কলকাতার মেয়র তথা রাজ্যের পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। আর এত দায়িত্ববান পদে থেকে যে মন্তব্য করেছেন মন্ত্রী তা নিয়ে রাজ্য–রাজনীতিতে ঝড় বয়ে গিয়েছে। শুধু তাই নয়, তাঁর দল তৃণমূল কংগ্রেসও ওই বক্তব্যে অনুমোদন দেয়নি। ফলে সব মিলিয়ে এখন বিপাকে ফিরহাদ। ধমক খেতে হয়েছে খোদ তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে বলে সূত্রের খবর। এবার ‘সংখ্যাগুরু’ মন্তব্য নিয়ে ফিরহাদের সমালোচনা করেন দলের দুই বিধায়ক ডেবরা এবং ভরতপুরের। এবার তাঁদের সমালোচনা করলেন কামারহাটির তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক মদন মিত্র।
কদিন আগে কলকাতার ধনধান্য অডিটোরিয়ামে একটি অনুষ্ঠানে যোগ দেন ফিরহাদ হাকিম। আর সেখানে মেয়র বলেছিলেন, ‘বাংলায় আমরা ৩৩ শতাংশ। দেশে আমরা ১৭ শতাংশ। আমাদের সংখ্যালঘু বলা হয়। কিন্তু আমরা নিজেদের সংখ্যালঘু বলে মনে করি না। আমরা মনে করি, উপরওয়ালার আশীর্বাদে একদিন আমরা সংখ্যাগুরুর চেয়েও সংখ্যাগুরু হতে পারি।’ তাঁর এই মন্তব্য নিয়ে প্রধান বিরোধী দল বিজেপিও কড়া বার্তা দিয়েছে। তাঁদের হাতে চলে এসেছে মোক্ষম অস্ত্র। এই পরিস্থিতিতে সমালোচনা করেন ডেবরার বিধায়ক হুমায়ুন কবীর। সোশ্যাল মিডিয়ায় তিনি লেখেন, ‘জিন্দেগি লম্বি নেহি, বড়ি হোনে চাইয়ে হুজুর হাকিমজি।’
আরও পড়ুন: শেখ হাসিনা–সহ পরিবারের বিরুদ্ধে ৮০ হাজার কোটির দুর্নীতির অভিযোগ, তদন্তে কমিশন
এই সমালোচনা নিয়ে ফিরহাদ অবশ্য কিছু বলেননি। পরে সংবাদমাধ্যমে জানান, তিনি আপাদমস্তক ধর্মনিরপেক্ষ। মৃত্যুর দিন পর্যন্ত তাই থাকবেন। কিন্তু তাতে চিঁড়ে ভেজেনি বলেই দেখা গেল। ফিরহাদকে নিয়ে এই মন্তব্যের প্রেক্ষিতে ডেবরার বিধায়ককে কড়া আক্রমণ করলেন মদন মিত্র। কামারহাটির বিধায়ক বলেন, ‘যখন নতুন কেউ সিগারেট খেতে শেখে তখন সে রাস্তায় সিগারেট ফুঁকতে ফুঁকতে যায়। কখন বাবার সামনে ফুঁকছে, কখন কাকার সামনে ফুঁকছে, খেয়াল থাকে না। তেমনই যাঁরা পার্টিতে নতুন, কোনও রাজনৈতিক ব্যাকগ্রাউন্ড নেই, তাঁরা যখন তখন কোনও একটা কথা বলে দলের সামনের সারিতে আসতে চান।’
মদন মিত্রের এই মন্তব্য দুটি বিষয় সামনে চলে এল। একদিকে তিনি দলের বিধায়কদের সমালোচনা করলেন অপরদিকে ফিরহাদের বিরুদ্ধে কিছু না বলায় তাঁর পাশেই দাঁড়ালেন এবং সমর্থন করলেন বলে মনে করা হচ্ছে। যদিও মদনের বক্তব্য, ‘তৃণমূলের কোনও বর্ষীয়ান নেতা কিন্তু ববির মন্তব্য নিয়ে কিছু বলেননি। সৌগত রায়, মণীশ গুপ্ত, সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, তাঁরা কেউ কিছু বলেননি। দল যা বলার বলে দিয়েছে। মন্তব্যটা ভাল হয়নি। কোন পরিস্থিতিতে বেরিয়ে গিয়েছে, সেটা দেখতে হবে। তবু মনে করি, ববি সিনিয়র ছেলে। এরকম না বললে ভাল হতো। ববি আদ্যোপান্ত ধর্মনিরপেক্ষ। কিছু একটা বলতে গিয়ে মুখ দিয়ে বেরিয়ে গিয়েছে। সিনেমায় বারবার রিটেক, কাট হয়। আমাদের তো সেই সুযোগ নেই। আলটপকা বেরিয়ে গিয়েছে। এটা উপেক্ষা করাই ভাল।’