সম্প্রতি অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে মাত্র ২৭ রানেই টেস্টের এক ইনিংসে অলআউট হয়ে গেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। সাম্প্রতিক সময় ক্যারিবিয়ানদের এমন লজ্জাজনক পারফরমেন্স আর দ্বিতীয় নেই। টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে এটাই ছিল বিশ্বের দ্বিতীয় সর্বনিম্ন স্কোর, আরেকটু হলে সর্বনিম্ন স্কোরও হতে পারত। এমনিতেই টি২০ ক্রিকেট আসার পর ওয়েস্ট ইন্ডিজের ব্যাটার, বোলাররা এই ফরম্যাটে এত বেশি করে জোর দিয়েছেন, যে তাঁরা ওডিআই ফরম্যাটে বিশ্বকাপ খেলার যোগ্যতাটুকুও অর্জন করতে পারেননি সম্প্রতি, যা অত্যন্ত লজ্জার বিষয়।
এবার টেস্ট ক্রিকেটের ক্ষেত্রেও যে নূন্যতম লড়াই দিতে হয়, সেটাও অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে দিতে ব্যর্থ হন জোয়েল ওয়ারিকন, রস্টন চেজরা। যা দেখেই অত্যন্ত বিরক্ত ১৯৭৫ এবং ১৯৭৯ সালের বিশ্বকাপজয়ী ক্যারিবিয়ান অধিনায়ক ক্লাইভ লয়েড। গোলাপি বলের এই টেস্টে অস্ট্রেলিয়া একটি মিস ফিল্ড করায় ওয়েস্ট ইন্ডিজের স্কোর ২৭ রানে পৌঁছে ছিল, নাহলে আরও কম রানেই তাঁদের বেঁধে ফেলতে পারত অজিরা।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের এমন জঘন্য পারফরমেন্সের পরই তাঁদের দেশের ক্রিকেট বোর্ডের তরফে ক্লাইভ লয়েড, ব্রায়ান লারা এবং ভিভ রিচার্ডসের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয় একটি জরুরি বৈঠকের জন্য। জানা যাচ্ছে, এই হারের পিছনে কারণ অনুসন্ধান করতেই এই বৈঠক ডাকা হয়েছে কিংবদন্তিদের নিয়ে।
ক্লাইভ বলছেন, ‘আমাদেরকে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেটের তৃণমূল স্তর থেকে আন্তর্জাতিক স্তর পর্যন্ত সব দিকগুলো খতিয়ে দেখতে হবে। ভালোভাবে খুটিয়ে খুটিয়ে যদি দেখা যায়, তাহলে বোঝা যাবে বিষয়টা। ওয়েস্ট ইন্ডিজের ক্রিকেট একটা প্রতিষ্ঠান। এই এলাকার মানুষকে এত কিছু দিয়েছে এই খেলা, তাই কীভাবে ফের খেলার উন্নতি করা যায় সেটাই আমাদের দেখতে হবে। আমি সব সময়ই সাহায্য করতে তৈরি রয়েছি। কোন কোন কাজগুলো করলে উন্নতি হওয়া সম্ভব, সেই সব নিয়েই আলোচনা করব। প্রায় ১০০ বছর হয়ে গেছে আমরা টপ ক্লাস ক্রিকেট খেলছি, তাই এমন পারফরমেন্স অত্যন্ত অনভিপ্রেত ’।
এই সিরিজে ব্র্যান্ডন কিং এবং অ্যান্ডারসন ফিলিপের ব্যাটিং গড় তিনটি ম্যাচের পরই ২০-র ওপরে ছিল। ফলে ব্যাটিংয়ের ক্ষেত্রে যে মানসিকতারও ব্যাপক বদল প্রয়োজন তাও মানছেন লয়েড। তিনি বলছেন, ‘আমাদের আরও কয়েকটা ল্যারি গোমসের মতো ব্যাটার দরকার। এমন ব্যাটার দরকার যারা এসে উইকেটে খানিকটা সময় কাটাবে, একটু দৃষ্টিকটু ব্যাটিং করলেও তাতে সমস্যা নেই, তবে উইকেটে পড়ে থাকতে হবে। লড়াই করতে হবে দীর্ঘক্ষণের জন্য, যাতে বোলাররাও ক্লান্ত হয়, সেটাই আমরা করতে পারছি না। আমাদের খেলার মানসিকতায় উন্নতি করতে হবে। আমাদের প্রাথমিক কাজগুলো সঠিক করতে হবে। স্কুল ক্রিকেট, ক্লাব ক্রিকেট, প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ছেলেরা পর্যাপ্ত খেলছে কিনা, সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। কেমন পিচ তৈরি করা হবে সেগুলো মাথায় রাখতে হবে ’।