আদি গঙ্গা রক্ষায় এবং ময়লা ফেলার প্রবণতা কমাতে কলকাতা পুরসভা পদক্ষেপ করছে। নদীর পাড় জুড়ে বেশ কয়েকটি জায়গায় লোহার জাল দিয়ে ফেন্সিং করা শুরু হয়েছে। এরফলে অসচেতন নাগরিকরা প্যাকেট ভর্তি আবর্জনা বা ময়লা আদি গঙ্গায় ফেলতে পারবেন না। তবে আদিগঙ্গাকে পরিষ্কার রাখা সম্ভব হবে।
আরও পড়ুন: উচ্ছেদ হতে হবে না, পাকা ঠিকানা পাবেন আদিগঙ্গার দখলদাররা, উদ্যোগী কলকাতা পুরনিগম
টালিনালার উপরে থাকা প্রায় ৩৫টি ছোট ছোট সেতুর দু’ধারেই এই লোহার নেট বসানো হয়েছে। এর ফলে আদি গঙ্গায় সরাসরি ময়লা ফেলা অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে এসেছে। তবে আদি গঙ্গার পুরো দৈর্ঘ্য জুড়ে এখনও এই কাজ সম্পূর্ণ হয়নি। বাকি অংশে লোহার জাল দিয়ে ফেন্সিং করার জন্য কলকাতা পুরসভা রাজ্যের কাছ থেকে আরও অর্থ বরাদ্দের আবেদন করেছে। কিছু জায়গায় অনুপ্রবেশ ও জবরদখলের কারণে এই কাজ এখনও শেষ করা সম্ভব হয়নি বলেও জানান সংশ্লিষ্ট আধিকারিকরা।
কলকাতা পুরসভার পরিকল্পনা ও উন্নয়ন বিভাগের আধিকারিক জানাচ্ছেন, আদি গঙ্গার দু’পাড়ে মোট প্রায় ৩১ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের ফেন্সিং করার লক্ষ্য রাখা হয়েছে। কিন্তু এ পর্যন্ত মাত্র পাঁচ কিলোমিটার অংশে কাজ শেষ হয়েছে। বরাদ্দ পাওয়া অর্থের ভিত্তিতেই ধাপে ধাপে কাজ এগিয়ে চলছে। আগের কয়েক বছরে টালিনালার উপরে কালীঘাট সেতুতে প্রথম লোহার নেট বসানো হয়েছিল। এর পর কালীঘাটে আদি গঙ্গার পাড়েও একই ধরনের ফেন্সিং করা হয়। এরপর ধাপে ধাপে আলিপুর, চেতলা ও গড়িয়ার বিভিন্ন জায়গায় এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
এছাড়া দইঘাট থেকে গড়িয়া হয়ে সোনারপুর পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ টালিনালায় পলি উত্তোলন বা ড্রেজিংয়ের কাজও চলছে। গড়িয়া পর্যন্ত পলি তুলার কাজ সম্পন্ন হয়েছে এবং বর্তমানে সোনারপুরের দিকে কাজ চলছে। কলকাতা পুরসভার এক আধিকারিক জানান, এত বিশাল খরচে আদি গঙ্গা পরিষ্কার ও পলি তোলার পরেও কিছু অসচেতন মানুষের কারণে খাল আবার নোংরা হচ্ছে। ফুল, বেলপাতা থেকে শুরু করে বাড়ির নিত্যদিনের বর্জ্য অনেকেই ফেলছেন আদি গঙ্গায়। তাই এই সমস্যা সামাল দিতে পাড় বরাবর পাঁচিল ও তার ওপর উঁচু করে লোহার জাল বসানো হচ্ছে। এই উদ্যোগের ফলে আশা করা হচ্ছে, আদি গঙ্গায় ময়লা ফেলার প্রবণতা অনেকটাই কমবে। তবে পুরো কাজ শেষ করতে এখন রাজ্যের পক্ষ থেকে বরাদ্দ পাওয়াই বড় চ্যালেঞ্জ বলে মনে করছে পুরসভা।