কসবা এলাকার আইন কলেজে ছাত্রীকে গণধর্ষণের অভিযোগে রীতিমতো রাজনৈতিক উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। ঘটনায় তদন্ত করার পর এবার কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে রিপোর্ট জমা দিল বিজেপির বিশেষ তথ্যানুসন্ধানী দল। ওই দলের দাবি, এই ঘটনায় একমাত্র স্বচ্ছ তদন্ত সম্ভব কেন্দ্রীয় এজেন্সির মাধ্যমেই। তাই ঘটনার দায়ভার তুলে দেওয়া হোক কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার হাতে। (আরও পড়ুন: ছাত্রদের যৌনাঙ্গ দেখাতে বলা TMCP নেতা সৌভিক রায়কে শোকজ দলের)
আরও পড়ুন: পরীক্ষা দেওয়া নিয়ে দোটানায় কসবার নির্যাতিতা, কমিশন বলল ‘তোমার সঙ্গে কিছুই হয়নি…’
বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নড্ডার নির্দেশে গঠিত হয়েছিল চার সদস্যের এই অনুসন্ধান দল। ছিলেন দুই প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সত্যপাল সিং ও মীনাক্ষী লেখী, লোকসভার সাংসদ বিপ্লবকুমার দেব এবং রাজ্যসভার সাংসদ মননকুমার মিশ্র। গত ৩০ জুন তাঁরা কলকাতায় এসে সরেজমিনে তদন্ত করেন। এরপরই রিপোর্ট জমা দেন।
তাঁদের বক্তব্য, পুলিশ যথাযথভাবে তদন্ত করছে না। এমনকি, নির্যাতিতার সঙ্গে দেখা করতেও বাধা দেওয়া হয়েছে বিজেপির প্রতিনিধি দলকে। আরও বিস্ফোরক অভিযোগ, পুলিশের এফআইআরে অভিযুক্তদের নাম প্রকাশ করা হচ্ছে না, যা যথেষ্ট সন্দেহজনক। রিপোর্টে প্রশ্ন তোলা হয়েছে, কলেজের নিরাপত্তারক্ষীকে এত দ্রুত কেন গ্রেফতার করা হল? বিজেপির বক্তব্য, ঘটনার মূল তথ্য যাতে চেপে যাওয়া যায় তার জন্যই এমন তৎপরতা। তাঁদের দাবি, কলেজ পরিচালন সমিতির একাংশ এবং স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বও ঘটনায় জড়িত। (আরও পড়ুন: কসবা কাণ্ডে পুলিশের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ, ধৃত মনোজিতদের নিয়ে আদালতে কী বলা হল?)
তাদের দাবি আরও, যিনি এই ঘটনার মূল অভিযুক্ত তাঁর বিরুদ্ধে আগেও নানা অভিযোগ রয়েছে। তা সত্ত্বেও বিধায়ক অশোক দেব কীভাবে তাঁকে কলেজে অস্থায়ী পদে নিয়োগ করলেন? সেই প্রশ্নও তুলেছে তদন্তকারী দল। রিপোর্টে সরাসরি তৃণমূল বিধায়কের নাম তুলে দায় চাপানো হয়েছে তাঁর দিকেও। উল্লেখ্য, গণধর্ষণের ঘটনায় ইতিমধ্যেই গ্রেফতার হয়েছে কলেজের এক প্রাক্তন ছাত্র, দুই বর্তমান ছাত্র এবং নিরাপত্তারক্ষী। কিন্তু বিজেপির মতে, এই ঘটনার পর্দার আড়ালে আরও বড় চক্র রয়েছে। স্থানীয় রাজনৈতিক প্রভাবকে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা চলছে বলে দাবি তাঁদের। (আরও পড়ুন: যাদবপুরে পুলিশের জুতোতে লাগল আগুন, বাংলার কোথায় কেমন প্রভাব ভারত বনধের?)
আরও পড়ুন: বড় কোনও দায়িত্ব পাবেন দিলীপ? শমীকের সঙ্গে সাক্ষাতের পরই ডাক পেলেন দিল্লিতে
প্রসঙ্গত, এ রাজ্যে ভোট পরবর্তী হিংসা, দুর্নীতি-সহ একাধিক ঘটনায় এর আগেও দিল্লি থেকে অনুসন্ধানী দল পাঠিয়েছে বিজেপি। এবার কসবা কলেজের ভয়াবহ অভিযোগ ঘিরে ফের সেই কৌশলই নিল গেরুয়া শিবির। তদন্তকারী দলের বক্তব্য, এই ঘটনার সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ তদন্তের জন্য কেন্দ্রীয় সংস্থার হাতেই দায়িত্ব তুলে দেওয়া উচিত। তাঁদের রিপোর্ট ইতিমধ্যেই জমা পড়েছে জেপি নড্ডার কাছে। এখন দেখার, দলীয় প্রধান কী পদক্ষেপ করেন।