এবার আন্দোলনরত এক জুনিয়র চিকিৎসককে লাথি মারার অভিযোগ উঠল কর্তব্যরত পুলিশকর্মীর বিরুদ্ধে। শুক্রবার এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে চূড়ান্ত বিশৃঙ্খলা তৈরি হয় ধর্মতলা চত্বরে। ঘটনার প্রতিবাদে ধর্মতলা মোড়েই অবস্থান বিক্ষোভে বসে পড়েন জুনিয়র চিকিৎসকরা।
সমাজমাধ্যমে প্রতিবাদে সরব হন বিরোধী রাজনৈতিক শিবির, বিশেষত বিজেপির সদস্যরাও। তাঁদের নিশানায় রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তথা পুলিশমন্ত্রীর অধীনে থাকা পুলিশবাহিনী। বিজেপি নেতাদের স্পষ্ট বার্তা, পুলিশের এহেন আচরণ মুখ্যমন্ত্রীর প্রতি জুনিয়র চিকিৎসকদের ভরসা ভেঙে দেবে!
শুক্রবার ঠিক কী ঘটেছিল ধর্মতলায়?
আরজি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে আন্দোলনরত জুনিয়র চিকিৎসকরা আগে থেকেই শুক্রবারের জন্য কিছু কর্মসূচি স্থির করে রেখেছিলেন। ঠিক ছিল, তাঁরা এসএসকেএম থেকে ধর্মতলা পর্যন্ত একটি মিছিল করবেন। তারপর ধর্মতলার ওয়াই চ্যানেলে এসে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করবেন।
জুনিয়র চিকিৎসকদের তরফে সেই মতো প্রস্তুতি নেওয়া হলেও বাধ সাধে পুলিশ। তাদের তরফ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়, জুনিয়র চিকিৎসকদের কেবলমাত্র এই পর্যন্ত মিছিল করে আসার অনুমতি ছিল। তাই আর কোনও কর্মসূচি করা যাবে না।
কর্তব্যরত পুলিশকর্মীদের এই যুক্তি মানতে অস্বীকার করেন আন্দোলনরত জুনিয়র চিকিৎসকরা। ফলে পুলিশের সঙ্গে তাঁদের বচসা শুরু হয়। কয়েক জন জুনিয়র চিকিৎসক বিক্ষিপ্তভাবে ওয়াই চ্যানেলে বসে পড়েন। পুলিশকর্মীরা তাঁদের সেখান থেকে ওঠানোর জন্য হাত ধরে টানাহ্যাঁচড়া শুরু করে দেন।
অন্যদিকে, জুনিয়র চিকিৎসকদের আর একটি দল ওয়াই চ্যানেলে এসে পৌঁছয়। মূলত সাংবাদিক বৈঠকের জন্যই একটি গাড়িতে চাপিয়ে তাঁরা কিছু আসবাবপত্র নিয়ে আসেন সেখানে। পুলিশ সেই গাড়ি আটকে দেয় বলে অভিযোগ।
সেই সময়েই মেডিক্যাল কলেজের এক জুনিয়র চিকিৎসককে পুলিশকর্মীরা লাথি মারেন বলে অভিযোগ ওঠে। এমনকী, তাঁদের উদ্দেশে পুলিশ অশালীন মন্তব্য করে বলেও আন্দোলনকারীরা দাবি করেন। এই ঘটনা চাউর হতেই প্রতিবাদে ধর্মতলার মেট্রো চ্যানেলে বসে পড়েন জুনিয়র চিকিৎসকরা। যার জেরে কার্যত অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে গোটা এলাকা।
এদিকে, এই ঘটনা টেলিভিশনের মাধ্যমে সম্প্রচারিত হতেই আসরে নামেন রাজ্যের বিরোধী রাজনৈতিক শিবিরের সদস্যরা। জুনিয়র চিকিৎসককে লাথি মারার ঘটনার জন্য সরাসরি পুলিশকেই কাঠগড়ায় তোলেন বিজেপি নেতা তথা আইনজীবী তরুণজ্যোতি তিওয়ারি।
তিনি তাঁর এক্স হ্যান্ডেলে ঘটনার ভিডিয়ো পোস্ট করেন। সঙ্গে ক্যাপশনে লেখেন, 'এই লাথিটা ডাক্তারবাবুদের উপর নয়, পুলিশ মন্ত্রীর পুলিশ এই লাথি মারলো ডাক্তারবাবুদের মুখ্যমন্ত্রীকে ভরসার উপর।'
তরুণজ্যোতির আরও অভিযোগ, 'এটাই মুখ্যমন্ত্রীর আসল চেহারা। সরকারি কর্মচারী থেকে শুরু করে চাকরিপ্রার্থী, যাঁদেরকে ইচ্ছা জিজ্ঞেস করে নিন, তাঁরা একই কথা বলবেন।'