নানুর দিবস উপলক্ষে বীরভূমে গিয়ে বিজেপিকে তীব্র আক্রমণ করলেন রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। রবিবার নানুরে আয়োজিত কর্মসূচি থেকে ফিরহাদের অভিযোগ, বিজেপি শুধু ধর্মের ভিত্তিতে নয়, এবার জাতি ও ভাষার ভিত্তিতেও বিভাজনের রাজনীতি শুরু করেছে। বাংলার সঙ্গে প্রতিবেশী রাজ্যগুলির ঐতিহাসিক সম্পর্ককে পরিকল্পিতভাবে ছিন্ন করছে কেন্দ্রের ডাবল ইঞ্জিন সরকার।
আরও পড়ুন: দোকান-রেস্তোরাঁর হোর্ডিং, ব্যানারে থাকতে হবে বাংলা ভাষা, কড়া বার্তা মেয়রের
এদিন ফিরহাদ বলেন, ওড়িশার সঙ্গে আগে বাংলার নিবিড় আত্মিক সম্পর্ক ছিল একসময়। আজ সেই সম্পর্ক নেই। বিজেপি ক্ষমতায় এসে যে রাজনীতি শুরু করেছে, তা ঘৃণার রাজনীতি। তাঁর কথায়, সারা দেশজুড়ে বাঙালিদের হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে। পরিযায়ী শ্রমিকদের নির্যাতন চলছে। শুধুমাত্র বাংলা ভাষায় কথা বলার জন্য তাঁদের অপদস্থ করা হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সেই অবমাননার প্রতিবাদেই ভাষা আন্দোলনের ডাক দিয়েছেন।
এই ভাষা আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে উঠে আসে রবীন্দ্রনাথের নামও। ফিরহাদের মতে, বাংলা ভাষা বাঙালির আত্মার সঙ্গে মিশে আছে। কবিগুরু হলেন অনুপ্রেরণা। বাংলা অপমানিত হলে বাঙালি রুখে দাঁড়ায়। এই চেতনা নিয়েই এবার নতুন আন্দোলন। ফিরহাদ হাকিম আরও বলেন, বিজেপি ভেবেছিল ধর্ম দিয়ে ভাগ করবে। এখন ভাষা দিয়ে বিভাজনের চেষ্টা করছে। কিন্তু ওরা জানে না, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাইয়ের নাম ফিরহাদ হাকিম। এখানেই বিজেপির বিভাজনের থিওরি ভেঙে পড়ে। বাংলায় হিন্দু-মুসলমান নয়, বাঙালি পরিচয়ের লড়াই চলবে। যতদিন না বিজেপিকে কেন্দ্র থেকে সরানো যাচ্ছে, ততদিন এই আন্দোলন চলবে বলে হুঁশিয়ারি দেন ফিরহাদ।
নানুর শহিদ দিবসের এই সভায় উপস্থিত ছিলেন আইনমন্ত্রী মলয় ঘটক, ডেপুটি স্পিকার আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়, জেলা পরিষদের সভাধিপতি কাজল শেখ সহ একাধিক বিধায়ক ও মন্ত্রী। সভামঞ্চে ছিলেন শহিদ পরিবারও। আইনমন্ত্রী মলয় ঘটক বলেন, ২০০০ সালে নানুরে খুন হয়েছিল নিরীহ খেতমজুরেরা। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সেই সময় তাঁদের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। আজও তিনি শহিদদের কথা ভুলে যাননি। আবারও যখন বাংলার সংস্কৃতি, ভাষা, পরিচয় আক্রান্ত, তখন লড়াই ছাড়া উপায় নেই। কাজল শেখ জানান, নানুরে খেটে খাওয়া মানুষদের রক্ত ঝরেছিল। সেই রক্তের ইতিহাসকে ভোলা যাবে না। আজ শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর পাশাপাশি তৃণমূল নতুন লড়াইয়েও প্রস্তুত।