২০১৪-১৫ সালের অস্ট্রেলিয়া টুরের কথা বলতে গিয়ে বিরাট কোহলি বলেন, ‘ম্যাচের প্রথম বল খেলতে এসেছি। টেস্ট সিরিজের প্রথম বল। ভেবে এসেছিলাম আমি এভাবে খেলব, ওভাবে শট মারব। কিন্তু প্রথম বলই মিচেল জনসনের বাউন্সার, সরাসরি লাগে হেটমেটে। সমস্ত প্ল্যান ভেস্তে যায় ওখানেই। পরে ঠিক করি, একে এমন মারব যে…
স্কোয়ার কাট বিরাট কোহলির। ছবি-এএনআই
মিচেল জনসনের সঙ্গে বিরাট কোহলির দ্বৈরথের কথা সকলেরই জানা। যখনই দুই ক্রিকেটার মুখোমুখি হয়েছে, তখনই বাইশ গজে উত্তাপ ছড়িয়েছে। সেটা স্লেজিং হোক, জনসনের বোলিং হোক বা কোহলির ব্যাটিং। সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে এসে ২০১৪-১৫ সালে অস্ট্রেলিয়ায় বর্ডার-গাভাসকর সিরিজের কথা উঠে এসেছে বিরাটের গলায়। সেই সিরিজে ভারতের হয়ে উল্লেখযোগ্য ব্যাটিং করেছিলেন কোহলি। করেছিলেন চারটি শতরান, তাও মিচেল জনসনের মতো বোলারদের বিপক্ষে। চারটি টেস্টে তাঁর ব্যাট থেকে এসেছিল ৬৯২ রান। অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে এক সিরিজে প্রায় ৭০০-র কাছাকাছি রান যে এশিয়ান ক্রিকেটারদের কাছে অনেকটা স্বপ্নের মতো, তা বলাই বাহুল্য।
প্রথম টেস্টে মহেন্দ্র সিং ধোনির অনুপস্থিতিতে অধিনায়কত্বের দায়িত্ব সামলেছিলেন বিরাট কোহলি। অ্যাডিলেডে দুই ইনিংসেই করেছিলেন দুরন্ত শতরান। যদিও শুরুটা খুব একটা ভালো ছিল না তার। ব্যাট করতে নেমেই মিচেল জনসনের ভয়ঙ্কর বাউন্সার এসে লাগে তাঁর মাথায়। লাঞ্চের আগে মাত্র ২ বল বাকি ছিল, তাই তখনকার মতো নিজেকে সামলে নিয়েছিলেন ভারতীয় ক্রিকেটের মিস্টার অ্যাগ্রেসিভ। এরপর সাজঘরে ফিরেই সিদ্ধান্ত নেন, পাল্টা বদলা নিতে হবে মিচেল জনসনের বিপক্ষে।
দুই ক্রিকেটার সম্পর্ক যে খুব ভালো তা নয়। কারণ মিচেল জনসন এক সময় বলেছিলেন তার কাছে সব থেকে সহজ হচ্ছে বিরাট কোহলির উইকেট নেওয়া। এরপর বিরাটও পরবর্তী সময় বলেছিলেন মিচেল জনসন এমন কিছুই বিশ্বক্রিকেটে করেননি যে তাঁকে সম্মান করতে হবে। এরই মধ্যে বর্ডার-গাভাসকর ট্রফিতে বিরাটের চারটি শতরানের বদলা, ২০১৫ বিশ্বকাপে ঘরের মাঠে নেন জনসন। সেখানে সেমিফাইনালে বিরাট কোহলিকে মাত্র ১ রান সাজঘরে ফিরিয়ে দেন তিনি।
গৌরব কাপুরের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে বিরাট সেদিনের কথা মনে করে বলেন, ‘ম্যাচের প্রথম বল খেলতে এসেছি। টেস্ট সিরিজের প্রথম বল। ভেবে এসেছিলাম আমি এভাবে খেলব, ওভাবে শট মারব। কিন্তু প্রথম বলই মিচেল জনসনের বাউন্সার, সরাসরি লাগে হেটমেটে। সমস্ত প্ল্যান ভেস্তে যায় ওখানেই। চোখের ওপরে ফুলে যায়, একটু দেখতে অসুবিধা শুরু হয়। এর ২ বল পরই মধ্যাহ্নভোজ ছিল'।
এরপরই সাজঘরে ফিরে নিজের জেদের কথা মুখে শোনা গেছে বিরাটের মুখে। ভারতের হয়ে এই মূহূর্তের সেরা তারকা বলছেন, 'লাঞ্চে দুটোই রাস্তা খোলা ছিল। হয়ে লড়াই করা, নাহলে ছেড়ে দেওয়া। কিন্তু লাঞ্চে বসে আমার মনে হল, যে ও আমাকে মারল কিভাবে?(ওর সাহস হল কিভাবে?)। এরপরই সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলি একে এমন মার মারব সিরিজে, যে ভুলতে পারবে না’।