দিঘার জগন্নাথ মন্দিরে যখন অনুষ্ঠান শেষ তখন আবার চুম্বকের মতো ক্যামেরার আলো টেনে নিয়েছিলেন বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তখন প্রায় দিঘা ছেড়ে দিয়েছেন। এমন সময় খবর এল দিলীপ ঘোষ এসেছে। ওই মুহূর্তে মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস–সহ অন্যান্যরা দিলীপ ঘোষকে সামলাচ্ছেন। গাড়ি ঘুরিয়ে মুখ্যমন্ত্রী পৌঁছলেন মন্দিরের কাছে। দিলীপ ঘোষকে নিয়ে এলেন অতিথি নিবাসে। সস্ত্রীক দিলীপ যেমন সৌজন্য দেখিয়ে রাজ্য সরকারের আমন্ত্রণ রক্ষা করেছেন তেমনই পাল্টা সম্মান এবং সৌজন্য তাঁকে দেখিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু খবরটা এখানে শেষ হয়নি। বিজেপি নেতারা দেদার আক্রমণ করতে শুরু করলেন দিলীপ ঘোষকে। আর আজ তাঁর পাশে দাঁড়ালেন কুণাল ঘোষ।
আজ, বৃহস্পতিবার নিজের ফেসবুক পেজে ওই সব বিজেপি নেতাদের বিরুদ্ধে তুমুল সমালোচনা করলেন কুণাল। বুঝিয়ে দিলেন রাজনীতিতে যুযুধান হলেও সৌজন্যই এই বাংলার সংস্কৃতি। দিলীপ ঘোষকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করেছেন শুভেন্দু অধিকারী, সুকান্ত মজুমদার, সৌমিত্র খাঁ এবং শেষ পর্যায়ে তথাগত রায়ও। এই আবহে কুণাল ঘোষ ফেসবুক পোস্টে লিখলেন, ‘রাজ্য বিজেপিতে তপন শিকদারের পর কর্মীদের কাছে সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য সভাপতি ছিলেন দিলীপ ঘোষ। রাজ্য বিজেপির সফলতম সভাপতিও বটে।’
আরও পড়ুন: দশ বছর পর খুলছে পানিঘাটা চা–বাগান, খুশি শ্রমিকরা, রাজ্য সরকারের উদ্যোগে জট কাটল
তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সাধারণ সম্পাদকের ফেসবুক পোস্টে বিজেপি নেতাদের গায়ে লাগলেও এখন আর কিছু করার নেই। কারণ রাস্তা তাঁরাই তৈরি করে দিয়েছেন। আর তাতেই দৌড় লাগিয়েছেন কুণাল। আজ, বৃহস্পতিবার যখন দিলীপের জগন্নাথ মন্দিরে উপস্থিত হওয়া এবং মুখ্যমন্ত্রীর পাশে বসে আলোচনা করা নিয়ে বিজেপি ক্ষোভ উগরে দিচ্ছে তখন সোজা ব্যাটে খেললেন এই তৃণমূল কংগ্রেস নেতা। সংবাদমাধ্যমে কুণাল বলেন, ‘সংকীর্ণমনা এবং ভেদাভেদের রাজনীতিবিদদের এটাই একমাত্র কাজ। আর তাই এখন বিজেপির কিছু নেতার জ্বলে গেল, পুড়ে গেল। দিলীপ ঘোষ একটা বিয়ে করে ওনাদের শুইয়ে দিয়ে গিয়েছিলেন, এখন জগন্নাথদেবকে দর্শন করে একেবারে সমাপ্ত করে দিলেন। এখন তাঁরা নিজেদের মতো করে দিলীপবাবুকে আক্রমণ করছেন।’ এই ভাষাতেই বিঁধলেন কুণাল।
তবে বিজেপি নেতাদের এমন আক্রমণ নিয়ে বেজায় চটেছেন দিলীপ। নিউটাউনের ইকোপার্কে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন। টেনে এনেছেন অটল বিহারী বাজপেয়ীর প্রসঙ্গ। নাম না করে সকলকেই বার্তা দিয়েছেন। সুতরাং দিলীপকে নিয়ে এখন রাজ্য–রাজনীতি সরগরম। সেখানে কুণাল ফেসবুক পোস্টে লেখেন, ‘দিলীপ ঘোষ বিজেপির নেতা। তাঁর সঙ্গে আমাদের রাজনৈতিক মতপার্থক্য ছিল, আছে, থাকবে। বিরোধিতাও চলবে। তিনি আক্রমণ করলে জবাব যাবে। কিন্তু দিঘার জগন্নাথমন্দির উদ্বোধনের অনুষ্ঠানে মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠে দিলীপ ঘোষসহ বিভিন্ন দলের কয়েকজন শীর্ষনেতাকে আমন্ত্রণ করেন এবং দিলীপবাবুও সৌজন্য দেখিয়ে মন্দিরে আসেন, পুজো দেন সস্ত্রীক। তৎকাল বিজেপি আর ঈর্ষাকাতর ব্যর্থ বিজেপির অংশ তাঁকে আক্রমণে নেমেছে।’