গঙ্গা, ফুলহার এবং কোশি নদীর স্রোতের ফলে মালদার রতুয়া-১ ব্লকে ভয়াবহ অবস্থা। পাড় ভেঙে একের পর এক বাড়ি বিলীন হচ্ছে নদীগর্ভে। মহানন্দাটোলা ও বিলাইমারি পঞ্চায়েতের বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে ভাঙনের তাণ্ডবে তলিয়ে যাচ্ছে মানুষের ভিটেমাটি, কৃষিজমি। বাড়ি হারিয়ে খোলা আকাশের নিচে আশ্রয় খুঁজছেন অনেকেই। সেই পরিস্থিতিতে নদী ভাঙন দেখতে গিয়ে স্থানীয়দের বিক্ষোভের মুখে পড়লেন বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মু।
আরও পড়ুন: আদিবাসী উপদেষ্টা কমিটির বৈঠক আমন্ত্রিত বিজেপি সাংসদ, নবান্নে যাচ্ছেন না খগেন
রবিবার এলাকায় পৌঁছন উত্তর মালদহের বিজেপি সাংসদ খগেন। কিন্তু পরিস্থিতি পরিদর্শনের বদলে, ভাঙন দুর্গতদের রাগ, হতাশা আর অসহায়তার জেরে পড়লেন প্রবল বিক্ষোভের মুখে। তাঁরা দাবি করেন, রাজনীতি নয়, চাই স্থায়ী সমাধান। এক স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, সাংসদের কাছে এক কোটি টাকা চাওয়া হয়েছিল, যাতে নিজেরাই চাঁদা তুলে বাঁধ তৈরি করতে পারেন কিন্তু কিছুই জোটেনি। আজ তাই নদী নিয়ে গিয়েছে সবকিছু। অন্য এক বাসিন্দার কথায়, “দীর পাড় ভাঙতে ভাঙতে বাড়ির দোরগোড়ায় এসে পড়েছে। ঘরবাড়ি আগেভাগেই সরানো হচ্ছে। কিন্তু মালপত্র রাখবেন কোথায়? থাকবেনই বা কোথায় সে দুশ্চিন্তাই এখন বড় হয়ে উঠেছে। যদি সময়মতো পদক্ষেপ হতো, তাহলে যাযাবরের মতো ঘুরতে হতো না তাঁদের।
জানা যাচ্ছে, ভাঙনে এই এলাকাতেই সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পশ্চিম রতনপুর, কান্তুটোলা, শ্রীকান্তটোলা, মুলিরামটোলা এবং জিতুটোলার মতো গ্রামগুলি। বহু মানুষ গ্রাম ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছেন। কেউ সরকারি ত্রাণ শিবিরে, কেউ আবার রাস্তার পাশে উঁচু জায়গায় ত্রিপলের ছাউনি গেড়ে কোনওমতে বেঁচে থাকার লড়াই চালাচ্ছেন।
সাংসদ খগেন মুর্মুর দাবি, রাজ্য সরকার এখনও পর্যন্ত কেন্দ্রকে প্রয়োজনীয় ডিপিআর দেয়নি। তাই অর্থ বরাদ্দ করা সম্ভব হচ্ছে না। মুখ্যমন্ত্রীকে বারবার চিঠি দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু কিছুই হচ্ছে না। মানুষ ক্ষুব্ধ, তাদের ক্ষোভ স্বাভাবিক। এ মন্তব্যের পাল্টা জবাব দিয়েছেন তৃণমূলের মালদহ জেলা সভাপতি আব্দুর রহিম বকসি। তিনি বলেন, সাংসদ এতদিন কোথায় ছিলেন? দিল্লিতে বসে থাকেন, অথচ যখন নদী ভাঙে তখন এলাকা ঘুরতে আসেন। ওঁরই তো বরাদ্দ এনে বাঁচানোর কথা। এখন বিক্ষোভ হওয়া অস্বাভাবিক নয়।