মহাভারতে কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধের মতোই এবার রাজ্য–রাজনীতিতে চক্রব্যুহ তৈরির কথা সামনে আসছে। মহাভারতের চক্রব্যুহে বধ হয়েছিল অর্জুন–পুত্র অভিমন্যু। এবার খোদ অর্জুন সিংকেই টাইট দিতে চক্রব্যুহ তৈরি করছেন কামারহাটির তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক মদন মিত্র। নিজের এলাকা ছেড়ে অন্য এলাকায় ঢুকলেই বন্দি হয়ে পড়বেন ব্যারাকপুরের ‘একদা সাংসদ’ অর্জুন সিং। এই চ্যালেঞ্জ অর্জুনকে ছুঁড়েছেন খোদ মিত্র মদন। তাঁর চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী। এই কথা শুনে পাল্টা জবাব দিয়েছেন অর্জুন সিংও। ফলে এই নিয়ে এখন সরগরম রাজ্য–রাজনীতি।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুকে নিগ্রহ করা হয় বলে অভিযোগ উঠেছে। তা নিয়ে যথেষ্ট উত্তেজনা রাজ্যে দেখা গিয়েছে। তার সঙ্গে রাজনৈতিক তরজা চরমে উঠেছে। এই ইস্যুকে সামনে রেখে বিজেপির বাহুবলী নেতা অর্জুন সিং তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে বাম–অতিবামদের আঁতাত আছে এমন অভিযোগ তুলেছিলেন। নানা জায়গায় গিয়ে এই ইস্যুতে সুর চড়াবেন বলেও জানিয়েছিলেন। তার প্রেক্ষিতে এবার কামারহাটির তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক মদন মিত্র সোমবার কামারহাটি পুরসভায় ২৯ নম্বর ওয়ার্ড এলাকায় দলের পথসভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে অর্জুন সিংকে একহাত নিয়েষ্ট বললেন, ‘কামারহাটিতে ঢুকতে চাইলে, ঢুকতে পারবে। কিন্তু বেরতে আর পারবে না।’
আরও পড়ুন: সুকান্ত–শুভেন্দুর মধ্যে অনেকক্ষণ কথা হল টেলিফোনে, রফাসূত্রের টোটকা কি বের হল?
একদিকে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে অশান্তি অপরদিকে বেলঘরিয়া শুটআউটে গ্রেফতার–সহ নানা ইস্যুতে সরগরম রয়েছে বাংলা। আর তাই শাসক–বিরোধী দু’পক্ষের মধ্যে ব্যাপক দ্বন্দ্ব শুরু হয়েছে। আর যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটনা নিয়ে ব্যারাকপুরের প্রাক্তন সাংসদ তথা বিজেপি নেতা অর্জুন সিং তৃণমূল–সিপিএমের ‘গট আপ’ তত্ত্ব তুলে ধরেছেন। যা নিয়ে ক্ষুব্ধ মদন মিত্র। যদিও অর্জুন সিং এই সব কথা শুনে মদন মিত্রের উদ্দেশে বলেন, ‘কোথায় ছিলেন মদন মিত্র? সিপিএম জমানায় তো ভয়ে কাঁপত। তখন এই অর্জুন সিংকেই দরকার হতো কোনও মিছিল–মিটিং করতে গেলে। ও আমার কী করবে? এখন সরকারে এসে গিয়েছে তাই বড় বড় কথা।’
অর্জুন সিং যত ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছেন তত জবাব দিয়েছেন মদন মিত্রও। তাই তো এর জবাব দিতে গিয়ে মদন মিত্রের হুঁশিয়ারি, ‘অনেকে এখানে ঢুকে দাঙ্গা তৈরির চেষ্টা করছে। সব বুঝতে পারছি। এখানে অশান্তির চেষ্টা হচ্ছে। কিন্তু এখানকার জনতা খুব সচেতন। জেনে রাখুন, অর্জুন সিং যদি নিজের এলাকা ছেড়ে এখানে এসে কিছু করতে চায়, তাহলে এখানে ঢুকতে পারবে, কিন্তু বেরতে পারবে না। কে অর্জুন? বিজেপিই তো ওকে বসার চেয়ার দেয় না। আগে নিজের জায়গা ঠিক করুক, তারপর অন্য জায়গার কথা ভাববে। আর যাঁরা নিয়মিত মজদুর ভবনে যাচ্ছেন, আমরা তাঁদের উপর নজর রাখছি। আপনি নিজেও জানেন না কী হবে।’