প্রধান বিচারপতির এমন পর্যবেক্ষণ দেখে বেশ চাপে পড়ে যান আইনজীবীরা। আসলে বহু মামলার কোনও ভিত্তি নেই। রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে করতে হয় তাই মামলা করা হয়েছে। এবার ধরে ফেলেছেন প্রধান বিচারপতি। সুতরাং বেশ কিছু মামলা বাতিল হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। আগামী ১৮ সেপ্টেম্বর পরবর্তী শুনানি। ক্ষুব্ধ প্রধান বিচারপতি।
কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম
গত ৮ জুলাই হয়েছে পঞ্চায়েত নির্বাচন। তারপর কেটে গিয়েছে দেড় মাস। কিন্তু শেষ হচ্ছে না কলকাতা হাইকোর্টের এজলাসে পঞ্চায়েত নির্বাচন সংক্রান্ত মামলা। তাই এবার আইনজীবীদের উদ্দেশে ক্ষোভ প্রকাশ করলেন কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম ও বিচারপতি হিরন্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ। এখনও পঞ্চায়েত নির্বাচন নিয়ে একগুচ্ছ মামলা দেখে আইনজীবীদের উদ্দেশে প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ বলেন, ‘পরবর্তী পঞ্চায়েত নির্বাচন পর্যন্ত কি আমরা পঞ্চায়েত নির্বাচনের মামলা শুনব?’ সব মামলা শুনতে গেলে আগামী পঞ্চায়েত নির্বাচন এসে যাবে বলেও মন্তব্য করেন প্রধান বিচারপতি।
এদিকে পঞ্চায়েত নিয়ে দায়ের হয়েছে ২৬টি মামলা। তার মধ্যে চারটি মামলা মূল মামলা হিসেবে গ্রহণ করা হয়েছে। প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে একের পর এক মামলা হয়েছে পঞ্চায়েত নির্বাচন নিয়ে। পঞ্চায়েত নির্বাচন নিয়ে বিরোধীদের দায়ের করা মামলাই বেশি। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী, অধীররঞ্জন চৌধুরী, প্রিয়াঙ্কা টিব্রেওয়াল এবং সিপিএমের জয়দীপ মুখোপাধ্যায়ের মামলাই মূল মামলা হিসেবে শুনবেন প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। সেখানে আরও মামলার পাহাড় দেখে ক্ষুব্ধ প্রধান বিচারপতি।
অন্যদিকে এই একগুচ্ছ মামলা দায়ের করে আবার তাগাদা দেওয়া হচ্ছে বলে খবর। জরুরি ভিত্তিতে শোনার আবেদন করা হচ্ছে। এই সব দেখে প্রধান বিচারপতি ভরা এজলাসে বলেন, ‘পঞ্চায়েত নির্বাচন নিয়ে দায়ের হওয়া সব মামলা শুনতে গেলে আগামী পঞ্চায়েত নির্বাচন এসে যাবে। বেশিরভাগ মামলাই কিছু পেপার কাটিং ভরসা করে করা হয়েছে। সেখানে না আছে পড়াশোনা, না আছে কিছু লিগাল পয়েন্ট। এমন মামলার ভবিষ্যত কি! আপনারা অন্তত কিছুটা তৈরি হয়ে আসুন। পাঁচ–ছ’টা খববের কাগজের কাটিং নিয়ে এসে মামলা! কিছু সিনিয়র আইনজীবী অবশ্য আছেন, তাঁদের কথা বাদ দিচ্ছি। কিন্তু বাকিরা কী করছেন?’
প্রধান বিচারপতির এমন পর্যবেক্ষণ দেখে বেশ চাপে পড়ে যান আইনজীবীরা। আসলে বহু মামলার কোনও ভিত্তি নেই। রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে করতে হয় তাই মামলা করা হয়েছে। এবার এটা ধরে ফেলেছেন প্রধান বিচারপতি। সুতরাং বেশ কিছু মামলা বাতিল হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। এরপরই প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘২৬টি মামলা শুনতে হলে পরবর্তী পঞ্চায়েত নির্বাচন চলে আসবে! এ যেন মিশন ২৬! কিছু তো যুক্তিসঙ্গত তথ্য নিয়ে আদালতে আসুন। আদালত চায় না আগামী পঞ্চায়েত নির্বাচন পর্যন্ত এই মামলা শুনতে। শুধু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলিই আদালত শুনবে।’ বাকি জনস্বার্থ মামলা ওই মামলাগুলির সঙ্গে যুক্ত করে শোনা হবে বলে আদালত সূত্রে খবর। আগামী ১৮ সেপ্টেম্বর পরবর্তী শুনানি।