আইভিএফ সেন্টারের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ তুলে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হলেন এক দম্পতি। তাঁদের অভিযোগ, আইভিএফ পদ্ধতিতে জন্মানো সন্তান তাঁদের নয়। সেন্টার তাঁদের সঙ্গে প্রতারণা করেছে। এছাড়াও, দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছেন। এই দম্পতি কলকাতা হাইকোর্টে আইভিএফ সেন্টারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আবেদন করেছেন।
আরও পড়ুন: পুরুষদের দুর্বল স্পার্মের কারণেও সমস্যা হয়…, ৪০এর পর মা হয়ে ঠিক কী বললেন ফারহা?
মামলার বয়ান অনুযায়ী, বিয়ের বেশ কয়েক বছর কেটে যাওয়ার পরেও সন্তান না হওয়ায় আইভিএফ পদ্ধতির আশ্রয় নেন এই দম্পতি। এর জন্য শহরের এই আইভিএফ সেন্টারের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। প্রথম ও দ্বিতীয়বার ব্যর্থ হওয়ার পর তৃতীয়বারের চেষ্টায় আইভিএফ পদ্ধতিতে ২০১৯ সালে বাবা-মা হন দম্পতি। তবে সেই আনন্দ স্থায়ী হয়নি। ২০২১ সালে আইভিএফ পদ্ধতিতে জন্মানো তাঁদের কন্যা সন্তানের ক্যানসার ধরা পড়ে। তখন তার বোন ম্যারো প্রতিস্থাপনের পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা। তখনই জানা যায়, শিশুটির সঙ্গে তার বাবা-মায়ের বোন ম্যারোর কোনও মিল নেই। ডিএনএও মিলছে না। এরপর আইভিএফ কেন্দ্রের সঙ্গে যোগাযোগ করেন দম্পতি।
তাঁরা ওই সেন্টারের সঙ্গে আবেদন করেন, যাতে ওই শিশুর ‘বায়োলজিক্যাল’ বাবা-মায়ের খোঁজ দেওয়া হয়। তবে আইভিএফ সেন্টার শিশুর মায়ের পরিচয় প্রকাশ করলেও বাবার পরিচয় প্রকাশ করেনি। এরইমধ্যে, বোন ম্যারো প্রতিস্থাপন ব্যর্থ হওয়ায় ২০২৩ সালে শিশুটি মারা যায়। ঘটনায় বাবা-মা সেন্টারের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ জানিয়ে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। তাঁরা দাবি করেন, যে দম্পতির অনুমতি না নিয়ে এই কাজ করেছিল আইভিএফ সেন্টার। আর সম্মতিপত্রে তাঁদের স্বাক্ষর জাল করা হয়েছিল।
ঘটনায় পরে দম্পতি পশ্চিমবঙ্গ ক্লিনিক্যাল এস্টাব্লিশমেন্ট রেগুলেটরি কমিশনের (ডব্লিউবিসিইআরসি) দ্বারস্থ হন। গত জানুয়ারি মাসে আইভিএফ সেন্টারকে অনিয়মের জন্য দায়ী করে কমিশন। সেইসঙ্গে ৫ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দেয়। তবে জরিমানা চান না দম্পতি। তাই আইভিএফ সেন্টারের বিরুদ্ধে শাস্তি চেয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন তাঁরা। তাঁদের আরও দাবি, কমিশনের কাছে তাঁরা আইভিএফ সেন্টারের লাইসেন্স বাতিলের জন্য আবেদন করেছিলেন ক্ষতিপূরণ পাওয়ার জন্য নয়। শুক্রবার বিচারপতি অমৃতা সিনহার এজলাসে এই মামলার শুনানি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন দম্পতির আইনজীবী শ্রীজিব চক্রবর্তী।