এবার বড় পর্দায় ‘তারানাথ তান্ত্রিক’! তার সঙ্গে আবার জুড়ে যাচ্ছে রবিঠাকুরের ‘মণিহারা’, সঙ্গে থাকবে মনোজ সেনের 'শিকার'ও! কারা পর্দায় এই অসাধ্য সাধন করবেন জানেন? কাকলি ঘোষ ও অভিনব মুখোপাধ্যায়, আসছে তাঁদের ছবি ‘ভূতপূর্ব’। এই ছবিতে ষাটের দশকের শেষ ভাগের সময়কালকে দেখানো হবে।
এর আগে সত্যজিত রায় বড় পর্দায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘মণিহারা’ গল্পটি এনেছেন। অন্যদিকে, বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘তারানাথ তান্ত্রিক’ও ছোট পর্দায় ও সিরিজ আকারে দর্শকরা দেখে ছিলেন। এবার কাকলি ঘোষ ও অভিনব মুখোপাধ্যায় জুড়েছেন মনোজ সেনের ‘শিকার’ গল্পটিকেও।
আরও পড়ুন: 'আমি নীতবর', দিলীপের বিয়ের দিনে বললেন মীর! শুনতে হল ‘মুর্শিদাবাদ নিয়ে চুপ কেন?’
ছবিতে দেখানো হবে বিভূতিভূষণের বাড়িতে বৃষ্টিমুখর সন্ধ্যায় দুই ব্যক্তি আসেন। যাঁরা নিজেদের পরিচয় দেন ‘নীলকন্ঠ’ ও ‘শশীধর’ নামে। তিনজনে মিলে শুরু হয় আড্ডা। এই আড্ডায় নীলকন্ঠ, বিভূতিভূষণ ও শশীধর আলাদা আলাদা তিনটি কাহিনী শোনায়।নীলকন্ঠ, ‘ফনিভূষণ সাহা’ এবং তার স্ত্রী ‘মণিমালিকা’র গল্প বলে।
বনেদি ব্যবসায়ী পরিবারের শেষ বংশধর ফনীভূষণ সাহা। ফনীভূষণ ছিল প্রেমিক এবং স্ত্রৈন আর মণিমালিকা ছিল ভীষণ স্বার্থপর, গয়নার প্রতি ছিল তার অসীম লালসা, স্বামীর প্রতি ছিল না তার একটুও ভালোবাসা। মণিমালিকার গয়নার প্রতি এই অদম্য আকর্ষণ তার আত্মাকে মৃত্যুর পরেও রেখেছিল অতৃপ্ত এবং ফণীভূষণের মণির প্রতি এক অসহায় প্রেম ও অমোঘ আকর্ষণই ছিল তার মৃত্যুর কারণ। এরপর বিভূতিভূষণ বলে তার এক অভিজ্ঞতার কথা।
আরও পড়ুন: ‘জয়া বচ্চন জুনিয়র’, পাপারাৎজির সঙ্গে কাজলের আচরণে চটলেন নেটিজেনরা!
শুরু হয় ‘তারানাথ তান্ত্রিক’-এর গল্প। এক সাধুর ভবিষ্যৎবাণী অনুযায়ী স্বপ্নে ইশারা পাওয়ার পর গৃহত্যাগ করে তারানাথ পৌঁছেছিল বীরভূমের এক গ্রামে। সেখানে দেখা হয় মাতু পাগলীর সঙ্গে। সেই পাগলীর কাছ থেকে দীক্ষা নেবার বাসনায় এক অনন্য অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে যায় তারানাথ, কিন্তু ভোগ ও ত্যাগের মাঝে থাকায় সাধনার আকাঙ্ক্ষা তারানাথের অতৃপ্ত থেকে যায়।
এরপর শশীধর বলতে শুরু করে পূর্ণেন্দুর আখ্যান ‘শিকার’। ইন্দো চীনা যুদ্ধের পর শহরে চোরাচালানকারীদের রমরমা শুরু হয়। এই ব্যবসার অন্যতম ব্যবসায়ী নটবর দত্ত। তার অধীনে কাজ করত পূর্ণেন্দু ভট্টাচার্য। পূর্ণেন্দু ছিল সুদর্শন ও উচ্চশিক্ষিত তবে যে কোনও অপরাধমূলক কাজে ছিল সিদ্ধহস্ত। নটবর দত্ত পূর্ণেন্দুকে একজন সুন্দরী বিধবা 'তিলোত্তমা'কে জপিয়ে তাদের বনেদী বাড়ির সিন্দুক থেকে এক ঠাকুরের মূর্তিতে বসানো বহুমূল্যের রত্ন চুরি করার কাজ দেয়। পূর্ণেন্দুর আগেও একজন বাহুবলীকে পাঠিয়েছিল নটবর দত্ত, কিন্তু সে কাজটা শেষ করতে ব্যর্থ হয় এবং তার রহস্যজনক ভাবে মৃত্যু ঘটে। পূর্ণেন্দু সমস্ত রকম প্রস্তুতি নিয়ে সেই কাজে নামে এবং ক্রমে সফল হতে থাকে তবে শেষ পর্যায়ে এসে পূর্ণেন্দু যে পরিণতির সম্মুখীন হয় সেই পরিণতির কথা ব্যক্ত করার মধ্য দিয়ে শশীধরের গল্প শেষ হয়। তৃতীয় গল্প শেষ হওয়ার মধ্য দিয়ে রাত্রিও শেষ হয় এবং তিনজনের আড্ডার সমাপ্তি হয়। তবে এই তিনটি কাহিনী যেভাবে এক সূত্রে গাঁথা সেটা গল্পের অন্তিম পর্যায়ে প্রকাশ্যে আসে। কী সেই সূত্র? তা জানতে গেলে অপেক্ষা করতে হবে ছবি মুক্তির।
আজ প্রকাশ্যে এসেছে ছবির প্রথম লুক। ছবিতে রূপাঞ্জনা মিত্রকে দেখা যাবে 'মাতু পাগলী'র ভূমিকায়, 'তারানাথ' সুহোত্র মুখোপাধ্যায়। অন্যদিকে, ছবিতে রবিঠাকুরের মণিমালিকা অমৃতা চট্টোপাধ্যায় ‘ফনিভূষণ সাহা’র ভূমিকায় করেছেন সত্যম ভট্টাচাৰ্য। 'শিকার’-এর তিলোত্তমা' সন্দীপ্তা সেন, ‘পূর্ণেন্দু’ সপ্তর্ষি মৌলিক। ছবিটি প্রযোজনার দায়িত্বে রয়েছে ইন্দোশ্রী।