ভারতের উত্তর-পূর্বের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ রাজ্য অসমে মোট ১৪টি লোকসভা আসন রয়েছে, তার মধ্যে করিমগঞ্জ লোকসভা আসনটি তফশিলি জাতির প্রার্থীদের জন্য সংরক্ষিত। এটি অসমের একেবারে দক্ষিণ প্রান্তে অবস্থিত, ১৯৫২ সাল থেকেই এই আসনে নির্বাচন হয়ে আসছে। ২০১৯ সালের পরিসংখ্যান বলছে এই আসনটিতে ১৩ লক্ষ ৩৮ হাজার ৫ জন মানুষ ভোটদানে অংশগ্রহণ করেছিলেন। বর্তমানে ভারতীয় জনতা পার্টির কৃপানাথ মল্ল এই কেন্দ্রের সাংসদ।
এবারও তিনিই বিজেপির প্রার্থী। অন্যদিকে কংগ্রেসের হয়ে লড়ছেন হাফিজ রশিদ আহমেদ চৌধুরী। এআইডিইউএফের হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন সাহাবুল ইসলাম চৌধুরী। ধারে ও ভারে বিজেপি প্রার্থী দুজনের থেকে এগিয়ে। তবে শেষ বিচারে সংখ্যালঘু ভোটব্যাংক কোনও অবিজেপি প্রার্থীর দিকে পুরোপুরি চলে যায় কিনা, সেটাও বড় একটা ফ্যাক্টর হতে পারে এই ভোটে।
মোট আটটি বিধানসভা কেন্দ্র নিয়ে করিমগঞ্জ লোকসভা কেন্দ্র গঠিত। বিধানসভা কেন্দ্রগুলি হল রাতাবাড়ি, পাথারকান্দি, করিমগঞ্জ উত্তর, করিমগঞ্জ দক্ষিণ, বদরপুর, হাইলাকান্দি, কাটলিছড়া, আলগাপুর। এর মধ্যে রাতাবাড়ি কেন্দ্রটি তফশিলি জাতিদের জন্য সংরক্ষিত। অসম রাজ্যের রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে অহমিয়া-বাঙালি বিবাদ দীর্ঘদিনের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। ১৯৬২ সালদের প্রথম নির্বাচনে ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের নীহাররঞ্জন লস্কর জয়লাভ করেন। এর পরবর্তী তিনটি নির্বাচন অর্থাৎ ১৯৬৭, ১৯৭১ এবং ১৯৭৭ সালেও জাতীয় কংগ্রেসের পক্ষ থেকে নীহাররঞ্জন লস্কর জয়ী হন। ১৯৮৪ সালে সুদর্শন দাস ভারতীয় কংগ্রেস (সমাজবাদী) পার্টির পক্ষ থেকে এই কেন্দ্রে জয়ী হন। ১৯৯১ সালে রাম জন্মভূমি আন্দোলনের প্রভাবে ভারতের উত্তরপূর্বের রাজ্যটি ভারতীয় জনতা পার্টির দ্বারকানাথ দাস ১৯৯১ সালে এই কেন্দ্র থেকে সংসদ নির্বাচিত হন। ১৯৯৬ সালে ফের বিজেপির পক্ষ থেকে দ্বারকানাথ দাস এই কেন্দ্রে জয়ী হন। ১৯৯৮ সালের লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির কাছ থেকে আরও একবার এই আসনটি ছিনিয়ে নেয় ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের নেপাল চন্দ্র দাস। তিনি বিজেপির প্রার্থীকে ১০৪৬৮ ভোটে পরাজিত করেন।