এখান থেকেই উঠেছিল সঠিক চিকিৎসার দাবি, উঠেছিল নিরাপত্তা থেকে সুরক্ষার দাবি। এমনকী এখান থেকেই উঠেছিল চিকিৎসকদের নানা দাবি। হ্যাঁ, ওই জায়গার নাম আরজি কর হাসপাতাল। সেইসব দাবি মেটার পরও আজ টানা তিনঘণ্টা চিকিৎসা না পেয়ে পড়ে থাকল রোগীর দেহ। ঘটনাস্থল সেই আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল। দফায় দফায় বৈঠক, আন্দোলন, দ্রোহের নিশিযাপন পথে—সবই দেখা গিয়েছিল এই হাসপাতালের চিকিৎসকদের নেতৃত্বে। সেখানে এই ঘটনায় অভিযোগ উঠেছে জুনিয়র ডক্টর ফ্রন্টের সদস্যদের বিরুদ্ধে। এমনকী এমন অন্যায় করে আবার প্রমাণ লোপাট করতে ওই রোগীর পরিবারকে দিয়ে বলপূর্বক সাদা কাগজে মুচলেকা লিখিয়ে নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
এই হাসপাতালেই তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ করে খুন করার অভিযোগে উত্তাল হয়ে উঠেছিল বাংলা। রাস্তায় নেমে আন্দোলন করেছিল চিকিৎসকদের সংগঠন জুনিয়র ডক্টর ফ্রন্ট। এবার বুধবার বিকেলে আরজি কর হাসপাতালে হাড়োয়া থানা থেকে ভাই সুজিত ঘোষকে চিকিৎসার জন্য নিয়ে আসেন দিদি গীতা ঘোষ। পারিবারিক অশান্তির জেরে যুবক সুজিত ঘোষ বিষ খেয়েছিলেন বলে সূত্রের খবর। বিকেলে এই হাসপাতালে এসে ৪টে নাগাদ জরুরি বিভাগে কার্ড করেন গীতাদেবী। বিকেল ৪টের সময় কার্ড করিয়েও সন্ধ্যে সাড়ে ৭টা পর্যন্ত পড়ে ছিল রোগী বলে অভিযোগ। যন্ত্রণায় কাতরালেও দেখা মেলেনি কোনও চিকিৎসকের বলে অভিযোগ।
আরও পড়ুন: লন্ডন সফরে যাচ্ছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে ভাষণ দেবেন
২০২৪ সালের অগস্ট মাসে এই আরজি কর হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ করে খুন করার ঘটনায় কর্মবিরতির ডাক দিয়েছিল জুনিয়র ডক্টর ফ্রন্ট। যাঁদের মধ্যে ছিলেন পিজিটি সীতিশও। এবার এমন পরিস্থিতি তৈরি হলেও ডিউটি থাকাকালীন মোবাইল নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন ফার্স্ট ইয়ার পিজিটি ডা. সিতীশ বলে অভিযোগ গীতা দেবীর। এই ঘটনা নিয়ে রোগীর পরিবারের সদস্য গীতা ঘোষ বলেন, ‘টানা তিন ঘণ্টা চিকিৎসা না পেয়ে আমার ভাই বেডে শুয়ে কাতরাতে থাকে। সন্ধ্যে সাড়ে ৭টা নাগাদ চিকিৎসা শুরু হয়।’
এই ঘটনা এখন চাউর হয়ে গিয়েছে। তাই বিষয়টিকে ধামাচাপা দিতে চেয়েছিল জুনিয়র ডক্টর ফ্রন্ট। আর তাই রোগীর পরিবারের সদস্য গীতা দেবীকে বলা হয়, ‘সাদা কাগজে লিখে দিন যে আমরা সঠিক সময়ে চিকিৎসা শুরু করেছি।’ এই বিষয়ে গীতা ঘোষের বক্তব্য, ‘আমি তো পড়াশোনা জানি না। আমায় কয়েকজন এসে বলে আমরা বয়ান লিখে দিচ্ছি আপনি শুধু টিপছাপ দিয়ে দেবেন। ভাইয়ের চিকিৎসার স্বার্থে আমি তাই করেছি।’ এই ঘটনা যাতে বাইরে না বের হয় তাই মেডিক্যাল অফিসার তাপস প্রামাণিকের ঘরে গিয়ে হুমকি দেন জেডিএফ সদস্য ডা. সীতিশ, ডা. রুবেল বলে অভিযোগ উঠেছে।