এই দিলাম। এই বাতিল করলাম। মাঝে শুধু কিছুটা সময় কেটে গিয়েছে। হ্যাঁ, এমনই কাজ করেছে ভারতীয় রেল। আর তিনদিনের মাথায় অক্ষয় তৃতীয়ার দিন বাংলায় জগন্নাথ মন্দিরের উদ্বোধন হবে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যাত্রী সাধারণের সুবিধার জন্য বাড়তি ট্রেন চালাতে অনুরোধ করেছিলেন। তারপর রেল জানিয়ে ছিল, বিশেষ ট্রেন চলবে দিঘার জন্য। সেই মর্মে ঘোষণাও করা হয়েছিল। একাধিক মানুষজন এখন দিঘার ট্রেনের টিকিট কেটেও ফেলেছেন। এবার উদ্বোধনের তিন দিন আগে আর একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করল রেল। তাতে বিশেষ ট্রেন বাতিল করা হলো বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এটা কি কারও অঙ্গুলিহেলনে ঘটল? প্রশ্ন উঠছে।
রেলের আগের ঘোষণা অনুযায়ী সকল সংবাদমাধ্যম খবর পর্যন্ত সম্প্রচার করেছিল। তা দেখে বাংলার আপামর জনগণ খুশি হয়েছিল। পরিকল্পনা করে দিঘা গিয়ে জগন্নাথধাম দেখে আসার ব্যবস্থা করেছিল। কারণ আগে অতিরিক্ত দু’টি বিশেষ লোকাল ট্রেন দেবে বলে জানিয়েছিল রেল। ২৬ এপ্রিল থেকে ৪ মে পর্যন্ত চলবে বলা হয়েছিল। প্রত্যেকদিন হাওড়া–দিঘা–হাওড়া এবং পাঁশকুড়া–দিঘা–পাঁশকুড়া এই বিশেষ ট্রেন চালানোর কথা জানিয়েছিল রেল। হাওড়া থেকে দুপুর ১টা ১০ মিনিটে ট্রেন ছেড়ে দিঘা যাওর কথা ছিল। আর ওই একই লোকাল বিকেল ৫টা ৪৫ মিনিটে দিঘা থেকে ছেড়ে রাত সাড়ে ৯টায় হাওড়ায় আসৈর কথা ছিল। এখন আর তা হবে না। এভাবে কি আবার বাংলাকে বঞ্চনা করা হল? উঠছে প্রশ্ন।
পাঁশকুড়া থেকে ভোর ৪টে ৪৫ মিনিটে ট্রেন ছেড়ে দিঘা যাওয়ার কথা ছিল। আর দিঘা থেকে সকাল ৭টা ৩৫ মিনিটে ট্রেন ছেড়ে পাঁশকুড়া আসার কথা ছিল। রেলের এই ঘোষণার জেরে অনেকেই দিঘা যাওয়ার পরিকল্পনা ছকে ফেলে ছিলেন। এখন আর তা হবে না। সুতরাং হাওড়া থেকে দিঘার ট্রেন বলতে তাম্রলিপ্ত এক্সপ্রেস এবং কাণ্ডারী এক্সপ্রেস। যাতে মারাত্মক ভিড় হবে। অঘটন ঘটতে পারে। আর কাণ্ডারী এক্সপ্রেস দুপুরের পর মিলবে। কিন্তু হঠাৎই রেলের এমন বিজ্ঞপ্তিতে সব পরিকল্পনা বানচাল হয়ে গেল। ওই বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, হাওড়া–দিঘা ইএমইউ স্পেশাল এবং পাঁশকুড়া–দিঘা ইএমইউ স্পেশালের পরিষেবা পরিচালনগত কারণে বাতিল করা হচ্ছে। এটাই বলা হয়েছে রেলের তরফে।
আরও পড়ুন: ‘লড়কা জলদি আ জায়ে গা’, পাকিস্তানে আটক জওয়ান পূর্ণমের পরিবারকে আশ্বাস দিল বিএসএফ
এই বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ্যে নিয়ে এসেছেন তৃণমূল কংগ্রেসের বিধায়ক উত্তম বারিক। তখনই তোলপাড় পরিস্থিতি তৈরি হয়। উত্তম বারিক ফেসবুকে লেখেন, ‘আগামী ৩০ এপ্রিল অক্ষয় তৃতীয়ার দিন দিঘায় জগন্নাথদেবের মন্দিরের দ্বারোদ্ঘাটন করবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ইতিমধ্যেই শ্রী শ্রী জগন্নাথদেবের আশীর্বাদ নিতে এবং দর্শনের জন্য ভিড় জমাচ্ছেন সাধারণ তীর্থযাত্রীরা। পশ্চিমবঙ্গের মাটিতে হিন্দুদের এই ঐক্য এবং ভক্তি দেখে ঈর্ষান্বিত হয়েছে কেন্দ্রের স্বৈরাচারী বিজেপি সরকার। ২৬ এপ্রিল থেকে ৪ মে পর্যন্ত যে বিশেষ হাওড়া–দিঘা এবং পাঁশকুড়া–দিঘা ইএমইউ ট্রেন চালানোর জন্য বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছিল, মিথ্যা কারণ দেখিয়ে দক্ষিণ–পূর্ব রেল কর্তৃক তাৎক্ষণিকভাবে তা বাতিল করা হয়েছে। বাংলার হিন্দুদের প্রতি এমন বিমাতৃসুলভ আচরণ এবং রাজনৈতিক প্রতিহিংসার উত্তর মানুষ ঠিকই দেবেন আগামীতে।’