমেন্টের অন্যতম অভিযুক্ত ছিলেন তিনি।
সেই বর্তমানে ৩৫ বছর বয়সী অভিনেত্রী অভিযোগ করেছিলেন যে ২০০০ সালের গোড়ার দিকে যখন তাঁর বয়স ১২ থেকে ১৩ বছর আর পরিচালকের ৩০ এর কোঠায় বয়স তখন তাঁকে যৌন হেনস্থা করেছিলেন। যদিও পরিচালক জানান যে এই সমস্ত অভিযোগ মিথ্যে।
বিচারপতির তরফে বলা হয় যে কোর্ট তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করেছে। তাঁর ক্ষমতা এবং পজিশনের ভুল ব্যবহার করে তিনি ওই মেয়েটির থেকে সুবিধা নিয়েছেন। অভিযোগকারিণী এই রায় শুনে আনন্দিত হন। কিন্তু যে শাস্তি শেষ পর্যন্ত ঘোষণা করা হল সেটায় তিনি মোটেই খুশি হতে পারলেন না।
এই বিষয়ে জানিয়ে রাখা ভালো যে অভিনেত্রী এই অভিযোগ এনেছেন ক্রিস্টোফ রুজিয়ার বিরুদ্ধে তিনি ২০১৯ সালে অভিনয় জগত ত্যাগ করেন। কিন্তু তার আগে স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিয়ে যান যে ফরাসি ফিল্ম জগৎ যৌন হেনস্থা সম্পর্কে একেবারেই অন্ধ হয়ে আছে।
যে সিনেমার সময় সেই অভিনেত্রী যৌন হেনস্থার শিকার হয়েছিলেন সেখানে একাধিক যৌন দৃশ্য ছিল। শুধু তাই নয়, সেই অভিনেত্রীর নগ্ন শরীরের শট নেওয়াও হয়েছিল। এই ছবির শ্যুটিংয়ের সময়ই পরিচালক তাঁর থাই, স্তন সহ অন্যান্য জায়গায় হাত দিতেন বলেই অভিযোগ করেছেন।
প্যারিসের কোর্টের তরফে ক্রিস্টোফ রুজিয়াকে ৪ বছরের সাজা দেওয়া হয়। এর মধ্যে ২ বছরের সাজা সাসপেন্ড করে দেওয়া হয়েছে। আর বাকি দুই বছর তাঁকে জেলে থাকার বদলে ওই ব্রেসলেট পরে ঘুরতে হবে। এছাড়া অভিযোগকারিণীকে ১৫০০০ ইউরো দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ক্ষতিপূরণ হিসেবে। এবং আরও ২০ হাজার ইউরো সেই অভিনেত্রীর সাইকোলজিক্যাল থেরাপি করতে যা লেগেছে সেই বাবদ দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে ক্রিস্টোফ রুজিয়া জানিয়েছেন তিনি কখনও ওই অভিনেত্রীর প্রতি আকর্ষিত ছিলেন না। কিন্তু ওই ছবির পর তাঁকে আর কোনও ছবিতে না নেওয়ায় তিনি রাগে নাকি এভাবে বদলা নিলেন।