রাজ্য সরকারের স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্প নিয়ে বারবার আশ্বাস মিললেও, বাস্তবে সেই সুবিধা থেকে অনেকেই বঞ্চিত হচ্ছেন। আবার স্বাস্থ্য সাথী কার্ড ফেরানোর অভিযোগ উঠল বেসরকারি হাসপাতালের বিরুদ্ধে। এনিয়ে মামলা দায়ের হল কলকাতা হাইকোর্টে। উত্তর ২৪ পরগনার এক বেসরকারি হাসপাতাল স্বাস্থ্য সাথী কার্ডে চিকিৎসা দিতে অস্বীকার করে। এরফলে এক আইনজীবী এবং তাঁর অসুস্থ স্ত্রী চরম ভোগান্তিতে পড়েন। এনিয়ে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করল কলকাতা হাইকোর্ট। (আরও পড়ুন: কোন্নগরে নৃশংসভাবে কুপিয়ে খুন তৃণমূল নেতাকে, হাতের কবজি কেটে ঝুলতে দেখা যায়)
আরও পড়ুন: হাসপাতালে ভরতি হয়েও করা যাবে স্বাস্থ্যসাথী কার্ড! কীভাবে? কী কী লাগবে? কমবে খরচ
এই ঘটনায় পুলিশের নিষ্ক্রিয়তায় ক্ষুব্ধ হয়ে বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ বুধবার নির্দেশ দিয়েছেন, নিরপেক্ষ তদন্ত করে দ্রুত রিপোর্ট দিতে হবে ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে। সেইসঙ্গে ম্যাজিস্ট্রেটকেও বলা হয়েছে, যেন যথাসম্ভব দ্রুততার সঙ্গে মামলার নিষ্পত্তি করা হয়।আইনজীবী গৌরাঙ্গ পাল অভিযোগ করেছেন, তাঁর শারীরিকভাবে অক্ষম স্ত্রীকে কিডনির জটিল রোগে আক্রান্ত অবস্থায় গত ৩ জুন বারাসতের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তাঁদের কাছে ছিল সরকারি স্বাস্থ্য সাথী কার্ড। হাসপাতালের তরফ থেকে প্রথমে জানানো হয়েছিল, সেই কার্ডে চিকিৎসা পরিষেবা মিলবে। (আরও পড়ুন: কলকাতার থেকে গ্রেফতার 'বাংলাদেশি' হিন্দু যুবতী, মিলল দুই দেশের পরিচয়পত্র)
আরও পড়ুন: বিধাননগর-কল্যাণী, বালিগঞ্জ-সোনারপুর, বারাসত-বসিরহাট রুটে নয়া লোকাল ট্রেন
কিন্তু কিছুদিন পরেই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, স্বাস্থ্য সাথী কার্ডে আর কোনও পরিষেবা দেওয়া হবে না। এমন পরিস্থিতিতে আর্থিকভাবে চাপে পড়েন গৌরাঙ্গবাবু। শেষমেশ বাধ্য হয়ে খরচের কিছু অংশ মিটিয়ে স্ত্রীকে ১২ জুন কলকাতার আরেকটি হাসপাতালে স্থানান্তরিত করেন। (আরও পড়ুন: বাংলায় প্রথম এসি লোকাল ট্রেন চালু হবে কবে? জানা গেল দিনক্ষণ, ভাড়া হতে পারে কত?)
এই ঘটনার পরও বারাসতের ওই হাসপাতাল থেকে নিয়মিতভাবে বিল পাঠানো হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেছেন গৌরাঙ্গ পাল। থানায় অভিযোগ জানাতে গেলে তা গ্রহণও করা হয়নি বলে তিনি দাবি করেন। পরে তিনি সরাসরি ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের দ্বারস্থ হন।হাইকোর্টে মামলাকারীর পক্ষে আইনজীবী জয়ন্তনারায়ণ চট্টোপাধ্যায় সওয়াল করেন, যেখানে সরকার নিজেই নাগরিকদের স্বাস্থ্যসুরক্ষার আশ্বাস দিচ্ছে, সেখানে কীভাবে একটি বেসরকারি হাসপাতাল এই পরিষেবা অস্বীকার করতে পারে? তিনি আরও অভিযোগ করেন, এই কার্ড নিয়ে গোটা রাজ্যজুড়ে একপ্রকার চক্রান্ত চলছে। অনেক হাসপাতাল ইচ্ছাকৃতভাবে স্বাস্থ্য সাথী গ্রহণ করছে না।
অন্যদিকে, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের আইনজীবী দাবি করেছেন, স্বাস্থ্য দফতরের কাছে তাঁদের বিপুল অর্থ বকেয়া রয়েছে। তাই বাধ্য হয়ে বিল পাঠানো হয়েছে। বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দেন, একজন নাগরিক যদি সরকারি প্রকল্পে নির্ধারিত হাসপাতালেই পরিষেবা না পান, তাহলে সেই বিষয়ে অবশ্যই তদন্ত হওয়া দরকার। পুলিশকে ভর্ৎসনা করেন।