দিঘার জগন্নাথ মন্দির যখন দিনের পর দিন জনস্রোতের ঢেউ আছড়ে পড়ছে তখন তা নিয়ে মামলা গড়াল কলকাতা হাইকোর্টে। দিঘার এই জগন্নাথ মন্দির নিয়ে দায়ের হল জনস্বার্থ মামলা। মামলাকারী আইনজীবী কৌস্তভ বাগচীর কলকাতা হাইকোর্টে আবেদন, ট্রাস্টে অনুদান দিলেই ঠিকানা দেখানো হচ্ছে হিডকো অফিসের। তাই প্রশ্ন উঠছে, সরকার কি মন্দির তৈরি করতে পারে? তাহলে অনুদান দিলে আয়কর ছাড়ের কথা কেন বলা হচ্ছে? এই বিষয়ে সম্পূর্ণ তদন্ত চেয়ে মামলা দায়ের করেছেন কৌস্তভ বাগচী। কলকাতা হাইকোর্ট মামলা দায়ের করার অনুমতি দিয়েছে। আজ মঙ্গলবার বিচারপতি সৌমেন সেনের ডিভিশন বেঞ্চ মামলা দায়ের করার অনুমতি দেয়। এখন তা নিয়ে জোর চর্চা শুরু হয়েছে।
এদিকে আবেদনকারীর স্পষ্ট দাবি, জগন্নাথ মন্দিরের জন্য অনুদান দিলে কর ছাড় দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। সরকার কখনও মন্দির তৈরি করতে পারে না। আর দিঘার এই মন্দির যদি সংস্কৃতি কেন্দ্রের অংশ হলে কী করে কর ছাড়ের কথা বলতে পারে? এই নিয়ে তদন্ত চান আবেদনকারী। কিছুদিন আগে নবান্নের সাংবাদিক বৈঠকে দিঘার জগন্নাথ মন্দির উদ্বোধনের কথা ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ট্রাস্টি বোর্ড গঠনের কথাও জানান। তারপর ক্যাবিনেটের বৈঠকে ওই ট্রাস্টি বোর্ড গঠনের বিষয় পাশও হয়। মুখ্যসচিবের নেতৃত্ব মোট ১১ জন অফিসার, ইসকন, কালীঘাট মন্দির, পুরীর জগন্নাথদেবের মন্দির, রামকৃষ্ণ মিশনের একজন করে প্রতিনিধি নিয়ে মোট ২৭ জনের ট্রাস্টি বোর্ড গঠন করা হয়।
আরও পড়ুন: নোয়াপাড়া থেকে দমদমের মধ্যবর্তী স্থানে মেট্রো বিভ্রাট, পাতালপথে বন্ধ রইল চলাচল
অন্যদিকে আবেদনকারী আরও জানান, ট্রাস্টের নামে ওই মন্দির এখন পরিচালিত হচ্ছে। কিন্তু ওই ট্রাস্টকে অর্থদান করলে হিডকোর ঠিকানা দেখাচ্ছে। একটা ট্রাস্ট কী করে হিডকোর অফিস ব্যবহার করতে পারে? এই প্রশ্ন তুলে তদন্তের নির্দেশ দিতে আর্জি জানিয়েছেন মামলাকারী কলকাতা হাইকোর্টের কাছে। এই মন্দির তৈরি হওয়ার পর বিজেপি নেতাদের পাশাপাশি প্রশ্ন তুলেছিলেন সিপিএম নেতা বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যও। এবার এই বিষয়টি নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করলেন আইনজীবী কৌস্তভ বাগচী।
তাছাড়া জগন্নাথ মন্দিরে সিভিক ভলান্টিয়ার নিয়োগের বিষয়টিও তোলা হয়েছে। এই মন্দিরকে সামনে রেখে ১০০ জন সিভিক ভলান্টিয়ার নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে নবান্ন। এখানে বেশ কিছু যুবক–যুবতীর কর্মসংস্থানের সম্ভাবনা তৈরি হয়। সেই মতো বিজ্ঞপ্তিও জারি করা হয়েছে। এই জগন্নাথ মন্দিরকে কেন্দ্র করে ব্যাপক ব্যবসা বাণিজ্য গড়ে উঠেছে। এই আবহে কলকাতা হাইকোর্টে মামলাকারী জানান, কোন ভিত্তিতে সিভিক ভলান্টিয়ার নিয়োগ করা হবে সেটা আদালত জানতে চাইতে পারে মন্দির কর্তৃপক্ষের কাছে। আপাতত কলকাতা হাইকোর্ট মামলা দায়ের করার অনুমতি দিয়েছে।