তৎকালীন যুব কংগ্রেস নেত্রী হিসেবে ১৯৯৩-তে রাজপথে নেমে সচিত্র ভোটার কার্ডের দাবিতে লড়াই করেছিলেন। এবার তিনিই ৩২ বছর পরে ফের একুশের মঞ্চ থেকে মুখ খুললেন নির্বাচন প্রক্রিয়া নিয়ে। এ বার তাঁর নিশানায় সরাসরি নির্বাচন কমিশন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রবিবার ধর্মতলার সভা থেকে স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন, বাংলার একজনের নামও যদি ভোটার তালিকা থেকে বাদ পড়ে, তাহলে রাজপথে নামবে তৃণমূল।
আরও পড়ুন: 'বাংলা ভাষার ওপর সন্ত্রাস', কাগজ তুলে ধরে ডিটেনশন নিয়ে বিস্ফোরক মমতা, ঘোষণা ভাষা আন্দোলনের
নির্বাচন কমিশনের সাম্প্রতিক পদক্ষেপকে আক্রমণ করে মমতা অভিযোগ করেন, এটি কার্যত ‘সুপার এমার্জেন্সি’। তাঁর কথায়, গুজরাট থেকে বসে বাংলার মানুষের নাম কাটা হচ্ছে। বিহারে নাম বাদ দেওয়ার কাজ চলছে। একজন বাঙালির সঙ্গে চারজন ভিনরাজ্যের নাম ঢোকানো হচ্ছে। এটা চালিয়ে গেলে রাস্তায় নামতে হবে। দরকার হলে দিল্লিতে গিয়ে কমিশনের দফতর ঘেরাও হবে। তাঁর হুঁশিয়ারি, বাংলার স্বার্থে প্রয়োজনে কেন্দ্রকেরও চ্যালেঞ্জ জানাবে তৃণমূল।
উল্লেখ্য, বিহারে নির্বাচন কমিশন বর্তমানে ‘স্পেশাল ইনটেনসিভ রিভিশন’ এর মাধ্যমে ভোটার তালিকা সংশোধন করছে। কমিশনের দাবি, এই উদ্যোগ শুধুমাত্র বৈধ ভারতীয় নাগরিকদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতেই। কিন্তু তৃণমূল শিবিরের সন্দেহ, এর আড়ালে মূল লক্ষ্য হল বিরোধী ও সংখ্যালঘু ভোটারদের বেছে বেছে তালিকা থেকে বাদ দেওয়া। এ যেন ঘুরপথে এনআরসির প্রয়োগ।
এ দিন মমতা আরও বলেন, বাংলাভাষীদের বারবার রোহিঙ্গা বলে দাগিয়ে দেওয়া হচ্ছে। তাঁর অভিযোগ, বিভিন্ন ভিনরাজ্যে বহু বাঙালিকে ডিটেনশন ক্যাম্পে আটকে রাখা হয়েছে। তিনি বলেন, কমপক্ষে হাজার খানেক বাঙালি আজ জেলে বন্দি। ঠিক কতজনকে পুশব্যাক করা হয়েছে, সেটা আজও কেউ জানে না। মুখ্যমন্ত্রীর কড়া বার্তা, এই নিপীড়ন ও ষড়যন্ত্র কোনওভাবেই বরদাস্ত করা হবে না। একুশের মঞ্চ থেকেই মমতার এই লড়াকু বার্তা আসন্ন ভোটের আবহে রাজনৈতিক তাৎপর্য বহন করছে। ‘ভোটের অধিকার’ ইস্যুকে সামনে রেখে, নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়ে কার্যত ফের একবার রণকৌশল স্পষ্ট করে দিলেন তৃণমূলনেত্রী।