ডেঙ্গির প্রকোপ ঠেকাতে শহর জুড়ে জোরকদমে চলছে পুরসভার সার্ভে ও সচেতনতামূলক অভিযান। কিন্তু সেই কাজ করতে গিয়েই ফের আক্রান্ত হলেন স্বাস্থ্যকর্মীরা। বৃহস্পতিবার সকালে শিলিগুড়ির ৩৫ নম্বর ওয়ার্ডের পাইপ লাইন এলাকায় একদল মহিলা স্বাস্থ্যকর্মীর ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে। এনিয়ে ইতিমধ্যেই এনজেপি থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে শিলিগুড়ি পুরসভা।
আরও পড়ুন: ডেঙ্গির লার্ভা খুঁজতে গিয়ে মহিলা কর্মীকে অ্যাসিড হামলা, হাওড়ায় ধৃত অভিযুক্ত
অভিযোগ অনুযায়ী, সকালে চারজনের একটি দল যাঁদের মধ্যে ছিলেন ভেক্টর কন্ট্রোল টিমের সুপারভাইজার, দু’জন সার্ভে কর্মী ও একজন নির্মলসাথী একটি বাড়িতে জমা জল পরীক্ষা করতে যান। তাঁদের দাবি, বাড়ির বিভিন্ন কোণে জমে থাকা জলে ডেঙ্গির বাহক মশার লার্ভা দেখা যায়। বিষয়টি নিয়ে সতর্ক করতে গেলে বাড়ির পুরুষরা উত্তেজিত হয়ে পড়েন। এক পর্যায়ে শুরু হয় বাগবিতণ্ডা এবং পরে মহিলা কর্মীদের গায়ে হাত তোলার অভিযোগ ওঠে। এমনকী, তাঁরা যাতে এ নিয়ে মুখ না খোলেন, সেজন্য হুমকিও দেওয়া হয় বলে অভিযোগ।
ভুক্তভোগী স্বাস্থ্যকর্মী প্রিয়াঙ্কা মণ্ডল সাংবাদিকদের বলেন, ওই বাড়ির একাধিক জায়গায় জল জমে ছিল। পরিষ্কার করতে বলতেই দুর্ব্যবহার করা হয়। শারীরিকভাবে ঠেলাঠেলিও করা হয়েছে। এর আগেও ওই পরিবারের লোকজন সহযোগিতা করেননি। তাই এবার অভিযোগ না হওয়া পর্যন্ত কাজ বন্ধ রাখছেন।
পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগের মেয়র পারিষদ দুলাল দত্ত কড়া ভাষায় ঘটনার নিন্দা করে বলেন, স্বাস্থ্যকর্মীরা শহরবাসীর স্বার্থে কাজ করছেন। তাঁদের ওপর হামলা কোনওভাবেই বরদাস্ত করা হবে না। পুলিশের কাছে কঠোর পদক্ষেপের দাবি জানানো হয়েছে। অন্যদিকে, পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। শিলিগুড়ির ডেপুটি পুলিশ কমিশনার রাকেশ সিং বলেন, ঘটনা গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করা হচ্ছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অভিযুক্তদের দাবি, কথাকাটাকাটি হলেও কোনও রকম শারীরিক আক্রমণ হয়নি। যদিও সম্প্রতি শহরের অন্য ওয়ার্ডেও একই ধরনের ঘটনা ঘটেছে। কয়েকদিন আগে ওয়ার্ড নম্বর ৩৮-এর একটি আবাসনে ডেঙ্গির সার্ভে করতে গিয়ে স্বাস্থ্যকর্মীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করা হয়েছিল। গত বছরও ওয়ার্ড ৪, ৫ ও ১০ নম্বরে একই অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হতে হয়েছিল টিমকে। পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগের দাবি, এ বছর অধিকাংশ পরিবার সহযোগিতা করায় আক্রান্তের সংখ্যা তুলনামূলকভাবে কমেছে। তবে কিছু ব্যতিক্রমী ঘটনা গোটা অভিযানে ব্যাঘাত ঘটাচ্ছে।