মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আজ একটি কাগজ তুলে ধরে দাবি করেন, অবিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে নাকি একটি করে সার্কুলার কেন্দ্রীয় সরকার পাঠিয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, সন্দেহভাজন কেউ হলেই সেই ব্যক্তিকে নাকি একমাস পর্যন্ত আটক করে রাখা যায়। এদিকে মমতা আজ বলেন, 'বাংলার ওপর সন্ত্রাস চলছে।' এরই সঙ্গে তিনি আবার বলেন, 'বিজেপি এখন ঠিক করে দিতে চায় যে কে কী খাবে, কে মাছ খাবে, কে কার মাথা খাবে।' মমতা বলে, 'যাকে যাকে ডিটেনশন ক্যাম্পে আটক করা হয়েছিল, তাদের মামলা করে ছাড়িয়ে এনেছি আমরা। এরা বাংলা ভাষায় কথা বলত বলে।' মমতা দাবি করেন, হাজার জন বাঙালিকে আটক করা হয়েছে। ওড়িশা, দিল্লিতে বাঙালিদের ওপর 'অত্যাচার' নিয়ে অভিযোগ করেন মমতা। এদিকে মমতা বলেন, আমাদের কোনও ভাষার বিরুদ্ধে সমস্যা নেই। কিন্তু বাংলার ওপর কেন সন্ত্রাস হবে। প্রয়োজনে আবার ভাষা আন্দোলন হবে। এদিকে আজ মমতা বলেন, আজ থেকে ভাষা আন্দোলন শুরু হবে। সব ভাষাকে সম্মান জানিয়েই এই আন্দোলন শুরুর ডাক দেন মমতা। এদিকে এই ‘আন্দোলন’ চলবে আগামী নির্বাচন পর্যন্ত।
এদিকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আজ উত্তম ব্রজবাসীকে ডেকে নেন মঞ্চে। তিনি দাবি করেন, ৫০ বছর ধরে ব্রজবাসী কোচবিহারে থাকেন। তাঁকে অসম থেকে এনআরসি নোটিশ পাঠানো হয়েছে। মমতার অভিযোগ করেন, ভোটের সময় বিজেপি রাজবংশীদের কাছে টানে তারপর তারা রাজবংশীদের ওপর অত্যাচার করে। এদিকে শুভেন্দু অধিকারীর নাম না নিয়ে রোহিঙ্গা ইস্যুতে তোপ দাগেন মমতা। কয়েকদিন আগে শুভেন্দু বলেছিলেন, পশ্চিমবঙ্গে ১৭ লাখ রোহিঙ্গা আছে। তাদের নাম ভোটার তালিকা থেকে কাটতে হবে। এই আবহে মমতা বলেন, রাষ্ট্রসংঘের হিসেবে সারা বিশ্বে ১০ লাখ রোহিঙ্গা। এই আবহে তিনি শুভেন্দুর দাবি নিয়ে বলেন, 'একটু পড়াশোনা করে বলা উচিত তো'।
মমতা বলেন, 'আমার কাছে লিস্ট আছে, আমি জানি না বাংলাদেশে কত লোককে ফেরত পাঠিয়েছেন। সারা পৃথিবীতে রোহিঙ্গা সংখ্যা কত? ইউনাইটেড নেশন বলছিল দশ লক্ষ। সেটা বেড়ে সর্বোচ্চ ১৩-১৪ লাখ হবে। আপনি কীভাবে বলছেন সতেরো লক্ষ?' এদিকে মুখ্যমন্ত্রী কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দেশি প্রসঙ্গে বলেন, 'জুলাই মাসে আমাদের চিঠি পাঠিয়েছে। ওরা সেন্ট্রাল ফোর্স থেকে নোডাল অফিসার তৈরি করতে। যারা মানুষকে ভোটার লিস্ট থেকে বাদ দেব। বাংলা ভাষার উপর সন্ত্রাস চলছে। কে মাছ-মাংস-ডিম খাবে সব ওরা ঠিক করে দিচ্ছে।' তিনি আরও বলেন, 'বিজেপির চক্রান্ত, নির্বাচন কমিশনের চক্রান্ত, গদি মিডিয়াও আছে। আগের বার বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভেঙেছিল। আমাদের রাজ্যে পাঠায়নি। কেন্দ্র সরকার নোটিফিকেশন দিয়ে বিজেপি শাসিত রাজ্যে বলছে একমাসের জন্য যাকে সন্দেহ হবে জেলে আটকে রাখবে ডিটেনশন ক্যাম্প করে। যার জন্য একহাজারের বেশি লোককে বাংলাদেশে, উত্তরপ্রদেশ, রাজস্থানের জেলে ঢোকানো হয়েছে।'