বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মা হাতির মৃত্যু, দেহ আগলে সারারাত অপেক্ষা করল শাবক

রাজ্যে ফের হাতি মৃত্যু। পুরুলিয়া জেলায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হল এক মা হাতির। বুধবার ভোররাতে এই ঘটনাটি ঘটেছে ঝাড়খণ্ড সীমান্ত লাগোয়া সরাইকেলা খরসোঁয়া জেলার নিমডি থানার হেবেন গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার হেবেন পাহাড়ধারে। ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়ায়। মা হাতির মৃত্যুর পর দীর্ঘক্ষণ তার দেহ আগলে থাকে শাবক। পরে খবর পেয়ে বন বিভাগ দেহ উদ্ধার করে নিয়ে যায়।আরও পড়ুন: ঝাড়গ্রামে ফের মৃত্যু হাতির, ধানের জমি থেকে উদ্ধার দেহ, প্রশ্নে বনবিভাগের ভূমিকাগ্রামবাসীদের বক্তব্য, রাত প্রায় তিনটের সময় কান্নার মতো আওয়াজে ঘুম ভাঙে রঘুনাথ সিং নামে এক বাসিন্দার। বাইরে বেরিয়ে টর্চের আলোয় তিনি দেখতে পান, তাঁর বাড়ির পিছনের জমিতে একটি হাতির বাচ্চা অস্থিরভাবে ঘোরাফেরা করছে। কিছুক্ষণ পরে ভালো করে লক্ষ্য করে বুঝতে পারেন মৃত অবস্থায় পড়ে রয়েছে একটি বড় হাতি। সেটি ওই শাবকের মা। সকালে এলাকাবাসীরা সেখানে জড়ো হলে দেখতে পান, ছ’মাসের ওই বাচ্চা হাতিটি মৃত মায়ের দেহের পাশেই দাঁড়িয়ে আছে। মানুষের ভিড় বাড়তেই পরে সে সেখান থেকে জঙ্গলের দিকে সরে যায়।খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান হেবেন পঞ্চায়েতের প্রধান সুলোচনা দেবী। বন দফতরকে খবর দেওয়া হলে তারা আসে ও হাতির দেহটি পর্যবেক্ষণ করে। বনকর্মীরা জানিয়েছেন, হাতির শুঁড়ে গভীর ক্ষত ছিল। তাঁদের প্রাথমিক অনুমান, বিদ্যুতের খোলা তারের সংস্পর্শে এসে শুঁড় মারাত্মকভাবে জখম হয় এবং সেটাই মৃত্যুর কারণ হতে পারে। তবে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানতে হাতির দেহের ময়নাতদন্ত করা হবে।স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধান জানান, গত সাত বছর ধরে এই এলাকায় বন্য হাতির আনাগোনা ব্যাপক হারে বেড়েছে। ফলে গ্রামবাসীদের আতঙ্ক তো রয়েছে, পাশাপাশি ফসলেরও বিপুল ক্ষতি হচ্ছে। এ বিষয়ে বন দফতরকে একাধিকবার জানানো হলেও পরিস্থিতির বিশেষ পরিবর্তন হয়নি বলে অভিযোগ। জঙ্গলের পাড়ে থাকা মানুষদের কাছে এই ঘটনাটি একদিকে যেমন বেদনাদায়ক, তেমনই আবার উদ্বেগেরও। কারণ, বন্যপ্রাণীদের মৃত্যু ও মানুষের ক্ষয়ক্ষতি দুই ক্রমশ বাড়ছে।