ওড়িশার জলেশ্বরে সোনার দোকানে চুরি করতে গিয়ে ধরা পড়লেন পশ্চিম মেদিনীপুরের এক যুবক। ধৃতের নাম সোমনাথ সাউ। তবে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো ধৃত সোমনাথ একজন বিজেপি নেতা বলে দাবি তৃণমূলের। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, দোকান থেকে প্রায় ১০০ গ্রাম সোনা চুরি করে পালাতে গিয়েছিলেন। পুলিশ হাতেনাতে ধরে ফেলে তাঁকে। আর এরপরই ওই যুবকের বিজেপি-যোগ ঘিরে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর।
আরও পড়ুন: অগ্নিমিত্রাকে কুকথা বিজেপি নেতার, সুকান্তর কাছে অভিযোগ, প্রকাশ্যে দলীয় কলহ?
তৃণমূলের দাবি, সোমনাথ একজন বিজেপি যুব মোর্চার নেতা। তাঁদের বক্তব্য, তিনি এখনও পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা যুব মোর্চার সম্পাদক পদে রয়েছেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করেছেন বিজেপির শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে সোমনাথের তোলা একাধিক ছবি। স্বাভাবিকভাবেই, বিজেপিকে নিশানা করে কটাক্ষ ছুড়েছেন তৃণমূল নেতারা। তবে পুরো অভিযোগ খারিজ করে দিয়েছে বিজেপি। দলের জেলা মুখপাত্র অরূপ দাস জানিয়েছেন, ‘সোমনাথ একসময় বিজেপির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন, ঠিকই। কিন্তু গত দেড় বছর ধরে তাঁর সঙ্গে দলের কোনও সম্পর্ক নেই। দলের বর্তমান কমিটিতে তাঁর নাম নেই বলেই দাবি তাঁর। যদিও স্বীকার করেন, পুরনো তালিকায় নাম থেকে যেতে পারে, কারণ নতুন জেলা কমিটি এখনও তৈরি হয়নি। এখানেই থেমে থাকেননি অরূপ। পাল্টা তৃণমূলকে আক্রমণ করে বলেন, খুনি, ধর্ষকদের আশ্রয় দেওয়া দল তৃণমূলের মুখে এসব কথা মানায় না। কসবার ল কলেজে নিজেদের ছাত্রনেতাই ছাত্রনেত্রীকে ধর্ষণ করে। নদিয়ায় নিজেদের ছোড়া বোমায় ১১ বছরের মেয়ের মৃত্যু হয়।
তৃণমূলও পালটা আক্রমণ করেছে। দলের জেলা সভাপতি বলেন, বিজেপির নেতা মানেই পাচার বা চুরির সঙ্গে জড়িত কেউ। এই জেলায় বিজেপির কোনও অস্তিত্ব নেই। আর যারা রয়েছেন, খোঁজ নিলে দেখা যাবে এদের অনেকেরই চরিত্র ঠিক এমনই। তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ নিজের এক্স পোস্টে বিজেপি নেতার ছবি শেয়ার করেছেন। যেখানে বিজেপি বিধায়ক হিরণ চট্টোপাধ্যায় এবং দলের রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের সঙ্গে দেখা গিয়েছে ওই বিজেপি নেতাকে। কুণাল লিখেছেন, ‘মেদিনীপুরের হবিবপুরের বিজেপি যুব মোর্চার নেতা সোমনাথ সাহু ওড়িশার একটি দোকান থেকে ২৫ লক্ষ টাকার গয়না চুরি করার সময় হাতেনাতে ধরা পড়েছে। সিসিটিভি ফুটেজে তাঁর চুরির দৃশ্য আছে। তিনি পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করার সময় স্থানীয়রা তাঁকে ধরে ফেলে এবং পুলিশে দেয়। তাঁর স্ত্রী ১ নম্বর ওয়ার্ডে বিজেপির প্রার্থী ছিলেন।’ তাঁর সঙ্গে বিজেপি নেতাদের ছবি ঘুরছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। তা গেরুয়া শিবিরকে যথেষ্ট অস্বস্তিতে ফেলেছে।