মধ্যমগ্রামে ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনার পর নড়েচড়ে বসেছে পুরসভা। ঘটনার দু’দিনের মাথায় এলাকাজুড়ে নজরদারি কড়া করতে বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। পুরসভা সিদ্ধান্ত নিয়েছে, স্টেশন চত্বর ও উড়ালপুলের নীচে বসানো হবে একাধিক সিসিটিভি ক্যামেরা। পাশাপাশি, পুলিশি টহলও আরও জোরদার করা হবে।
আরও পড়ুন: মধ্যরাতে হাইস্কুলের গেটের সামনে ভয়ঙ্কর বিস্ফোরণ, মধ্যমগ্রামে গুরুতর জখম যুবক
পুরসভা সূত্রে খবর, প্রাথমিকভাবে রেললাইনের দুই ধারে ও উড়ালপুল-সংলগ্ন অঞ্চলে মোট দশটি সিসিটিভি বসানো হবে। ইতিমধ্যেই ক্যামেরা বসানোর জায়গাগুলি চিহ্নিত হয়ে গিয়েছে। দ্রুতই কাজ সম্পন্ন করা হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন মধ্যমগ্রাম পুরসভার চেয়ারম্যান নিমাই ঘোষ। তিনি জানিয়েছেন, ক্যামেরাগুলির রক্ষণাবেক্ষণ ও মনিটরিংয়ের দায়িত্বে থাকবে স্থানীয় থানা।শুধু নজরদারি ক্যামেরাই নয়, স্টেশন ও উড়ালপুল ঘিরে মানুষের যাতায়াতের ভিড়ের কথা মাথায় রেখে পুলিশি পেট্রোলিংও বাড়ানো হবে। পুরসভা ও পুলিশ প্রশাসনের এই যৌথ উদ্যোগে এলাকার নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরালো হবে বলেই দাবি করা হচ্ছে।
বিস্ফোরণের পর থেকেই প্রশ্ন উঠছিল, এত জনবহুল এলাকায় কেন আগে থেকে সিসিটিভি ছিল না। ঘটনার পর বিরোধী দলগুলি শাসক তৃণমূলের গাফিলতির অভিযোগ তোলে। বিজেপি রাস্তায় নেমে নিরাপত্তার দাবিতে সরব হয়। সমালোচনার মুখে পড়েই হঠাৎ সক্রিয় হয়েছে পুরসভা। যদিও শাসকপক্ষের দাবি, মানুষের নিরাপত্তাই তাঁদের একমাত্র অগ্রাধিকার, বিরোধীদের বক্তব্যকে গুরুত্ব দেওয়ার কিছু নেই।
চেয়ারম্যান নিমাই ঘোষের কথায়, উড়ালপুলের নীচে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ চলাচল করেন। স্টেশনের দু’পাশে রয়েছে মুক্তমঞ্চ যেখানে অনেকে বসে সময় কাটান। এই ভিড়ভাট্টার জায়গায় নিরাপত্তা বাড়ানো অত্যন্ত জরুরি। তাই সিসিটিভি বসানোর পাশাপাশি ভবিষ্যতে গোটা মধ্যমগ্রামই নজরদারির আওতায় আসুক, সেটা চায়ছে প্রশাসন।
প্রসঙ্গত, রবিবার গভীর রাতে মধ্যমগ্রাম হাইস্কুল সংলগ্ন উড়ালপুলের নীচে ঘটে ভয়াবহ বিস্ফোরণ। ঘটনায় উত্তরপ্রদেশের যুবক সচ্চিদানন্দ মিশ্র গুরুতর জখম হন। তাঁর হাত-পা উড়ে যায় বিস্ফোরণে, শরীরজুড়ে লাগে একাধিক ক্ষত। হাসপাতালে ভরতি করা হলেও পরদিন ভোরে মৃত্যু হয় বছর পঁচিশের ওই যুবকের।ময়নাতদন্তের পর মঙ্গলবার মৃতদেহ তুলে দেওয়া হয় তাঁর পরিবারের হাতে। বাবার উপস্থিতিতে সাজিরহাট শ্মশানে শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়।
ঘটনার তদন্তে নামে বারাসত জেলা পুলিশ ও বেঙ্গল এসটিএফ। পরে এনআইএ-র আধিকারিকরাও যুক্ত হন। তদন্তে উঠে এসেছে ত্রিকোণ প্রেমের সূত্র। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, যুবক সচ্চিদানন্দ প্রেমিকার স্বামীকে সরাতে বিস্ফোরণের পরিকল্পনা করেছিলেন। কিন্তু সেই বিস্ফোরণেই প্রাণ হারান তিনি নিজেই। নিহত যুবকের প্রেমিকা ও তাঁর স্বামীকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদও শুরু করেছে পুলিশ।