কলকাতা বিমানবন্দরে জরুরি অবতরণ করল ইরাকের বিমান। এমনকী ওই বিমানে থাকা কিশোরীর মৃত্যু পর্যন্ত হল। এই ঘটনায় শোরগোল পড়ে গিয়েছে কলকাতা বিমানবন্দরে। চিকিৎসার জন্য ওই কিশোরী চিন যাচ্ছিলেন। কিন্তু মাঝ আকাশে কিশোরী অসুস্থ হয়ে পড়লে জরুরি ভিত্তিতে বিমান অবতরণ করতে হয়। ইরাকের ওই বিমান তখন পরিস্থিতি বেগতিক দেখে কলকাতা বিমানবন্দরে অবতরণ করে। কিন্তু অনেক চেষ্টা করেও ওই কিশোরীকে বাঁচানো গেল না।
এদিকে কলকাতা বিমানবন্দরে জরুরি অবতরণ করার পর তড়িঘড়ি ওই কিশোরীকে বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। চিকিৎসকরা নানা পরীক্ষা–নিরীক্ষা করলেও হৃদস্পন্দন মিলছিল না। হাতের নাড়ি টিপেও সাড়া পাওয়া যাচ্ছিল না। অবশেষে তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। মৃত ওই কিশোরী দেকান আহমেদ তাঁর বাবা–মায়ের সঙ্গেই ছিলেন। বিমানবন্দর সূত্রে খবর, কলকাতা বিমানবন্দর থেকে ৩০ মিনিট দূরে থাকার সময় মেডিক্যাল ইমার্জেন্সি বলে অবতরণ করতে অনুমতি চাওয়া হয়েছিল। আর এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলের অনুমতি পেয়ে বিমান নামতেই কিশোরীকে প্রাথমিক চিকিৎসা করেন বিমানবন্দরের হেলথ অফিসার।
আরও পড়ুন: আজও বিপুল পরিমাণ জল ছাড়ল ডিভিসি, ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হল গ্রামবাংলায়
অন্যদিকে কিশোরীর শারীরিক অবস্থা বেগতিক দেখে তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে নির্দেশ দেন ওই হেলথ অফিসার। তখন শহরের বেসরকারি হাসপাতালে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয়। যেখানে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। তারপর কিশোরীর দেহ ময়নাতদন্তের জন্য আরজি কর হাসপাতালে পাঠানো হয়। আর পুলিশ কিশোরীর পরিবারকে একটি হোটেলে থাকার ব্যবস্থা করেন। সারারাত একদিকে মেয়ের দেহ ছিল ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালে অপরদিকে বাবা–মা শোকস্তব্ধ অবস্থায় রাতে ছিলেন হোটেলে। আজ, শুক্রবার মেয়ের দেহ নয়াদিল্লি হয়ে বাগদাদে নিয়ে গেল পরিবার।
এছাড়া এই কফিনবন্দি দেহ নিয়ে যাওয়ার সময় কিশোরীর মা–বাবার চোখের জল বাঁধ মানছিল না। কারণ মাত্র ১৬ বছর বয়স তাঁর। বাগুইআটি থানার এক পুলিশ অফিসার এই ঘটনা নিয়ে বলেন, ‘ওই কিশোরীর ক্ষেত্রে বড় অসুবিধা হয়েছিল ভাষার। কারণ পরিবার যে ভাষায় কথা বলছিল তা এখানে অনেকের অজানা। বোঝাতে পারছিলেন না অসুখের বিষয়ে। আমরা তা ইংরেজিতে অনুবাদ করলেও বিষয়টি স্পষ্ট হচ্ছিল না। তখন আমরা ইরাকের কূটনীতিক যিনি নয়াদিল্লিতে আছেন তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করি। তিনি একজন ইন্টারপ্রেটারের যোগাযোগ দিয়ে সাহায্য করেন। যিনি থাকেন কলকাতায়। তখন আমরা এবং চিকিৎসকরা বুঝতে পারেন কিডনির মারাত্মক অসুখ আছে। যার জন্যই চিন যাচ্ছিলেন ওই কিশোরী ও তাঁর পরিবার।’