আমদাবাদের নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়ামে ২০২৩ সালের নভেম্বর মাস দেখেছিল বিরাটের চোখের জল। আর ৩রা জুন, ২০২৫ দেখল আবারও বিরাটের চোখে জল। তবে এদিনের ম্যাচ যারা দেখেছেন তাঁরা সবাই জানেন, এই চোখের জল আসলে আনন্দের। এর মধ্যে বিন্দুমাত্র কষ্ট না যন্ত্রনা নেই। পরপর মন ভেঙেছে কোহলির আইপিএলের হারের ফলে। গতবারও চেন্নাই সুপার কিংসকে হারিয়ে আইপিএলের প্লে অফে এসেছিল বিরাট কোহলি, ফ্যাফ ডুপ্লেসিসরা। কিন্তু এলিমিনেটর ওয়ান থেকেই তাঁদের বিদায় নিতে হয়েছিল রাজস্থানের কাছে হেরে। শুরু থেকেই বিরাট কোহলির দলের নামে পাশে রয়্যাল শব্দটা থাকলেও, আসলে কিন্তু আইপিএলে তাঁরা এতদিন নিজেদের রয়্যাল হিসেবে প্রতিষ্ঠা পাওয়াতে ব্যর্থই হয়েছেন। যদিও রজত পতিদার নিজের চ্যাম্পিয়ন্স লাক কাজে লাগিয়ে মাত্র ১৩ ম্যাচে ক্যাপ্টেন্সি করেই আইপিএলে আরসিবিকে চ্যাম্পিয়ন করে দিয়েছিলেন।
এই ট্রফিটা বিরাট কোহলির কাছে ঠিক কতটা গুরুত্বপূর্ণ ছিল, সেটা বোঝা যাচ্ছিল যখন ম্যাচ শেষের আগে ৪ বল বাকি ছিল। ম্যাচ আরসিবি যে জিতছে সেটা বুঝে গেছিলেন কোহলি, কারণ শেষ ওভারে হেজেলউড বোলিং করছিলেন, আর সেখানে কোনও ভুলের তেমন সুযোগ ছিল না বললেই চলে। বিরাট কোহলি মুখে হাত দিয়ে চোখের জল ঢাকার চেষ্টা করলেও বোঝা যাচ্ছিল, এই দলের জন্য তিনি ঠিক কতটা নিজের আত্মত্যাগ করেছেন বা এই দলের প্রতি তিনি কতটা দায়বদ্ধ।
ম্যাচ শেষেও তাই বিরাটকে দেখা গেল একদম শিশুর মতোই আনন্দে উদ্বেলিত হতে। ছোট শিশুরা ম্যাচ জয়ের পর যেমন গোটা মাঠ দৌড়ে আনন্দে করে থাকেন, ৩৬ বছর বয়সের বিরাটকে দেখেও তেমনই নিষ্পাপ শিশুর মতোই লাগছিল, যিনি গোটা মাঠ দৌড়ে আনন্দ উদযাপন করছিলেন দলের জয়ের পর। কখনও ফিল সল্ট, কখনও এবি ডেভিলিয়ার্স, অনুষ্কা শর্মাদের জড়িয়ে ধরে তাঁর অভিব্যক্তিই বুঝিয়ে দিচ্ছিল, এই ট্রফির গুরুত্ব তাঁর কাছে ঠিক কতটা।
ম্যাচের পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানের পরই বিরাটের এক ভিডিয়ো মন জিতে নিয়েছে সকলের। আসলে বিরাট কোহলি বরাবরই কোচ হিসেবে রবি শাস্ত্রীকে খুব পছন্দ করতেন। রবি জমানাতেই অস্ট্রলিয়ায় গিয়ে বর্ডার গাভাসকর ট্রফিতে বিরাটদের দাদাগিরি। বরাবরই শাস্ত্রীর সঙ্গে তাই নিবিড় সম্পর্ক কোহলির। আর আইপিএল ট্রফি জয়ের পরই তাই দৌড়ে গিয়ে রবি শাস্ত্রীর কোলে উঠে পড়েন বিরাট কোহলি, কারণ আরসিবির তারকা নিজেও জানেন যে আজকের দিনে দাঁড়িয়ে রবি শাস্ত্রীও তাঁর জন্য ঠিক অতটাই খুশি তাঁর সাফল্য।