বিজেপির টিকিটে লোকসভা–বিধানসভা নির্বাচনে জিতে একাধিক সাংসদ–বিধায়ক দলত্যাগ করেছেন। তাতে বেশ বেকায়দায় পড়েছে গেরুয়া শিবির। এবার বছর ঘুরলেই পঞ্চায়েত নির্বাচন। সেখানে ‘ক্ষয়’ প্রতিরোধে সতর্কতা নিতে চাইছে পদ্ম–শিবির। তাই ত্রিস্তর পঞ্চায়েত নির্বাচনে যাঁরা জিতবেন তাঁদের ধরে রাখার কৌশল নিল বিজেপি নেতারা। এক্ষেত্রে ঠিক মুচলেকা না হলেও পঞ্চায়েত নির্বাচনে বিজেপির টিকিট পেতে দলের সঙ্গে ‘মৌখিক চুক্তি’ করতে হবে সম্ভাব্য দলীয় প্রার্থীদের বলে সূত্রের খবর।
বিষয়টি ঠিক কী ঘটতে চলেছে? পঞ্চায়েত নির্বাচনে যেসব প্রার্থীরা জিতবেন তাঁরা দলবদল করতে পারবেন না। এই প্রতিশ্রুতি দিতে হবে বিজেপি প্রার্থীদের। রবিবার পঞ্চায়েত নির্বাচন নিয়ে বৈঠকে বসেছিল বিজেপি। পঞ্চায়েত কমিটির সদস্যদের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন নয়াদিল্লির নেতারাও। সেখানেই সিদ্ধান্ত হয়েছে, প্রার্থী বাছাইয়ে বাড়তি গুরুত্ব দিতে হবে। সব দলবদলুকে ঢালাও টিকিট দেওয়া যাবে না। সম্ভাব্য প্রার্থীদের অতীত ইতিহাস, স্থানীয় স্তরে ভাবমূর্তি খতিয়ে দেখতে হবে। আর জিতলে সংশ্লিষ্ট প্রার্থীর দলবদলের সম্ভাবনা নিয়েও আগাম অনুসন্ধান চালাতে হবে বলে সূত্রের খবর।
ঠিক কী বলছে বিজেপি? নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক রাজ্য বিজেপির নেতা বলেন, ‘জার্সি বদলের করুণ স্মৃতি এখনও তাজা। তাই পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগেভাগে সতর্ক হয়ে চলতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যাতে জেতা পঞ্চায়েত হাতছাড়া না হয়। তবে কত সংখ্যক আসনে প্রার্থী দেওয়া যাবে। তার মধ্যে কত শতাংশ আমরা জিতব, তা নিয়েও সংশয় রয়েছে। একুশের নির্বাচনের পর তো দেখা গেল, বিজেপির টিকিটে জিতে সাংসদ–বিধায়করা তৃণমূল কংগ্রেসে চলে গেলেন। এটার পুরনাবৃত্তি আর চাইছে না দল।’
আর কী জানা যাচ্ছে? ইতিমধ্যেই জেলায় জেলায় পার্টির অন্তর্দ্বন্দ্ব ঠেকাতে নয়া পন্থা হিসাবে স্থানীয় নেতা– কর্মীদের গুরুত্ব দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এদিন মঙ্গল পান্ডে, আশা লকড়াদের পৌরোহিত্যে বসে পঞ্চায়েত কমিটি। সেখানে দলের প্রতিটি সাংগঠনিক জেলায় পঞ্চায়েত নির্বাচন পরিচালনার জন্য একজন করে কো–অর্ডিনেটর নিয়োগ করা হয়েছে। এই নির্বাচনে স্থানীয় নেতারাই মূল নিয়ন্ত্রক হয়ে ওঠেন। তাই বিজেপি মুখগুলিকে বাড়তি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে জানুয়ারি মাসেই পঞ্চায়েত নির্বাচন। সেক্ষেত্রে রাজ্য সংগঠনে ততদিনে আবার বদল হয় কি না, সেটাই দেখার।