বিয়ে করার আশ্বাস। আর সেই আশ্বাস দিয়ে সহবাস। কিন্তু, সময় গড়াতেই ভঙ্গ হল সেই প্রতিশ্রুতি। তখনই দুর্গাপুরের এক শিক্ষিকার বুঝতে পারলেন তিনি প্রতারণার শিকার। অভিযোগ, গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’ এজেন্ট সেজে তাঁর সঙ্গে প্রতারণা করেছে এক যুবক। ওই যুবকের নাম অভিষেক মুখোপাধ্যায়। তাঁকে গ্রেফতারের চেষ্টা চালাচ্ছে পুলিশ। ঘটনাটি ঘটেছে দুর্গাপুরের সিটি সেন্টার থানা এলাকায়। শুধু র এজেন্টই নয় কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন দফতরে আধিকারিক পরিচয় দিয়ে এভাবেই অনেকের সঙ্গে তিনি প্রতারণা করেছেন বলে অভিযোগ। (আরও পড়ুন: বোয়িং থেকে ইঞ্জিনের রক্ষণাবেক্ষণ, ষড়যন্ত্রের তত্ত্ব নিয়ে কী বললেন AI চেয়ারম্যান)
আরও পড়ুন: বিয়ে করতে অস্বীকার করেছিল প্রেমিক, রাগে যৌনাঙ্গ কেটে নিল মহিলা চিকিৎসক
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, অভিযুক্ত যুবক হুগলির ভদ্রেশ্বরের বাসিন্দা। তিনি কখনও নিজেকে সেনা আধিকারিক, কখনও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের বড় কর্তা, আবার কখনও সরাসরি দাবি করত সে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’-এর এজেন্ট। জানা গিয়েছে, ওই শিক্ষিকাকে প্রেমের ফাঁদে ফেলেন তিনি। পরে তাঁকে বিয়ে করার প্রতিশ্রুতি দেন। (আরও পড়ুন: কেন হোয়াইট হাউজে ডেকে মুনিরকে খাওয়ালেন? মোদীর নাম নিয়ে বড় কথা ট্রাম্পের)
আরও পড়ুন: জারি মৃত্যুমিছিল! ইজরায়েলে ৪০০ মিসাইল নিক্ষেপ করা ইরানে এখনও প্রাণ হারিয়েছে ৬৩৯
ঘটনার সূত্রপাত ২০২৩ সালের নভেম্বরে। একটি ডেটিং অ্যাপে আলাপ হয় অভিষেকের সঙ্গে ওই শিক্ষিকার। ধাপে ধাপে দুজনের সম্পর্ক গাঢ় হয়। যুবক জানান, তিনি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের উচ্চপদস্থ কর্মী। দুর্গাপুরে শিক্ষিকার বাড়িতে ‘নীল বাতি’ গাড়ি চড়ে এসে দেখা করতেন তিনি। পাত্র হিসেবে তাঁকে মেনে নিয়েছিলেন শিক্ষিকার বাবা-মাও। কিন্তু যখনই অভিষেকের পরিবারকে নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে, তিনি নানা অজুহাত দিতে শুরু করে। (আরও পড়ুন: প্রস্তুত আমেরিকা, ইরানে কবে হামলা চালাবে মার্কিন বাহিনী? বড় দাবি রিপোর্টে)
আরও পড়ুন: মেঘালয় হানিমুন হত্যায় উঠে এল সঞ্জয় বর্মার নাম, সোনমকে ১০০ ফোন করা এই ব্যক্তি কে?
পরিস্থিতি বুঝে শিক্ষিকার বাবা-মা সাবধান করেন মেয়েকে। কিন্তু প্রেমে অন্ধ হয়ে শিক্ষিকা উল্টে বাড়ি ছেড়ে হোটেলে গিয়ে থাকতে শুরু করেন ওই যুবকের সঙ্গে। শেষমেশ বাবা-মা পুলিশের দ্বারস্থ হন। সিটি সেন্টার থানার আইসি সুদীপ্ত বিশ্বাস ডেকে পাঠান অভিযুক্ত যুবককে। আইনজীবী নিয়ে হাজির হয়ে প্রথমে রীতিমতো পুলিশকে ধমক দেন অভিষেক। কিন্তু জিজ্ঞাসাবাদে সামনে আসে তাঁর আসল চেহারা। হোটেল ঘরে তল্লাশি চালিয়ে পুলিশ উদ্ধার করে একাধিক ভুয়ো আইডেন্টিটি কার্ড। যেগুলিতে এনআইএ, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক, সেনা এবং অন্যান্য কেন্দ্রীয় দফতরে পরিচয়পত্র পাওয়া যায় তাঁর কাছে! এমনকী তাঁর কাছে পাওয়া যায় একটি এয়ারগানও। (আরও পড়ুন: আকাশে উড়ল বিমান, সংঘাতের আবহে 'অপারেশন সিন্ধু' চালু করল ভারত)
কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে, এত নিখুঁত নকল আইডি কার্ড তিনি পেলেন কোথা থেকে? তদন্তে উঠে আসে নতুন নাম-সন্দীপ সাহা। পুলিশ জানতে পারে, বিধাননগরের বাসিন্দা এই ব্যক্তি দুর্গাপুরে একটি প্রিন্টিং প্রেস চালান। সেখানেই তৈরি হত একের পর এক ভুয়ো সরকারি পরিচয়পত্র। সেনা, এনআইএ, আয়কর দফতর প্রভৃতির নাম ব্যবহার করে পরিচয়পত্র বানানো হয়নি। পুলিশ ইতিমধ্যে সন্দীপ সাহাকে গ্রেফতার করেছে এবং খতিয়ে দেখছে, সে ঠিক কতজনকে এমন ভুয়ো পরিচয়পত্র বানিয়ে দিয়েছে। পুলিশ খতিয়ে দেখছে, শুধুই কি প্রেমের ফাঁদ পেতে প্রতারণা নাকি এর পেছনে কোনও বড় চক্রও রয়েছে। এসিপি (দুর্গাপুর) সুবীর রায় জানান, পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।