টলিউডের আদরের 'টিটোদা' তিনি। বাংলা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে হাফ সেঞ্চুরি পার করে ফেলেছেন দীপঙ্কর দে। আজ, ৫ই জুলাই ৮০-তে পা দিলেন বর্ষীয়ান অভিনেতা। ১৯৪৪ সালের এই দিনেতেই জামসেদপুরে জন্ম অভিনেতা দীপঙ্কর দে-র। অনেকেই হয়ত জানেন না, যে-ধাত্রীমার হাত ধরে পৃথিবীর আলো দেখেন অভিনেতা, তিনি বিপ্লবী বিনয় বসুর মা।
টলিউডের জন্য নিজেকে উজাড় করে দিয়েছেন দীপঙ্কর দে। তবে সেভাবে পরিচালকরা তাঁর সদ্বব্যবহার করতে পারেননি, এমন আক্ষেপ করে থাকেন তাঁর ভক্তরা। এই বয়সেও থেমে নেই তিনি, কাজের মধ্যেই ডুবে আছেন। জন্মদিনে স্ত্রী দোলন রায় আদুরে শুভেচ্ছা জানান স্বামীকে। ফেসবুকে লেখেন, ‘ঈশ্বরের কাছে, শিবের কাছে, গুরুর কাছে একটাই প্রার্থনা তুমি সুস্থ থেকো। দীর্ঘায়ু হও, লাভ ইউ টিটো, শুভ জন্মদিন’।
জন্মদিনেও কর্মব্যস্ত অভিনেতা। আজকের দিনে কী বিশেষ পরিকল্পনা দোলনের? অভিনেত্রী জানান, শ্যুটিং-এর ব্যস্ততার জন্য সেভাবে জন্মদিন সেলিব্রেট করা হচ্ছে না। এমনিতে মন্দিরে পুজো দিয়ে, দুঃস্থ বাচ্চাদের খাইয়ে জন্মদিন পালন করেন দীপঙ্কর বাবু। জন্মদিনের সকালে স্বামীর জন্য লুচি আর পায়েস রান্না করেছেন দোলন। এরপর শ্যুটিংয়ের কাজে রওনা দেন।
পাটলিগঞ্জে পুতুলনাচ ছবির শ্যুটিংয়েই জন্মদিন কাটবে দীপঙ্কর দে-র। দোলনও ব্যস্ত শ্যুটিং নিয়ে। তবে রাতে স্বামীর জন্য পছন্দের পদ রাঁধবেন দোলন। বাকি সেলিব্রেশন তোলা থাকছে রবিবারের জন্য। বরের জন্মদিনে কী বিশেষ উপহার দিলেন দোলন? অভিনেত্রী জানিয়েছেন, বই আর পেন সবচেয়ে পছন্দের অভিনেতার। তবে এবার তা দেবেন না। বরং নতুন গাড়ি কিনেছেন দুজনে। গাড়ি সাজানোর জন্য কিছু জিনিস দেবেন।
আশি-তে পা দিলেন দীপঙ্কর দে। বয়সে অভিনেতার ছোট মেয়ের চেয়েও বছর খানেকের ছোট দোলন। অভিনেত্রীর জন্ম, ১৯৭০ সালের ২২শে ফেব্রুয়ারি। এই বছরের গোড়ায় ৫৪-তে পা দিয়েছেন তিনি। স্বামীর চেয়ে বয়সে ২৬ বছরের ছোট তিনি।
দোলনের সঙ্গে যখন দীপঙ্করের প্রেম শুরু তখনও ডিভোর্স হয়নি অভিনেতার। দীপঙ্করের বিবাহিত তকমা, দুই সন্তানের বাবা হওয়া কিংবা বয়সের বিস্তর ফারাক বাধা হয়নি এই সম্পর্কে। দুজনের প্রথম আলাপ নিয়ে দোলন জানান, ‘ওর সঙ্গে আমার প্রথম আলাপ অনেক আগে, তখন ভাবিনি এই আলাপটা প্রলাপ হয়ে যাবে। একটা নাটক করতে গিয়ে দেখা হয়েছিল। রবি ঘোষের পরিচালনায় ছদ্মবেশী নাটকে টিটোটা হিরো ছিল, আর শ্রীলা মজুমদার হিরোইন ছিলেন। আমিও ছিলাম। ওখানেই প্রথম আলাপ, আর এই আলাপ প্রলাপে পরিণত হয়েছে ১৯৯৭-এ। আর এই প্রলাপটা চলবে সারাজীবন’।
১৯৯৭ সালে মন্দিরে গোপনে বিয়ে করেন দুজনে। তবে এই বিয়ে বৈধ নয়। কারণ তখনও ডিভোর্স হয়নি তাঁর। দীর্ঘদিন লিভ ইনের পর ২০২০ সালে কাগজে কলমে বিয়ে করেন দুজনে। শারীরিক সম্পর্কে কম্প্রোমাইজ করতে হয়েছে দোলনকে, সেই নিয়ে আক্ষেপ নেই। দোলন বলেছেন, ‘একটা সময় পর্যন্ত সব ঠিকঠাকই ছিল। তারপর যা হয়, মেয়েরাই সব সময় কম্প্রোমাইজ করে। না হলে তো একটা অশান্তির পরিবেশ সৃষ্টি হয়। ও তো আমার জীবনে প্রায় প্রথমই। আমি স্যাচুরেটেড হয়ে গিয়েছি। ও হয়তো শেষ বয়সে ওর পারা বা না পারা নিয়ে স্যাচুরেটেড হিয়ে গিয়েছে। দোলন রায়ের সংযোজন, কিছুটা মানিয়ে নেওয়া। কারণ মানুষটার ভালবাসা এত বেশি, আমার ভালো লাগা খারাপ লাগার দিকে এত খেয়াল রাখে যে তখন এগুলো আর খুব একটা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠেনি।’