বাংলায় ফের গ্রেফতার ভুয়ো চিকিৎসক। অন্যের রেজিস্ট্রেশন ব্যবহার করে ডাক্তারি করার অভিযোগে ওই ভুয়ো চিকিৎসককে গ্রেফতার করেছে নিমতা থানার পুলিশ। চিকিৎসকের নাম প্রথমরঞ্জন মণ্ডল। অভিযোগ, তাঁর ভুল চিকিৎসার কারণে আঙুল হারিয়েছিলেন এক যুবতী। সেই অভিযোগ পাওয়ার পর নথিপত্র খতিয়ে দেখে পুলিশ অভিযোগের সত্যতা খুঁজে পায়। শেষে অভিযোগ দায়ের হওয়ার প্রায় দেড় বছর পর তাঁকে গ্রেফতার করল পুলিশ।
আরও পড়ুন: ক্লাস টেন পর্যন্ত পড়ে ‘ডাক্তারি’, ৩ বছর ধরে রোজের রোজগার প্রায় ৩৫,০০০ টাকা!
জানা গিয়েছে, প্রথমরঞ্জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয়েছিল ২০২৩ সালের ২৪ ডিসেম্বর। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছিলেন নিমতা থানার ইটখোলা আশ্রম রোড নারায়ণ পল্লীর বাসিন্দা ভুবনেশ্বর সরকার। তিনি জানান, তাঁর মেয়ে সায়নী সরকারের বাঁ হাতের একটি আঙুলে গুরুতর চোট লেগেছিল। চিকিৎসার জন্য সায়নীকে তিনি প্রথমরঞ্জন মণ্ডলের কাছে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসক তাঁর আঙুল সেলাই করে ছেড়ে দেন। কিন্তু, তারপরও সমস্যার সমাধান হচ্ছিল না। ১৫ দিন পর সেলাই কাটতেই দেখা যায় আঙুলে ভয়ঙ্কর সমস্যা দেখা দিয়েছে। তখন সায়নীকে অন্য চিকিৎসার কাছে নিয়ে যান পরিবারের সদস্যরা। সেখানে চিকিৎসক জানান, সায়নীর আঙুলে পচন ধরেছে। আঙুল নষ্ট হয়ে গিয়েছে। দ্রুত কেটে বাদ না দিলে তা গোটা শরীরে ছড়িয়ে পড়বে। এরফলে গুরুতর সমস্যা হতে পারে বলে জানান চিকিৎসক।
শেষ পর্যন্ত বিভিন্ন জায়গায় চিকিৎসা করানোর পর সায়নীর আঙুল কেটে বাদ দিতে হয়। পরে ভুবনেশ্বর খোঁজখবর নিয়ে জানতে পারেন আসলে প্রথমরঞ্জন একজন ভুয়ো চিকিৎসক। তাঁর শিক্ষাগত যোগ্যতা অনুযায়ী নামের আগে তিনি কোনওভাবেই ডাক্তার লিখতে পারেন না। এছাড়াও, এই ধরনের চিকিৎসা তিনি করতে পারেন না। আরও জানতে পারেন, অন্যের রেজিস্ট্রেশন নম্বর ব্যবহার করছেন প্রথমরঞ্জন।
ঘটনায় ২০২৩ সালের ২৪ ডিসেম্বর নিমতা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন ভুবনেশ্বর। সেই অভিযোগের প্রায় ১৫ মাস পর প্রথমরঞ্জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এবিষয়ে ভুবনেশ্বর জানিয়েছেন, তিনি একটি পোশাকের দোকানে কাজ করে কোনওভাবে সংসার চালান। এখন ভুয়ো ডাক্তার গ্রেফতার হাওয়ায় তিনি খুশি। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রথমে ওই ডাক্তারকে সমস্ত নথিপত্র নিয়ে দেখা করতে বলা হয়েছিল। স্বাস্থ্য দফতরের কাছ থেকে এবিষয়ে জানতে চাওয়া হয়েছিল। সেই রিপোর্ট পাওয়ার দেখা যায় অভিযোগ সত্যি। এরপরেই তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছ।