ঘড়িতে তখন রাত সাড়ে বারোটা। নোনাপুকুর ট্রাম ডিপোর পাশ দিয়ে নিজের বাড়ির দিকে হাঁটছিলেন ৬৫ বছরের রতন লাল। সেই সময় আচমকা তিন দুষ্কৃতী তাঁকে ঘিরে ধরে। মোবাইল ও টাকা ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু, তাতে বাধা দিলে দুষ্কৃতীরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাঁর ওপর হামলা চালায়। ঘটনাস্থল কলকাতার প্রাণকেন্দ্র পার্ক স্ট্রিট এলাকা।
আরও পড়ুন: মহারাষ্ট্রে নৃশংসভাবে খুন বাংলার শ্রমিক, দেহ বস্তাবন্দি করে ফেলে দেওয়া হল নদীতে
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃদ্ধ প্রতিরোধ করার চেষ্টা করতেই পরিস্থিতি ভয়াবহ হয়ে ওঠে। শুরু হয় ধাক্কাধাক্কি। রাস্তার মাঝে পড়ে যান রতনবাবু। অভিযোগ, এরপরই একের পর এক ভোজালির কোপ বসাতে শুরু করে দুষ্কৃতীরা। রক্তাক্ত অবস্থায় ছটফট করতে করতেই কোনওরকমে প্রাণ বাঁচাতে সেখান থেকে পালিয়ে যান তিনি। জখম বৃদ্ধ ছুটতে ছুটতে এসে পৌঁছন মল্লিকবাজার মোড়ের কাছে। সেখানে দাঁড়িয়ে ছিল একটি পুলিশ ভ্যান। ঘটনার বিবরণ দেন তিনি। পুলিশ দেখে পিছনে ছুটে আসা দুষ্কৃতীরাও পিছপা হয়, এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায়।
এদিকে, পুলিশ তৎক্ষণাৎ রতন লালকে উদ্ধার করে ভর্তি করে কলকাতা ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। তিনি এখনও সেখানেই চিকিৎসাধীন। ঘটনার পর থেকেই নড়েচড়ে বসেছে কলকাতা পুলিশ। পার্ক স্ট্রিট থানার অধীনে থাকা গোটা এলাকাজুড়ে খতিয়ে দেখা হচ্ছে সিসিটিভি ফুটেজ। ইতিমধ্যে খুনের চেষ্টা ও ছিনতাইয়ের মামলা দায়ের করে শুরু হয়েছে জোর তল্লাশি। কলকাতার বুকে এ ভাবে রাস্তায় হাঁটতে গিয়ে দুষ্কৃতীদের হাতে আক্রান্ত হওয়া ফের একবার শহরের রাতের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিল। বিশেষ করে বয়স্ক নাগরিকদের নিরাপত্তা যে কতটা অনিশ্চিত, তা নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, দুষ্কৃতীদের ধরতে একাধিক জায়গায় অভিযান চালানো হচ্ছে। তদন্তে জোর দেওয়া হয়েছে অপরাধীদের পরিচয় শনাক্ত করতে।