একে শীতকাল। ঝুপ করে সন্ধ্যা নেমে যায়। তার মধ্য়ে চারপাশে জঙ্গল। আর তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে বাঘের ভয়। দিনের বেলা যেমন তেমন রাত হলেই আতঙ্ক গ্রাস করছে জঙ্গলমহলে। কারণ একটাই বাঘ ঢুকে পড়েছে। জঙ্গলমহলে ঘুরছে বাঘিনী।
জিপিএস কলার লাগানো রয়েছে বাঘিনীর শরীরে। আর তার মাধ্যমে বাঘিনীর গতিবিধির উপর নজর রাখা হচ্ছে। বনদফতরের আধিকারিকরা এলাকায় রয়েছেন। জঙ্গল সংলগ্ন এলাকায় না যাওয়ার জন্য বার বার ঘোষণা করা হচ্ছে। জঙ্গলের রাস্তা দিয়ে যাবেন না। এলাকায় বাঘ রয়েছে। সতর্ক করা হচ্ছে বনদফতকরের তরফে।
কার্যত আতঙ্কে কাঁটা হয়ে রয়েছে জঙ্গলমহল। এই বোধহয় বিপদ কিছু একটা ঘটে গেল! এদিকে সূত্রের খবর, বাঘিনী এক জঙ্গল থেকে অপর জঙ্গলের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।
‘একটি বাঘ ঘুরছে। জঙ্গলে কেউ প্রবেশ করবেন না। আপনারা সবাই সতর্ক হয়ে থাকবেন।’ এবার বেলপাহাড়ির পর কাঁকড়াঝোরের জঙ্গল। বাঘিনী ঘুরছে। যমুনা নামের ওই বাঘিনী শুক্রবার দিনভর বেলপাহাড়িতে ছিল। এরপর সে রাতে বেলপাহাড়ি থেকে কাকড়াঝোড়ের দিকে এগোতে থাকে। বনদফতর বার বার এনিয়ে সতর্ক করছে।
কাকড়াঝোরের ময়ুরঝর্নার জঙ্গলে বাঘটি রয়েছে বলে জানা গিয়েছিল দুপুরে। গলায় রেডিও কলার রয়েছে। তার মাধ্যমেই বাঘিনীর অবস্থান জানা যাচ্ছে। মূলত দেখা হচ্ছে সেটি যাতে কোনওভাবে লোকালয়ে প্রবেশ করতে না পারে।সেই সঙ্গেই দেখা হচ্ছে যাতে বাঘিনীর কোনও ক্ষতি না হয়ে যায়।
বেলপাহাড়ি থানার পুলিশ, বনদফতরের আধিকারিকরা এলাকায় রয়েছেন। কেউ যাতে জঙ্গলে যাতে প্রবেশ না করেন, সন্ধ্যার পরে যাতে কেউ রাস্তায় একলা না যান সেটার ব্যাপারে বলা হচ্ছে। বার বার এনিয়ে সজাগ করা হচ্ছে।
এদিকে শীতের সময় প্রচুর পর্যটক আসেন জঙ্গলমহলে। বাঘিনী বেরিয়েছে এই খবরে আতঙ্কিত তাঁদের অনেকেই। কারণ জঙ্গল এলাকায় যাওয়ার ক্ষেত্রে নিষেধ করা হচ্ছে। সেক্ষেত্রে মনের সুখে বেড়ানোর সাধও পূরণ হচ্ছে না। অন্য়দিকে ৫ বছর পরে এলাকায় ফিরেছে বাঘের আতঙ্ক। সেক্ষেত্রে জঙ্গলমহলের সাধারণ মানুষের দুটি বিষয় নিয়ে চিন্তা। একটা হল নিজেদের প্রাণ আর অপরটি হল গবাদি পশু যদি বাঘে টেনে নিয়ে যায়!
বয়স তিন বছর। ওড়িশার সিমলিপালের জঙ্গল থেকে বেরিয়ে পড়েছিল এই বাঘিনী। এরপর শুরু হয় দীর্ঘ পথ চলা। একের পর এক এলাকা টপকে যেতে থাকে। এরপর প্রায় ১৫০ কিমি পথ পেরিয়ে যায় ওই বাঘিনী। তারপর গত ১০ই ডিসেম্বর নাগাদ ঝাড়খণ্ডের চাকুলিয়ার জঙ্গলে ঢুকে পড়ে। পরে যমুনার দেখা মেলে বেলপাহাড়ির জঙ্গলে।